ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এদিকে বাবর ওদিকে রাসেল

প্রকাশিত: ১০:১৯, ৩১ মে ২০১৯

 এদিকে বাবর ওদিকে রাসেল

জিএম মোস্তফা ॥ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হলো বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয়দিনে আজ মাঠে নামছে পাকিস্তান। তাদের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নটিংহ্যামে একে অপরের মুখোমুখি হবে এই দুই দল। বিশ্বকাপের বিশাল মঞ্চের এই ম্যাচে কার ঝলক দেখা যাবে আজ? সেটা এখন সময়ের হাতে। তবে ব্যাট হাতে পাকিস্তানের অন্যতম ভরসার নাম বাবর আজম। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের হয়ে নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরেছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচেও তার ব্যাটের দিকে তাকিয়ে থাকবে পাকিস্তান। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে জ্বলে উঠতে পারেন আন্দ্রে রাসেল। সঠিক সময়ে জ্বলে উঠলে পাকিস্তানকে কাঁপিয়ে দিতে পারে তার ব্যাটিং তা-ব। পাকিস্তানের মারকুটে ব্যাটসম্যান বাবর আজম। ২৪ বছর বয়সেই নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। যে কারণে বিশ্বকাপেও ফেবারিটের তকমাটা গায়ে মাখানো তার। চলতি মাসে তিনটি সেঞ্চুরি করে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটাও দারুণভাবে সেরে নিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, শেষ তিন ম্যাচের দুটিতেই শতরানের দুর্দান্ত দুটি সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন বাবর। গত ১৭ মে এই নটিংহ্যামেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। তার দুইদিন পর লিডসে খেলেন ৮০ রানের ইনিংস। সর্বশেষ গত শুক্রবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচেও ১১২ রানের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি উপহার দেন তিনি। পারফর্মেন্সের কারণে বাবরকে তুলনা করা হচ্ছে ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলির সঙ্গে। তিন ফরমেটে পাকিস্তানের হয়ে ১১৫টি ম্যাচ খেলেছেন বাবর। তার ব্যাটিং করার ধরন বিরাটের সঙ্গে কিছুটা মেলে বটে। যে কারণেই বাবরকে তুলনা করা হচ্ছে কোহলির সঙ্গে। এ ব্যাপারে বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কও সম্মতি দিচ্ছেন। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বাবরের সেঞ্চুরি ক্লার্ককে মুগ্ধ করেছে। এ প্রসঙ্গে মাইকেল ক্লার্ক বলেন, ‘ও সত্যিকারের প্রতিভা। গোটা বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে ভরসা জোগাতে পারে বাবর। ওর ব্যাটিং স্টাইল ভাল। বড় রান করার ক্ষমতা রয়েছে ওর। ৩০০ থেকে ৩২০ রান তোলার ক্ষেত্রে বাবরের ওপর নির্ভর করতে হবে পাকিস্তানকে।’ এদিকে চাপের মুখে দুর্দান্ত ব্যাট করেন আন্দ্রে রাসেল। ২০১১ সালে ভারত-বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে অভিষেক ঘটে তার। বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেকের পর খেলেছেন ৫২টি ওডিআই ম্যাচ। আর এ সময়ে রাসেল সাড়ে ২৮ গড়ে করছেন ৯৯৮ রান। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত অপরাজিত ৯২ রান। আর টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেকের পরে খেলেছেন ৪৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪৭ রান আর প্রায় ১৮ গড়ে সর্বমোট করেছেন ৪৬৫ রান। ব্যাটসম্যান রাসেলের পাশাপাশি বোলার হিসেবেও দলে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন ডানহাতি এই মিডিয়াম পেসার। ইনিংসের শেষদিকে কিপটে বোলিং করে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে ওস্তাদ এই ক্যারিবিয়ান। ওডিআই ক্রিকেটে ৫.৮৬ ইকোনমিতে ৫২ ম্যাচে রাসেলের সংগ্রহ ৬৫টি উইকেট। যেখানে সেরা বোলিং ফিগার ৩৫ রান খরচে ৪ উইকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাঁচ বছর পার করতে না করতেই দুইবার বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট উঠেছে রাসেলের মাথায়। দলের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন বিশ্বকাপ জয়ের দুই আসরেই। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এই বিধ্বংসী ফর্ম ধরে রেখে ইংল্যান্ডে ওডিআই বিশ্বকাপে অংশ নিতেও প্রস্তত এই ক্যারিবিয়ান। নিজের দিনে কোন বোলারকেই সমীহ করেন না তিনি। আর একইভাবে কোন ব্যাটসম্যানকেই ভয় করেন না যখন এগিয়ে যান বল হাতে। ২০১৫ সালের পর মাত্র একটি ওয়ানডে খেলা রাসেল বিশ্বকাপের আগে এক সাক্ষাতকারে বলেন, ‘বিশ্বকাপ দলে ডাক পেয়ে আমি মোটেও আশ্চর্য হইনি। আমি ভাল করছিলাম। তাই নির্বাচকদের নজরে ছিলাম। আমি জানি, জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করতে আমাকে সেরাটাই দিতে হবে। তবে বিশ্বকাপ দলে ফেরার জন্য মনোযোগ দিয়ে খেলেছি তা কিন্তু নয়। আমি চেয়েছিলাম এখানে আমার কাজটা সর্বোত্তমভাবে করার। এখন মূল দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য আমি ক্ষুধার্ত হয়ে আছি। এখানকার মতোই আমার লক্ষ্য ছক্কা ও সেঞ্চুরি হাঁকানো। সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে খেলার সময় হাঁটুর চোটের জন্য আমাকে দুটি ইঞ্জেকশন নিয়ে খেলতে হয়েছিল। পরে আবার ছিটকে গিয়েছিলাম। তখনকার অনুভূতিটা খুব খারাপ ছিল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচগুলো দেখছিলাম। কিন্তু আমার কিছুই করার ছিল না।’
×