ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ হাসিনার উদ্যোগে স্বস্তির ঈদ

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ৪ জুন ২০১৯

 শেখ হাসিনার উদ্যোগে স্বস্তির ঈদ

বাবা খুব গর্ব করেই বলেন, ‘আমার দেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বিশ্বস্ত, গ্রহণযোগ্য নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার ডাক উপেক্ষা করা আমাদের কারও পক্ষেই সম্ভব ছিল না। আর তাই ব্যবসা-বাণিজ্য আর পরিবার ফেলে বড় ভাইয়ের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। আর তোমাদের এই বয়সে শুধু বাংলাদেশেই নয়, পৃথিবী জুড়ে শেখ হাসিনার মতো আরেকটি নেতা ও নেতৃত্ব খুঁজে পাবে না। ১৯বার মৃত্যুর চূড়ান্ত কিনারা থেকে ফিরে এসে এই দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করতে, বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও মর্যাদার জায়গাটি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর ফরমেটের বাইরে গিয়েও নিজস্ব স্বপ্ন আর কল্পনা-ইচ্ছা শক্তিগুলো একে একে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।’ পৃথিবীর একমাত্র দেশ বাংলাদেশ, যেখানে স্বাধীনতাবিরোধীরা আজও এদেশের মাটিতে রাজনীতি করার সুযোগ পাচ্ছে। তারা এখনও দেশবিরোধী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে এবং দেশের উন্নয়ন কাজ প্রতিনিয়ত বাধাগ্রস্ত করছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একের পর এক মিথ্যাচার, ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে বিএনপি-জামায়াত। আর এত কিছুর পরেও ইতিহাসের সেরা উন্নয়ন করে দেখিয়েছেন শেখ হাসিনা। চলমান রেখেছেন অনেক গুরুত্বপূর্ণ মেগা প্রকল্প। বিশ্বের শক্তিধর দেশ থেকে শুরু করে জাতিসংঘ থেকেও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পাশাপাশি নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেরও প্রশংসা অর্জন হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ঘুরে বেড়াচ্ছে জাপানের জনপ্রিয় গায়ক মিয়াভির সেলফিতে শেখ হাসিনার হাসিমাখা ছবি। তাকামাসা ইশিহারা মিয়াভী একজন জনপ্রিয় গায়ক, গীতিকার, গিটারিস্ট, সঙ্গীত প্রযোজক ও অভিনেতা। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও প্রশংসা পাওয়া মিয়াভি একজন সমাজসেবকও। সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দফতরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে একটি ভোজসভার আয়োজন করা হয়। আর সেখানেই আমন্ত্রিত ছিলেন জাপানের এই জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি তুলতে দেরি করেননি তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও হাসিমুখের ছবি তুলেছেন। আর এই সেলফি নিয়ে মিয়াভি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দফতরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে আয়োজিত ভোজসভায় ইউএসএইচসিআর এ্যাম্বাসাডর হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলাম আমি। রোহিঙ্গাদের প্রতি যে সহমর্মিতা তারা দেখিয়েছে, সে জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাতে পেরে আমি ধন্য।’ শুধু বাঙালীই নয়, শেখ হাসিনার মানবতার বার্তা আজ যেখানেই পৌঁছেছে, সেখানেই সভ্যতার আলো ছড়িয়ে পড়েছে। আলোকিত হয়েছে মানুষ আর নতুন প্রজন্ম উদ্বুদ্ধ হয়েছে, যার দৃষ্টান্ত আরেকবার অবলোকন করেছে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী মিয়াভির মাধ্যমে। ঈদ মানেই নাড়ির টানে বাড়ি যাওয়ার ঝক্কি-ঝামেলা আর সড়ক পথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা- এ যেন রূপ নিয়েছিল ইতিহাসে। সে সঙ্গে নানান পথে চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাই, মলম