শিক্ষার পথ কি বন্ধ হবে মেধাবী লায়লার

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ২ জুন ॥ সবাই যখন পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন নিয়ে ব্যস্ত, তখন লায়লা’দের ঘরে সে ব্যস্ততা মোটেও স্পর্শ করেনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি লায়লার পিতা শাহাদুল ইসলাম ওরফে হাদু প্যারালাইজড হয়ে শয্যাশায়ী। তাই তো প্যারালাইজড পিতার উপার্জন বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি পঙ্গু হয়ে গেছে পুরো পরিবার। সে সঙ্গে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া মেধাবী লায়লার উচ্চশিক্ষার পথও বন্ধের পথে। সিংড়া উপজেলার ভাগনাগরকন্দি গ্রামের শাহাদুল ইসলাম ওরফে হাদু। দুই কন্যাসহ মোট চারজনের পরিবার। এতদিন সারাদিন ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই শাহাদুল তার পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে এসেছে। কিন্তু গত তিন মাস ধরে হঠাৎ করে প্যারালাইজড হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন শাহাদুল। বন্ধ হয়ে গেছে আয় উপার্জন। বড় মেয়ে লায়লার জীবনও কোন সিনেমার কাহিনীকে হার মানাবে। জীবন কি জিনিস বুঝে উঠার আগেই সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীর বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী গ্রামে। কিন্তু বনিবনা না হওয়ার কারণে বিচ্ছেদ হয় সে সংসার। আবারও পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার জন্য ভাগনাগরকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় লায়লা। কিছুদিন চলার পর আবারও বন্ধ হয়ে যায় লেখাপড়া। কিন্তু মনোবল হারায়নি লায়লা। আবারও ২০১৮ সালে একই বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় লায়লা। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হন রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক্যালে। বর্তমানে সেখানে কম্পিউটার বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সে। আর লায়লা ছোট বোন বিপাশা এবারে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তবে পিতা হঠাৎ প্যারালাইজড হয়ে শয্যাশায়ী হওয়ার কারণে পড়াশোনার খরচ বহন করতে না পারার কারণে রাজশাহী থেকে চলে আসতে হয়েছে তাকে। বিত্তশালীদের সহযোগিতা না পেলে হয়ত লায়লার উচ্চশিক্ষার পথ বন্ধের পথে। কারণ তার লেখাপড়ার খরচ চালানোর সামর্থ্য নেই পরিবারের।