ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইমরান তাহিরের দু’টি অন্যরকম রেকর্ড

প্রকাশিত: ১০:২২, ৩১ মে ২০১৯

 ইমরান তাহিরের দু’টি অন্যরকম রেকর্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপ মানেই ধরে নেয়া যায় পেসারদের জন্য সুবিধাজনক উইকেট থাকবে। তবে এবার দ্বাদশ বিশ্বকাপের আগে সেই চিন্তাধারায় এসেছে পরিবর্তন। কারণ সম্প্রতি ইংল্যান্ডের মাঠগুলোয় প্রচুর রান করছেন ব্যাটসম্যানরা। তাই বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই এক বিস্ময়কর ঘটনার জন্ম দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। আগে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও জেসন রয়কে ভ্যাবাচ্যাকা খাইয়ে দিয়েছেন লেগস্পিনার ইমরান তাহিরকে দিয়ে বোলিং শুরু করিয়ে। এর আগে বিশ্বকাপে কোন দলই কখনও শুরুটা স্পিনার দিয়ে করেননি। ম্যাচের মাত্র দ্বিতীয় বলেই উইকেট তুলে নিয়ে স্পিনার হিসেবে বিশ্বকাপে দ্রুততম উইকেটশিকারি হওয়ার রেকর্ডও গড়েছেন তিনি। এছাড়া ৪০ বছর ৬৪ দিন বয়সে বিশ্বকাপের কোন ম্যাচ খেলে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাস বদলে দিয়েছেন। এখন তিনিই সবচেয়ে বয়স্ক ক্রিকেটার যিনি প্রোটিয়াদের হয়ে বিশ্বকাপ খেলার অনন্য গৌরব দেখালেন। টস জিতে আগে ইংলিশদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রয় ও বেয়ারস্টো উদ্বোধন করতে এসে চমকে যান প্রতিপক্ষ বোলার হিসেবে তাহিরকে দেখে। কারণ প্রথমে পেসারদের দিয়েই পেসশক্তিতে ভরপুর প্রোটিয়ারা আক্রমণ শুরু করবে এটাই স্বাভাবিক। আর ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে প্রথমে কোন স্পিনারকে দিয়ে বোলিং শুরু করানোটা একেবারেই প্রথাগত নয় এবং অস্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু প্রোটিয়া অধিনায়ক প্লেসিস বিশ্বকাপের পুরনো ইতিহাস পাল্টে দিলেন লেগস্পিনার তাহিরকে বোলিংয়ে এনে। আর তাহির ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই উইকেট শিকার করে আরেকটি ইতিহাস গড়লেন। ফর্মের তুঙ্গে থাকা মারকুটে ওপেনার বেয়ারস্টোকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন উইকেটের পেছনে কুইন্টন ডি ককের ক্যাচে পরিণত করে। এর আগে বিশ্বকাপে এত দ্রুত কোন স্পিনার উইকেট শিকার করতে পারেননি। পেস বোলারদের উপযোগী ইংলিশ কন্ডিশনে স্পিন বোলার দিয়ে শুরু হবে বিশ্বকাপ এমনটা ভাবেননি কেউ- ইংল্যান্ডও। আর সেই চমকটাতেই কাজ হয়েছে। বিশ্বকাপের রং, রূপ, আকর্ষণ আর উন্মাদনাও এর মাধ্যমে বেড়েছে স্বাভাবিকভাবেই। এই ঘটনার মাধ্যমে একটি বিষয় নিশ্চিত হয়েছে, এবারের বিশ্বকাপে আলো ছড়াবেন স্পিনাররা এবং চমকেরও জন্ম দেবেন। আর স্পিনারদের মাঝেও বিশেষ করে লেগ স্পিনাররা ছড়ি ঘোরাবেন এই বিশ্ব আসরে তা বলাইবাহুল্য। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকার তাহির ছাড়াও আছেন বর্তমান বিশ্বে অন্যতম সেরা লেগি আফগানিস্তানের রশিদ খান, পাকিস্তানের শাদাব খান, ভারতের যুবেন্দ্র চাহালদের ওপর তাই নজর থাকবে বিশ্বকাপজুড়েই। তাহির এই ম্যাচে দেশের পক্ষেও একটি অবিস্মরণীয় রেকর্ডের মালিক হয়েছেন। এর আগে বিশ্বকাপ খেলা সবচেয়ে বেশি বয়সী দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার ছিলেন ওমর হেনরি। ১৯৯২ বিশ্বকাপে ওয়েলিংটনে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৪০ বছর ৩৯ দিন বয়সে তিনি খেলতে নেমেছিলেন। এবার তাকে পেছনে ফেললেন ৪০ বছর ৬৪ দিন বয়সী তাহির। তবে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি বয়সে ক্রিকেট খেলার ক্ষেত্রে সর্বকালের সেরা রেকর্ডটি হল্যান্ডের নোলান ক্লার্কের দখলে। আশ্চর্যজনকভাবে তিনি এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেই ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে রাওয়ালপিন্ডিতে যখন খেলতে নেমেছিলেন সেদিন বয়স ছিল ৪৭ বছর ২৫৭ দিন। সেই রেকর্ডটি এখনও অম্লান।
×