পার্টি- এগুলোও চলার পথে সঙ্গী-সাথীর মতই ছিল। কিন্তু, এই কয়েকদিন টেলিভিশন, কাগজের পত্রিকা আর অনলাইন নিউজ পোর্টালে ঈদযাত্রার পজেটিভ খরবগুলো আমাদের আলোড়িত করেছে। ট্রেনে অনলাইন টিকেটে এ্যাপস সমস্যা ছাড়া প্রত্যেকটা সংবাদ মাধ্যম খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে এবং চুলচেড়া বিশ্লেষণ করে সংবাদ পরিবেশন করেছে। অনেক টকশোতে আজীবন নেতিবাচক কথা বলার মানুষগুলোও দেখছি ইতিবাচক কথা বলেছে, বলছে..। গণমাধ্যমে জেনেছি, ঈদের লম্বা ছুটি শুরুর আগে অফিস খোলা থাকবে মাত্র একদিন, সোমবার। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওই দিনকেও ছুটির আওতায় এনে কর্মীদের ঈদে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে ছাড়পত্র দিয়ে। তাই শুক্রবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা। আর এই ঈদ যাত্রায় সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রীরা। ঈদ সামনে রেখে দ্বিতীয় মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী সেতু খুলে দেয়ায় এতদিনের যানজটের ভোগান্তি থেকে তারা মুক্তি পেয়েছে। আবার কাঁচপুরে দ্বিতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু চালু হওয়ায় অন্যদের পাশাপাশি ঢাকা থেকে সিলেটের যাত্রীদেরও বড় ধরনের ভোগান্তির অবসান ঘটেছে। কাঁচপুর পার হতে যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহনেই কেটে যেত, সেখানে এখন কয়েক মিনিটের মধ্যেই এই পথ পেরিয়ে যেতে পারছেন তারা। জানা মতে, রাষ্ট্রীয় সফরে দেশের বাইরে থেকেও শেখ হাসিনা রীতিমতো দেশের মানুষের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এবং তাঁর প্রতিনিধিদের প্রতিনিয়ত মনিটর করতে বলেছেন। অনেকের কাছে ফোন করে কোথায় কী ব্যবস্থা নেয়া যায়, এটি নিশ্চিত করারও পরামর্শ দিয়েছেন। ঈদের মৌসুমে এবার রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি ভাল আছে- এমন দাবি করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবারের ঈদযাত্রা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ‘স্বস্তিদায়ক’ হবে বলেই তাঁর প্রত্যাশা। তিনিও অসুস্থ শরীর নিয়ে শেখ হাসিনার নির্দেশ পালন করতে একের পর এক মিটিং, মনিটরিং করে যাচ্ছেন। ছুটে যাচ্ছেন রাজধানীর গাবতলী, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল ও শ্যামলী এলাকায়সহ বিভিন্ন বাস কাউন্টারগুলোতে। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন। তাদের সুবিধা-অসুবিধা জানার চেষ্টা করছেন। আর যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই রেলপথ, নৌপথ, বিমান পথের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিশেষ নির্দেশ দেয়া হয়েছে হাইওয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। ঈদকে ঘিরে শেখ হাসিনার নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের সুফল ইতোমধ্যেই দেশের জনগণ ভোগ করতে শুরু করেছে। তাদের মাঝেও স্বস্তি ও আশ্বস্তের হাসি ফুটে উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও অনেকে পজেটিভ মতামত তুলে ধরেছেন। আবার এই ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার পরামর্শও দিয়েছেন অনেকে। লেখার শেষভাগে আমার বাবার আরেকটি কথা মনে পড়ে গেল। বাবা বলেন, ‘নেতার নেতৃত্ব যদি দেশ, মাটি ও মানবতার কল্যাণের জন্য হয়, তাহলে ইতিহাস নিজেই টেনে তুলে তাঁর জায়গাটি নিশ্চিত করবে। যেমন, বাংলাদেশের ইতিহাস সেরা জায়গাটি নির্ধারণ করে দিয়েছে সর্বকালের মহামানব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য। শেখ হাসিনাও তাঁর কর্মগুণে বিশ্ব নেতৃত্বে আজ উজ্জ্বল নক্ষত্র। তোমাদের প্রজন্মের জন্য তিনি আল্লাহর বিশেষ রহমত।’ লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ)
×