ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এইচএসসির পর বিভাগ নির্বাচন

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ২ জুন ২০১৯

 এইচএসসির পর বিভাগ নির্বাচন

সায়েন্স, আর্টস না কমার্স : সায়েন্স বা কমার্স অথবা আর্টস বিষয় হিসেবে ফেলনা নয় কোনটাই। পড়ালেখা করে যে কোন বিষয়েই উন্নতির সুযোগ রয়েছে। সায়েন্স-আর্টস-কমার্সের মধ্যে কোন্ বিষয়ে পড়লে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি সহজেই পাওয়া যাবে, তা ঠিক করুন। মাথা ঠাণ্ডা রেখে ও বাস্তবতা বিচার করে করতে হবে বিভাগ নির্বাচন। সলিউশন সায়েন্স : সায়েন্স নিয়ে পড়ার আগে দেখে নিতে হবে ক’টি বিষয়। সায়েন্সের প্রায় সব শাখায় অঙ্ক রয়েছে, তাই অঙ্কে ভয় পেলে চলবে না। নিজের চেষ্টায় অঙ্কের সমাধান করার প্রবণতা থাকতে হবে। ফিজিক্স তো বটেই, অনেক সময় কেমিস্ট্রিতেও রয়েছে ক্যালকুলাসের ব্যবহার। অনেকে মনে করেন, বায়োসায়েন্স নিলে অঙ্ক করতে হবে না। প্রাথমিক স্তরে হয়ত কাজে লাগবে না, তবে ভবিষ্যতে গবেষণায় অঙ্ক কাজে লাগতে পারে। বিজ্ঞান আমাদের যুক্তি দিয়ে বিচার করতে শেখায়। উপপাদ্য থেকে শুরু করে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং সব কিছুতেই রয়েছে এর উপস্থিতি। সুতরাং, সায়েন্স নিয়ে পড়তে হলে ভাল লজিক্যাল এ্যাবিলিটি থাকা জরুরী। আর্টসের আদ্যোপান্ত : ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে আর্টস বা হিউম্যানিটিজ একেবারে ফেলনা নয়, বরং কয়েকটি বিষয় নিয়ে পড়ালেখা করলে ভাল রোজগার এবং সামাজিক সম্মান দুটোই রয়েছে। আর্টসে বিষয়বৈচিত্র্য ও পরিধিও ব্যাপক। আর্টসের ছাত্রছাত্রীদের স্মৃতিশক্তি ভাল হওয়া জরুরী। এর সঙ্গে দরকার মৌলিক বিষয়ে লিখতে পারার ক্ষমতা। কোন বিষয় সম্পর্কে নিজের মতামত দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন মতবাদের মধ্যে সিন্থেসিস করার ক্ষমতাও থাকা চাই। এছাড়াও থাকা চাই ভাষার ওপর দখলদারিত্ব। ইংরেজী এবং নিজের মাতৃভাষা, দুটি ভাষাতেই দক্ষতা প্রয়োজন। আর্টসের এমন কিছু বিষয় আছে যা কেবল মুখস্থ করলেই চলে না। আর্টসের ছাত্র-ছাত্রীদের সাফল্যের নেপথ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং ক্যাপাবিলিটির ভূমিকা আছে। পরীক্ষার খাতায় হোক বা কর্মক্ষেত্রে, নিজের বক্তব্য সঠিকভাবে ব্যক্ত করার গুণ আর্টসের একজন শিক্ষার্থীর থাকা উচিত। সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহের প্রশ্নাবলীর উত্তরের মান ভাল করার জন্য আর্টসের শিক্ষার্থীদের বেশি পরিশ্রম করতে হয়। প্রয়োজনবোধে একাধিক রেফারেন্স বইয়ের সাহায্য নিয়ে উত্তর তৈরির কাজ করতে হবে। আর্টস বা হিউম্যানিটিজে পড়তে গেলে শিক্ষার্থীদের ধৈর্য থাকাটা ভীষণ জরুরী। কথকতা কমার্সের : নম্বরই কমার্সের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। শেয়ার মার্কেটের সূচক, বিভিন্ন কোম্পানির ব্যালেন্সশিট সবই সংখ্যার খেলা। কমার্স বিষয়টি ডেবিট-ক্রেডিটের নিয়মে বাঁধা। এ ক্ষেত্রে যে যত বেশি যুক্তি দিয়ে ভাবতে পারবে তার সাফল্যের সম্ভাবনা তত বেশি। কমার্সের শিক্ষার্থীরা যে সব পেশায় যাবে সেখানে একই কাজ বার বার করতে হতে পারে। প্রতিদিনই জার্নাল এন্ট্রি করা, ডেবিট-ক্রেডিট মেলানো প্রভৃতি করতে গিয়ে কাজে একঘেয়েমি আসতে পারে। তাই এ বিষয়ে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের হতে হবে ধৈর্যশীল। ব্যতিক্রমী বিষয়ে ক্যারিয়ার : যুগোপযোগী বিষয়ে পড়াশোনা করলে কর্মজীবনে সফল হওয়া সহজ হয়। এইচএসসি পাসের পর স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে সময়োপযোগী বিভিন্ন কোর্স করতে পারেন। কোর্স সম্পন্নকারীদের দেশে ও বিদেশে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। বর্তমানে গতানুগতিক পেশার বলয় ভেঙ্গে বেরিয়ে আসছে তারুণ্য। রাখুন ১. শিক্ষার্থীর উচিত কাক্সিক্ষত বিভাগ নির্বাচন করা। কারণ শিক্ষার্থী কাক্সিক্ষত বিভাগ নির্বাচন করলে পরবর্তীতে ভাল করার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ২. বিভাগ ও বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিভাবকের পছন্দ-অপছন্দের মূল্য দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীর পছন্দ-অপছন্দ উপেক্ষিত হয়; যার প্রভাব পড়ে একাডেমিক রেজাল্টে। ৩. নতুন বিষয়গুলোতে সনাতনী বিষয়ের তুলনায় প্রথম শ্রেণী পাওয়া সহজ। কিছু কিছু বিষয় স্বাভাবিকভাবেই বেশি নম্বর পাওয়া যায়। ভাল ফলের জন্য ভাল বিষয় শিক্ষার্থীকে বেছে নিতে হবে। ৪. কিছু কিছু বিষয়ের সময়োপযোগিতা ও চাহিদা ব্যাপক। যেমন-বর্তমান মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগে ব্যবসায় শিক্ষার চাহিদা অনেক। নতুন কিছু বিষয় আছে যার কর্মপরিধি সীমিত। বিষয় ও বিভাগ নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর উচিত সংশ্লিষ্ট বিষয়ের চাহিদা ও এর কর্মপরিধি মূল্যায়ন করা। ৫. বহির্বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এবং ভবিষ্যত চাহিদার কথা বিবেচনা করে শিক্ষার্থীর উচিত বিভাগ ও বিষয় নির্বাচন করা। বিষয় নির্বাচনে শিক্ষার্থীর উচিত পছন্দের বিভাগ ও বিষয়ের ভবিষ্যত সম্পর্কে ধারণা নেয়া। মাঈন উদ্দিন
×