ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এবারের ঈদ হবে সবচাইতে বেদনাদায়ক ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ৪ জুন ২০১৯

  এবারের ঈদ হবে সবচাইতে বেদনাদায়ক ॥ রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ইতিহাসের সবচাইতে স্বস্তিদায়ক নয়, সবচাইতে বেদনাদায়ক এবারের ঈদ হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের দুঃশাসনের কবলে পড়ে হাজার হাজার মানুষ গুম-খুনের শিকার, নারী-শিশুরা খুন, ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার, তাদের পরিবারেও ঈদের আনন্দ নেই। সুতরাং এবারের সবচাইতে স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা হবে বলে ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন তা চরম মিথ্যাচার, নির্যাতিত মানুষের প্রতি ইতিহাসের সেরা তামাশা। সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। এই সময় তিনি আরও বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অবৈধ ক্ষমতার জোরে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে গণতন্ত্রহীন দেশে অশান্তি, প্রতিহিংসা, হানাহানি ও বিচারহীনতার রাজত্ব কায়েম রাখার জন্য। গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের ধারাবাহিকতায় আপসহীন দেশনেত্রীকে বন্দী করে রাখা হয়েছে চিরস্থায়ী জমিদারি শাসন কায়েম রাখার জন্য। এ পরিস্থিতিতে একদলীয় বাকশালী সরকারের কবলে পড়ে দেশ এখন এক চরম নৈরাজ্যজনক অবস্থার মধ্যে নিপতিত। তাই বেশির ভাগ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঈদের আনন্দ নেই। তিনি বলেন, দেশের বেশিরভাগ মানুষের মনে ঈদের আনন্দ নেই। কারণ ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া কৃষকের ঘরে আনন্দ নেই। অনেকে স্কুল মাদ্রার শিক্ষক এখনও বেতন বেনাস পায়নি। তাদের সমনে ঈদের আনন্দ নেই। মানুষের পকেটে টাকা না থাকায় মার্কেটগুলো প্রায় ফাঁকা, বেচাকেনা নেই। কোটি কোটি যুবক বেকার। বিরোধীদলের ৫০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, অনেকে কারাগারে, অনেকে ঘরছাড়া। তাদের ঘরেও ঈদ আনন্দ নেই। সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বিভিন্ন মামলায় গত তিন বছরে গ্রেফতার জঙ্গীদের অর্ধেকের বেশি জামিন নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে যে তথ্য র‌্যাব মহাপরিচালক দিয়েছেন, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন, র‌্যাব মহাপরিচালকের বক্তব্য শুনে সারা জাতি বিস্মিত ও স্তম্ভিত। জঙ্গীরা জামিন পাচ্ছে কিভাবে? গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মী, মানবাধিকার কর্মী, বরেণ্য আইনজীবী কেউ নিম্ন আদালত থেকে জামিন পান না। তাহলে ভয়ঙ্কর জঙ্গীরা জামিন পাচ্ছে কীভাবে?’ তিনি বলেন, জঙ্গী দমনের নাামে সরকার যা করছে তা ‘নাটক’ কিনা সে বিষয়ে জনমনে ‘সংশয়’ রয়েছে। র‌্যাব মহাপরিচালকের বক্তব্যে সেই সংশয় আরও গভীর হলো। আসলে জঙ্গী দমনের নামে কোন খেলা চলছে কিনা সেই প্রশ্নও মানুষের মনে ছিল। সহানুভূতি লাভের আশায় জঙ্গী দমনের নামে রূপকথার সিন্দাবাদের দৈত্যের কাহিনী রচনা করা হচ্ছে কিনা সেই প্রশ্নটিও দীর্ঘ হলো। এ সময় তিনি বলেন, সত্য প্রকাশের কারণেই লেখক একে খন্দকারকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছে। সত্য ও ইতিহাস এখন বাকশালী হুকুমের কাছে বন্দী। এ কারণে বই প্রকাশের ৫ বছর পর মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন সেক্টর কমান্ডার এবং বর্ষীয়ান সাবেক মন্ত্রীকে যে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছে সেটি জনগণের কাছে পরিষ্কার। রিজভী বলেন, কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ বিখ্যাত একজন কবি। তিনি বলেছিলেন, ইতিহাসের আনন্দিত উচ্চারণ কবিতা। জবরদস্তিমূলকভাবে ইতিহাস রচনা করলে তা আস্তাকুঁড়েই নিক্ষিপ্ত হয়। সত্য উচ্চারণের ইতিহাস জানতে জনগণকে সংবৃত করা অসম্ভব। দুর্নীতি, গুম, গুপ্তহত্যা, চাপ ও হুমকির বাতাবরণের মধ্যেও ইতিহাসে সত্য প্রকাশ অবধারিত। নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য নাজমুল হক নান্নু, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, ছাত্রদলের আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×