ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দ্বিতীয় পর্বেও লাওসকে হারাতে চায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:৩২, ৮ জুন ২০১৯

 দ্বিতীয় পর্বেও লাওসকে হারাতে চায় বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আজ থেকে তিন বছর আগে ভুটানের কাছে এক হারেই লন্ডভ- হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ফুটবল। পরবর্তী তিন বছর এএফসির কোন টুর্নামেন্টে খেলতে পারেনি তারা। এবারও সেই একই পরিস্থিতির সামনে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। তবে গত বৃহস্পতিবার তারা বিশ্বকাপ প্রাক-বাছাইয়ে প্রথমপর্বের খেলায় লাওসকে ১-০ গোলে হারিয়ে সেই কঠিন পরিস্থিতির অনেকটাই সামাল দিয়েছে লাল-সবুজরা। ঈদের পরের দিন বিশ্বকাপ ক্রিকেটে যেখানে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে দেশকে হতাশা উপহার দেন মাশরাফিরা, সেখানে ফুটবলে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে স্বাগতিক লাওসকে হারিয়ে দেশবাসীকে আনন্দ উপহার দেন জামাল ভুঁইয়ারা। এখন দ্বিতীয়পর্বের খেলায় আগামী ১১ জুন নিজেদের মাটিতে হোম ম্যাচে লাওসের বিরুদ্ধে না হারলেই (কমপক্ষে ড্র করলেও চলবে) বিশ্বকাপ প্রাক-বাছাইয়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে তারা। আর সেক্ষেত্রে আগামী প্রায় ৪ বছর পর্যন্ত ফিফা-এএফসির কোন ম্যাচও উল্লেখযোগ্য হারে পাবে বাংলাদেশ। গত ১৭ এপ্রিল জানা যায় বিশ্বকাপ প্রাক-বাছাইয়ে প্রতিপক্ষ হিসেবে লাওসকে পাচ্ছে বাংলাদেশ। মূলত এএফসির র‌্যাঙ্কিংয়ে যারা ১ থেকে ৩৪ এর মধ্যে আছে তারাই সরাসরি খেলবে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের মূলপর্বে। কিন্তু এখানেই পিছিয়েছিল বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত হয় ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এশিয়ার নিচের ১২ দেশের নাম। আর এখানেই বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে আসে লাওসের নামটি। গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত সর্বশেষ ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে চার ধাপ উন্নতি হয় বাংলাদেশের। ১৯২ থেকে ১৮৮ নম্বরে উঠে আসে তারা। আর এএফসি র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হয় মাত্র একধাপ। ৪২ থেকে ৪১। ফলে স্পষ্ট হয়ে যায় বিষয়টা- কাতার বিশ্বকাপের প্রাক-বাছাইপর্বে খেলতেই হচ্ছে বাংলাদেশকে। লাওস আছে এএফসির র‌্যাঙ্কিংয়ের ৩৮ নম্বরে (ফিফা র‌্যাঙ্কিং ১৮৪)। লটারির মাধ্যমে দুই গ্রুপ থেকে দুটি দেশের নাম উঠানো হয় যারা বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ডে হোম এ্যান্ড এ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলবে। জয়ী দল পাবে দ্বিতীয় রাউন্ডের ছাড়পত্র। প্রথমপর্ব থেকে ৬ দেশ অংশ নেবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। যেখানে এশিয়ার প্রথম ৩৪ দেশ সরাসরি দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলবে। জেমি ডে’র শিষ্যরা শুক্রবার ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে রওনা হয়েছে। শনিবার ঢাকায় ফিরবার কথা তাদের। লাওস যাওয়ার আগে মাত্র দশদিনের প্রস্তুতি নেয়ার সময় পেয়েছিল বাংলাদেশ দল। তবে কোচ জেমি ডে ঠিকই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তার শিষ্যদের নিয়ে। এ জন্য তারা আগে সফর করেন থাইল্যান্ড। সেখানে থাই লীগের দুটি ক্লাবের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে। তাতে একটি ড্র ও অপরটিতে জিতে প্রয়োজনীয় আত্মবিশ্বাস নিয়েই পা রোখে লাওসের মাটিতে। সেখানে বৃহস্পতিবার ভিয়েনতিয়েন জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে তেমন কোন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি বাংলাদেশ। স্বাগতিক লাওসের আক্রমণে ধার থাকলেও পোস্টের নিচে দারুণ পারফর্মেন্স করেন গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। প্রতিপক্ষের বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ নসাৎ করে দেন তিনি। বিরতির পর খেলার ধরন বদলে ফেলে বাংলাদেশ। তবে বেশ কয়েকটি সুযোগ সৃষ্টি করলেও গোল হচ্ছিল না। অবশেষে ৭১ মিনিটে কাক্সিক্ষত গোলের সন্ধান পায় তারা। অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়ার থ্রু ধরে বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের জোরালো শটে লাওসের গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন রবিউল হাসান (১-০)। আর তার এই গোলেই এ্যাওয়ে ম্যাচে বহুল প্রতীক্ষিত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। লাওসের বিপক্ষে এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় পেল দল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে নিজেদের মাঠ সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে একই ব্যবধানে জিতেছিল লাল-সবুজরা। এর আগে লাওসের মাঠে ২০১৮ সালের মার্চের প্রীতি ম্যাচটি ২-২ ড্র হয়েছিল। এখন দেখার বিষয়, আগামী ১১ জুন ঢাকায় লাওসের বিরুদ্ধে না হেরে বিশ্বকাপ প্রাক-বাছাইয়ে খেলার যোগ্যতা আদায় করে নিতে পারে কি না বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল।
×