ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেস সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন

প্রকাশিত: ১০:৫১, ২ জুন ২০১৯

 সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেস সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন

কংগ্রেসের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হলেন সোনিয়া গান্ধী। শনিবার দলের নবনির্বাচিত লোকসভা সদস্যরা নেতা নির্বাচন করতে বৈঠকে বসেন। সেখানেই চেয়ারপার্সন হিসেবে সোনিয়ার নাম চূড়ান্ত হয়। তিনিই ঠিক করবেন সংসদে কংগ্রেসের দলনেতা কে হবেন। বৈঠকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সোনিয়ার নাম নেতা হিসেবে প্রস্তাব করেন। দলের নেতারা সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান। বৈঠকে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্যদের পাশাপাশি লোকসভার ৫২ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। গত পাঁচ বছর এই দায়িত্ব পালন করেছেন কর্ণাটকের নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। এবার তিনিও জিততে পারেননি। নতুন নেতা কে হবেন তা নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে তিনজনের নাম সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখা হয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী না ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী কে এই দায়িত্ব নেবেন তা নিয়ে আলোচনা চলছে শুরু থেকেই। এদিকে সংসদীয় দলের বৈঠকে বিজেপির সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, কংগ্রেসের সবার মনে রাখা উচিত তাঁরা কারা। তাঁদের মনে রাখতে হবে, তাঁরা প্রতিটি ভারতীয়র জন্য লড়াই করছেন। সেটা মাথায় রেখেই চলা উচিত। এদিকে নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতার পদ পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে। যে কয়টি আসন পেলে বিরোধী দলনেতার পদ পাওয়া যায় তার থেকে কংগ্রেসের তিনটি আসন কম আছে। গতবার কংগ্রেসের সাংসদ সংখ্যা ছিল ৪৪। আর তাই তারা বিরোধী দলনেতার পদ পায়নি। এবারও পরিস্থিতি প্রায় সেরকম। সংসদীয় দলের বৈঠকে সোনিয়া কংগ্রেসকে ভোট দেয়া ১২ কোটি ১৩ লাখ ভোটারকে ধন্যবাদ জানান। ভোটারদের পাশাপাশি ছেলে রাহুলকেও ধন্যবাদ জানান মা। নির্বাচনের সময় রাতদিন যেভাবে কংগ্রেস সভাপতি মোদি সরকারের সমালোচনা করেছেন, যেভাবে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সমস্যা নিয়ে সরব হয়েছেন তা প্রশংসাযোগ্য বলেই মনে করেন সোনিয়া। পাশাপাশি কয়েকমাস আগে কংগ্রেস যে ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে জয় পেয়েছে তার জন্যও কংগ্রেস সভাপতির ভূমিকা ছিল বলেই তিনি মনে করেন। সংসদীয় দলের বৈঠকে রাহুল গান্ধী বলেন, বিজেপির সঙ্গে প্রতিদিন লড়ব। তিনি বলেন, দলের ঘুরে দাঁড়াবার প্রয়োজন আছে। আর সেটা করার সুযোগও আছে কংগ্রেসের। এমনিতেই কংগ্রেসের ভোট বিপর্যয়ের পর থেকে দায় নিয়ে পদত্যাগ করার কথা ভাবছেন সভাপতি রাহুল। তিনি আগেই জানান, বিজেপির সঙ্গে তাঁর লড়াই মতাদর্শের। আর সেটা তিনি চালিয়ে যাবেন। তাঁর কাছে মনে হয়েছে, দল পরিচালনের ভার না থাকলে সেই লড়াই চালিয়ে যাওয়া তাঁর পক্ষে সহজ হবে। ঠিক এক সপ্তাহ আগে কংগ্রেস আরও একটি বৈঠক করেছিল। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটি সেদিন নির্বাচনে বিপর্যয়ের ময়নাতদন্ত করতে বসেছিল। আর সেখানেই পদত্যাগের কথা জানিয়েছিলেন রাহুল। সর্বসম্মতভাবে সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু গত এক সপ্তাহে রাহুলের অবস্থান বদল হয়নি। বিভিন্ন আলোচনায় বারবার তিনি জানিয়েছেন সভাপতি পদে থাকবেন না। ভোটের ফল প্রকাশের দিন কংগ্রেস দফতরে সাংবাদিকদের রাহুল বলেছিলেন, ‘এই হারের সম্পূর্ণ দায় আমার।’ সেদিন অবশ্য পদত্যাগ করবেন কিনা সে কথা বলেননি। এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, তাঁর যা বলার তা কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটিতে জানাবেন। গত শনিবার নিজের পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন রাহুল। দলের হারের সঙ্গে সঙ্গে এবার নিজের দেড় দশকের কর্মভূমি উত্তরপ্রদেশের আমেথিতে পরাজিত হয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি।
×