ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সদরঘাটে ব্যাপক আয়োজন

প্রকাশিত: ১২:১২, ২ জুন ২০১৯

ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সদরঘাটে ব্যাপক আয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঈদে লাখ লাখ ঘরমুখো যাত্রীর ঢল সদরঘাটে। এই উপলক্ষে স্মরণকালের সেরা প্রস্তুতি নিয়েছে রাজধানীর সদরঘাট নদীবন্দর। যাত্রী হয়রানি রোধে কড়া অবস্থানে রয়েছে সমন্বিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিআইডাব্লিউটিএ, জেলাপ্রশাসন, ফায়ারসার্ভিস এবং কোস্টগার্ড। পন্টুনে বার্দিং করা হয়েছে অর্ধশতাধিক লঞ্চ। অতিরিক্ত যাত্রী বহন প্রতিরোধে বারবার মাইকিং করে সতর্ক করছে বিআইডব্লিউটিএ। নির্বিঘ্নে যাত্রী চলাচলে প্রত্যাহার করা হয়েছে বেসরকারী কুলি ও শ্রমিক। আগামী ৬ তারিখ পর্যন্ত সদরঘাটে কোন বেসরকারী কুলি বা শ্রমিক থাকবে না বলে জানিয়েছেন সরবরাহ কোম্পানি নিউ ভিশম ইকো সিস্টেম। এদিকে ঈদ উপলক্ষে শনিবার এক জরুরী সভার আয়োজন করা হয়। সদরঘাট নদীবন্দর সমন্বিত কমিটি এই সভার আয়োজন করে। সভায় লঞ্চের মালিক, বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ফায়ারসার্ভিস ও অন্যরা উপস্থিত থেকে সাদরঘাটে বিপুলসংখ্যক যাত্রী কীভাবে সামাল দেয়া যায় সে বিষয়ে আলাপ আলোচনা হয়। এ সময় বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ঈদ উপলক্ষে রাজধানী থেকে প্রায় ১০ লক্ষাধিক যাত্রী লঞ্চযোগে নাড়ির টানে ঘরে ফিরবে। ঈদের আগে এবং পরে দুই তিন দিনের মধ্যেই এই চাপ সৃষ্টি হয়। এ সময় লঞ্চের ধারণ ক্ষমতার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি যাত্রী নিতে বাধ্য হয়। তবে একজন দক্ষ মাস্টার জানেন কী পরিমাণ যাত্রী নিলে তার জাহাজটি নিরাপদে পৌঁছতে পারবে। এছাড়া বর্তমান আবহাওয়া খুব সুবিধার নয়। এ জন্য মাস্টারকে অবশ্যই সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে লঞ্চের মালিক পক্ষ একটি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তারা যাত্রী ওঠাতেই থাকে। জরিমানা করলেও তার মধ্যে যাত্রী ওঠায়। এবার তিনি এ বিষয়ে মালিক পক্ষকে সভায় সতর্ক করে এমন কাজ না করার নির্দেশনা দেন। এ বিষয়ে নৌ পুলিশ পরিদর্শক ফরিদা বলেন, লঞ্চে যাত্রী পূরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। দেরি করলেই আইনের আওতায় এনে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করা হবে। কড়া অবস্থানে সমন্বিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ॥ সদরঘাটে লঞ্চ যাত্রী যাতে কোন ধরনের হয়রানির শিকার না হয় এজন্য কয়েক স্তরে প্রস্তুত করা হয়েছে সমন্বিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এতে নিযুক্ত রয়েছে নৌপুলিশ, ডিএমপি পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, গোয়েন্দা সংস্থা ও কোস্ট গার্ড, বিএনসিসিসহ ফায়ারসার্ভিসের কর্মীরা। সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং সেল বসানো হয়েছে মূল টার্মিনালে। লালকুঠি থেকে ওয়াইজঘাট পর্যন্ত পন্টুন, গ্যাংওয়ে, গেটওয়ে এমনকি রাস্তার পাশে ছোট ছোট দলে নিযুক্ত করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ বিষয়ে ডিএমপি লালবাগ জোনের উপ পুলিশ কমিশনার মোঃ ইব্রাহীম দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে আমরা কয়েকদফা বৈঠক করেছি। সেখানে আমাদের করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এখন আমাদের বাহিনী পোশাকে ও সিভিলে ডিউটিরত রয়েছে। কোন যাত্রী যাতে মলমপার্টি, অজ্ঞানপার্টি, চোর, ছিনতাইকারী কিম্বা দালাল অথবা কুলির খপ্পরে না পড়ে এ ব্যাপারে কড়া অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। আমাদের মোবাইল টিম পেট্রোল গাড়ি নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া কুলিরা যাতে লাগেজ নিয়ে টানাটানি না করে সে দিকে খেয়াল করা হচ্ছে। এদিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিশেষ সেবা পক্ষ চালু করেছে। এর আওতায় প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা এবং বিশেষ কিছু লোকের জন্য বন্দরে প্রবেশের শুল্ক মওকুফ করা হয়েছে।
×