ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দৌলতপুরে কার্ডধারীদের মধ্যে বরাদ্দের অর্ধেক বিতরণ

নেতাকর্মীদের বাড়িতে ভিজিএফের চাল

প্রকাশিত: ০৯:১১, ৪ জুন ২০১৯

  নেতাকর্মীদের বাড়িতে  ভিজিএফের চাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া, ৩ জুন ॥ দৌলতপুরে অসচ্ছল ব্যক্তিদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বরাদ্দের চাল আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পাঠানো হয়েছে। আর ভিজিএফ কার্ডধারী ব্যক্তিদের মাঝে মাত্র ৭-৮ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এতে ভিজিএফ কার্ডধারীসহ জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে দৌলতপুরে এবছর জনপ্রতি ১৫ কেজি করে ১১ হাজার ২৭৭ জনের মাঝে ১৭৯.১৫৫ টন চাল বরাদ্দ হয়। সে লক্ষ্যে উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিজ নিজ ইউনিয়নের চাল উত্তোলন করে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে যান। চাল বিতরণকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তাদের ৩০ ভাগ চালের কোটা দাবি করে। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানবৃন্দ দলীয় কোটার ৫০ টন ভিজিএফের চাল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়ে বাকি চাল ৭-৮ কেজি করে অসচ্ছল ভিজিএফ কার্ডধারীদের মাঝে সরবরাহ করেন। এনিয়ে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মধ্যেও চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বলেন, আমরাও আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান। তারপরও ভিজিএফের চাল ৩০% দলীয় নেতাকর্মীদের দিয়ে বাকি চাল দরিদ্র কার্ডধারীদের মাঝে বিতরণ করছি। এদিকে সোমবার ও রবিবার সকালে উপজেলা বাজার এলাকা দিয়ে ৪-৫টি ভ্যান ভর্তি হয়ে ভিজিএফের চাল স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়িতে যেতে দেখা গেছে। সম্প্রতি দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ভিজিএফ চাল বিতরণ সংক্রান্ত সভায় দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্থানীয় এমপির প্রতিনিধি সরদার তৌহিদুল ইসলাম ভিজিএফের চালের ৩০% কোটা দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য বরাদ্দ করে নেন। মোট বরাদ্দ থেকে ৫০.০৭ টন চাল দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য অবৈধভাবে জোর করে বরাদ্দ নেয়ার কারণে ভিজিএফ কার্ডধারীদের প্রাপ্ত বরাদ্দ কমে যায়। যার কারণে তাদের মাঝে ৭ থেকে ৮ কেজি করে চাল সরবরাহ করা হয়। রিফায়েতপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীখোলা গ্রামের রমেজান নামে এক বৃদ্ধার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে ৭ কেজি চাল দিয়েছে। একই অভিযোগ করেন গোয়ালগ্রামের দাউদ হোসেন নামে এক ভিজিএফ কার্ডধারী ব্যক্তি। ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, আমার কাছে এমন অভিযোগ এসেছিল। অভিযোগ পাওয়ার পরে রবিবার রিফায়েতপুর ইউনিয়নে এসিল্যান্ডকে পাঠিয়ে ভিজিএফ কার্ডধারীদের মাঝে ১৫ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ দলীয় কোটার ৩০% চালের বিষয়টি সঠিক নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
×