ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আর্সেনালকে বিধ্বস্ত করে চ্যাম্পিয়ন চেলসি

প্রকাশিত: ১০:২০, ৩১ মে ২০১৯

 আর্সেনালকে বিধ্বস্ত করে চ্যাম্পিয়ন চেলসি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফাইনাল মহারণ নিয়ে গোটা ফুটবল দুনিয়ার ছিল দুর্নিবার আকর্ষণ। অল-ইংলিশ ফাইনাল হওয়ায় সবার ধারণা ছিল জমজমাট ও উত্তেজনাপূর্ণ খেলা হবে। কিন্তু সেটা হতে দেয়নি অপ্রতিরোধ্য চেলসি। বুধবার রাতে উয়েফা ইউরোপা লীগের ফাইনালে নিজ দেশের ক্লাব আর্সেনালকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপা জিতে নিয়েছে চেলসি। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর অলিম্পিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের প্রথমার্ধে অবশ্য কোন দলই গোলের দেখা পায়নি। বিরতির পরই গানার্স শিবিরে আক্রমণের ঢেউ বইয়ে দেয় ব্লুজরা। এতেই খড়কুটোর মতো উড়ে যায় উনাই এমেরির দল। চেলসির হয়ে গোলের সূচনা করেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ী তারকা অলিভিয়ের জিরুড। এরপর স্প্যানিশ উইঙ্গার পেড্রোর লক্ষ্যভেদের পর জোড়া গোল করেন বেলজিয়াম তারকা ইডেন হ্যাজার্ড। এই মৌসুমেই হ্যাজার্ডের চেলসির ছাড়ার সম্ভাবনা প্রবল। তার আগে তিনি ক্লাবকে রাঙিয়ে দিয়ে নিজের ইচ্ছে পূরণ করেছেন। আর্সেনালের একমাত্র সান্ত¡নার গোলটি করেন নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড আলেক্স আইওবি। ক্লাব পর্যায়ে ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা প্রতিযোগিতায় এটা চেলসির দ্বিতীয় শিরোপা। ২০১২-১৩ মৌসুমে প্রথমবার তারা ইউরোপা লীগ জিতেছিল। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে এ্যান্টোনিও কন্টের উত্তরসূরি হিসেবে স্ট্যামফোর্ডে যোগ দেয়া কোচ মাওরোসিও সাররির অধীনে চেলসির এটা প্রথম শিরোপা। এর মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথম বড় কোন শিরোপার স্বাদ পেয়েছেন ইতালিয়ান এই কোচ। ফাইনালের আগে হ্যাজার্ড শিরোপা জিতে ক্লাব ছাড়ার প্রত্যয়ের কথা জানিয়েছিলেন। তার ইচ্ছাটাই পূরণ হয়েছে। আসছে গ্রীষ্মকালীন দলবদলের মৌসুমে হ্যাজার্ড যে চেলসি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যাচ্ছেন এটা অনেকটা নিশ্চিত। এই হিসেবে পরশু রাতে ইউরোপা লীগের ফাইনালই ছিল নীল জার্সি গায়ে হ্যাজার্ডের শেষ ম্যাচ। বিদায় বেলায় শেষটা কি দুর্দান্তভাবেই না রাঙালেন তিনি! ফাইনালে এক গোল করে অনন্য রেকর্ড গড়েছেন চেলসির স্প্যানিশ ফুটবলার পেড্রো। আন্তর্জাতিক ও ক্লাব পর্যায় মিলিয়ে স্প্যানিশ তারকা খেলেছেন তিন দলের হয়ে। স্পেন জাতীয় দল, বার্সিলোনা ও চেলসি। এই তিন দলের হয়ে খেলে একজন খেলোয়াড়ের পক্ষে যা যা জেতা সম্ভব সবকিছুই জেতা হয়ে গিয়েছিল পেড্রোর, শুধু বাকি ছিল ইউরোপা লীগ। আর্সেনালকে হারিয়ে সেই অপূর্ণ স্বাদও নিয়ে নিয়েছেন তিনি। ফাইনাল মহারণের শুরুর দিকে দু’দলকেই ছন্দহীন দেখা যায়। প্রথম পনেরো মিনিটের পর কিছুটা উত্তেজনা ফিরে আসে। ম্যাচের ১৮ মিনিটে ডি বক্সে ঢুকে পড়া ফরাসী ফরোয়ার্ড লাকাজেট আগুয়ান গোলরক্ষক কেপা আরিসাবালাগার মাথায় লেগে পড়ে গেলে পেনাল্টির জোরালো আবেদন করে আর্সেনাল। তবে রেফারির সাড়া মেলেনি। আট মিনিট পর সুইস মিডফিল্ডার গ্রানিট জাকার ২৫ গজ দূর থেকে নেয়া বুলেট গতির শট ক্রসবার ছুঁয়ে চলে গেলে বেঁচে যায় চেলসি। ধীরে ধীরে গুছিয়ে ওঠা চেলসি প্রথমার্ধের শেষ ১০ মিনিটে আর্সেনালের রক্ষণে চাপ বাড়ায়। ভাল দুটি সুযোগও পায় তারা। তবে সাফল্য মেলেনি। বিরতির পর শুরু হয় চেলসির কারিশমা। ৪৯ মিনিটে আর্সেনাল গোলরক্ষক পিটার চেককে ফাঁকি দিয়ে চলসিকে এগিয়ে নেন জিরুড। এমেরসনের ক্রসে নেয়া হেডে জাল খুঁজে নেন ফরাসী ফরোয়ার্ড। আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতার এটি ১১ নম্বর গোল। ৬০ মিনিটে হ্যাজার্ডের পাস পেয়ে দরুণ শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন পেড্রো। আসরে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডের এটি পঞ্চম গোল। ৬৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে চেলসিকে তিন গোলে এগিয়ে নেন পুরো ম্যাচে অসাধারণ খেলা হ্যাজার্ড। জিরুড ডি বক্সে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টিটি পায় চেলসি। তিন গোলে পিছিয়ে পড়ার চার মিনিট পর ডি বক্সের বাইরে থেকে বুলেট গতির আচমকা শটে আর্সেনালের হয়ে একটি গোল করেন আইওবি। অনেকেই ভেবেছিলেন এরপর হয়তো ঘুরে দাঁড়াবে গানার্সরা। কিন্তু হতে দেননি হ্যাজার্ড। ৭২ মিনিটে জিরুডের পাস থেকে নিজের দ্বিতীয় ও দলের চার নম্বর গোল করে আর্সেনালকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন বেলজিক তারকা। সেই সঙ্গে চেলসিও চ্যাম্পিয়নশিপও নিশ্চিত করেন।
×