ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

লিভারপুল-টটেনহ্যামের ইউরোপ সেরার লড়াই

প্রকাশিত: ১০:৩৩, ১ জুন ২০১৯

 লিভারপুল-টটেনহ্যামের ইউরোপ সেরার লড়াই

এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে শিরোপা নির্ধারণী মহারণ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় জাহিদুল আলম জয় ॥ ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ। এবারের ২০১৮-১৯ মৌসুমের ফাইনাল হতে যাচ্ছে অল-ইংলিশ। অর্থাৎ ইংল্যান্ডের দুই ক্লাব টটেনহ্যাম হটস্পার ও লিভারপুল ফাইনাল মঞ্চে নাম লিখিয়েছে। সময়ের গতিধারায় অবশেষে ফাইনাল ম্যাচ মাঠে গড়ানোর সময়ও হয়ে গেছে। আজ রাতেই বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম আকর্ষণীয় ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের দুই জায়ান্ট লিভারপুল ও টটেনহ্যাম। স্প্যানিশ ক্লাব এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে শিরোপা নির্ধারণী মহারণ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১টায়। সরাসরি সম্প্রচার করবে সনি টেন ১ ও সনি টেন ২ চ্যানেল। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে এসেছে টটেনহ্যাম। প্রথমবারেই বাজিমাত করার আশা তাদের। স্পার্সরা বাড়তি শক্তি ও মনোবল পাচ্ছে দলের অধিনায়ক ও সেরা তারকা হ্যারি কেন ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরায়। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালকে বিশ্বকাপ ফাইনালের মতোই গুরুত্বপূর্ণ মানছেন টটেনহ্যাম হটস্পার কোচ মাওরিচিনো পচেত্তিনো। সেমিফাইনালে দারুণ এক রূপকথা উপহার দিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে এসেছে স্পার্সরা। একেতো প্রথম ফাইনাল খেলার রোমাঞ্চ। সঙ্গে স্বস্তির খবর ইনজুরি থেকে হ্যারি কেনের মুক্তি। সবমিলিয়ে ফাইনালে আরও একটি চমকের অপেক্ষায় কোচ। এ্যাঙ্কেল ইনজুরির কারণে সেমিফাইনাল মিস করা কেন অনুশীলন করছেন দলের সঙ্গে। ইংলিশ স্ট্রাইকার স্বপ্ন দেখছেন ট্রফি জয়ের। গত এপ্রিলে গোড়ালির লিগামেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে ইংলিশ অধিনায়ক কেন মাঠের বাইরে ছিলেন। ফিট হওয়ার কারণে শুধু চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালই নয়, কেন সুযোগ পেয়েছেন নেশন্স কাপের ইংল্যান্ড দলেও। তবে লিভারপুলও থেমে নেই। দলটি রণকৌশল সাজিয়ে নিজেদের ইতিহাসে ষষ্ঠ শিরোপা জিততে প্রস্তুত। এর আগে দ্য রেডসরা শুধু পাঁচবার শিরোপা জিতেই থেমে থাকেনি, রানার্সআপ হয়েছে আরও তিনবার। গত মৌসুমেও তারা রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ফাইনালে হেরে দ্বিতীয় হয়। এবার টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে হারের বেদনায় পুড়তে চান না দলটির ফুটবলাররা। এমনিতেই চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে চতুর্থ সেরা দল লিভারপুল। এবার শিরোপা জিততে পারলে আরও এগিয়ে যাবে তারা। এবার ইংল্যান্ডের কোন ক্লাব চ্যাম্পিয়ন্স লীগ না জিতলে বোধহয় অবিচার হতো! এ কারণেই হয়তো বিধাতা নাটকীয়ভাবে লিভারপুল ও টটেনহ্যাম হটস্পারকে ফাইনাল মঞ্চে তুলে এনেছেন। এতে করে দীর্ঘ ১১ বছর পর অল-ইংলিশ ফাইনাল হতে যাচ্ছে। এবার কোয়ার্টার ফাইনালেই আট দলের চারটি ছিল ইংল্যান্ডের। টটেনহ্যাম ও লিভারপুল ছাড়াও ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও ম্যানচেস্টার সিটি। দুই ম্যানচেস্টার শেষ আট থেকে বিদায় নিলেও সেমিতে পৌঁছে যায় বাকি দুই দল। কিন্তু শেষ চারের প্রথম লেগে হারের কারণে তাদের ফাইনালে খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। কিন্তু দ্বিতীয় লেগে রূপকথার জন্ম দিয়ে ফাইনালে উঠেছে লিভারপুল ও টটেনহ্যাম। এবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো অল-ইংলিশ ফাইনাল দেখতে যাচ্ছে ফুটবলবিশ্ব। ইউরোপিয়ান কাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স লীগ মিলিয়ে এর আগে একবারই অল-ইংলিশ ফাইনাল দেখা গেছে। ২০০৭-০৮ আসরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও চেলসি ফাইনাল খেলেছিল। তবে ইউরোপিয়ান কাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ছাড়া ইউরোপের অন্যান্য টুর্নামেন্ট হিসেব করলে এটি তৃতীয়বারের মতো অল-ইংলিশ ফাইনাল। ১৯৭২ সালে উয়েফা কাপের ফাইনালে ওলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সের মুখোমুখি হয়েছিল টটেনহ্যাম। এবার অল-ইংলিশ ফাইনাল দিয়ে নিশ্চিত হয়েছে আরও কিছু বিষয়। ২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনালে শিরোপা জিতেছিল জার্মানির বেয়ার্ন মিউনিখ। এরপর টানা পাঁচ মৌসুম শিরোপা জিতেছে স্প্যানিশ ক্লাব। এর মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদ চারবার আর বার্সিলোনা একবার। এবার আর স্পেনের কোন ক্লাবের ঘরে শিরোপা উঠছে না। বরং ২০১২ সালের পর এবার শিরোপা জিতবে কোন ইংলিশ ক্লাব। সাত বছর আগে বেয়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল চেলসি। ইংলিশ ক্লাবগুলোর গর্বের একটি জায়গাও আছে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনালে ইংল্যান্ড থেকে এ পর্যন্ত খেলেছে আটটি দল। আর কোন দেশ থেকে এত বেশিসংখ্যক ক্লাব ইউরোপ সেরার ফাইনাল খেলতে পারেনি।
×