ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পটিয়া রাহাত আলী স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ ভেঙ্গে পড়েছে

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ১ জুন ২০১৯

 পটিয়া রাহাত আলী স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ ভেঙ্গে পড়েছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া ॥ দক্ষিণ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ পটিয়া আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ভেঙ্গে পড়েছে। প্রতি বছর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয় ঘটছে। তাছাড়া স্কুলের শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল, অকৃতকার্য ছাত্রদের ভর্তি, স্কুল পরিচালনা কমিটির মনগড়া সিদ্ধান্তের কারণে স্কুলের এই পরিস্থিতি হয়েছে। বর্তমানে স্কুলে নেই প্রধান শিক্ষক। রয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও দুইজন মহিলা সহকারী প্রধান শিক্ষক। তার মধ্যে নারী শিক্ষক বিলকিস আকতারের সঙ্গে খারাপ আচরণের দায়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহদাত হোসেনকে অতি সম্প্রতি বরখাস্ত করা হয়েছে। ২০১৯ সালে প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পাওয়ার পর ঐতিহ্যবাহী এই স্কুল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করে প্রাক্তন ছাত্ররা ক্ষোভ করেছেন। তাদের অভিযোগ, স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির ব্যর্থতার কারণে বর্তমানে স্কুলটির শিক্ষার পরিবেশ ভেঙ্গে পড়েছে। এবার এসএসসি পরীক্ষায় রাহাত আলী স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ জন। পাসের হার ৮৪%। অথচ পার্শ্ববর্তী পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫১ জন। পাসের হাস ৯৭.৮৬%। পটিয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন মেধাবী ছাত্র গোফরান রানা শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মানকে অপসারণ করে স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন। প্রাক্তন ছাত্র ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর সদরে ১৯১৪ সালে মওলানা আবদুস সোবহান (হাইদগাঁও) ও রাহাত আলী দারোগা (পটিয়া থানার) দুইজনে মিলে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠ দক্ষিণ চট্টগ্রামের একটি প্রতিষ্ঠান হলেও নানা কারণে তার ঐতিহ্য পারাতে বসেছে। বর্তমানে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত ১৬শ শিক্ষার্থী রয়েছে। দীর্ঘদিন শিক্ষক সংকট থাকলেও স্কুল পরিচালনা কমিটি শিক্ষক নিয়োগের জন্য কোন উদ্যাগে নেয়নি। তাছাড়া স্কুলের শিক্ষকদের মধ্যে চলছে গ্রুপিং। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শরীফুল ইসলাম ১১ মাস শিক্ষাকতা করলেও হঠাৎ তিনি স্কুল পরিচালনা কমিটিকে না বলে চলে গেছেন। বর্তমানে পদটি খালি রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে রয়েছেন আবদুল মোতালেব এবং শিক্ষকদের গ্রুপিংয়ের কারণে বর্তমানে বিলকিস আকতার ও শাহনাজ বেগম সহকারী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন। একই স্কুলে দুইজন সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন ছাত্র, অভিভাবক ও এমনকি মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড পর্যন্ত। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, স্কুল পরিচালনা কমিটির কোন ব্যর্থতা নেই। তিনি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ অনেকটা উন্নতি হয়েছে। আগামী ৮ জুন জরুরী বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে পরিচালনা কমিটি সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন এবং যেসকল প্রাক্তন ছাত্র অভিযোগ তুলছেন তাদের উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করছি।
×