ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রেলে ঈদযাত্রা আজ শুরু, সড়কপথেও ভিড় বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ৩১ মে ২০১৯

 রেলে ঈদযাত্রা আজ শুরু, সড়কপথেও ভিড় বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রেলপথে ঈদযাত্রা শুরু হচ্ছে আজ শুক্রবার থেকে। এ বছর ঢাকার কমলাপুরসহ পাঁচ স্থান হতে ২২ মে থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি করে রেল কর্তৃপক্ষ। প্রথম দিন ৩১ মের টিকেট দেয়া হয়। পর্যায়ক্রমে ২৬ মে পর্যন্ত চার জুনের অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করেন যাত্রীরা। এ বছর জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ চারটি টিকেট সংগ্রহ করতে পেরেছেন। যারা প্রথম দিনের ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করেছিলেন তারা নাড়ির টানে বাড়ি যেতে প্রস্তুত। প্রস্তুত রেল কর্তৃপক্ষও। এদিকে সড়কপথেও শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা। পাঁচ জুন ঈদ ধরে ১৭ মে থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ চার বিভাগের অগ্রিম বাসের টিকেট বিক্রি শুরু হয়। প্রথম দিন বিক্রি হয় ২৯ মে’র টিকেট। পর্যায়ক্রমে চার জুন পর্যন্ত টিকেট বিক্রি করে অন্তত ২৫ নামীদামী বাস কোম্পানি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নগরীর শ্যামলী থেকে গাবতলী পর্যন্ত বিভিন্ন বাস কাউন্টারে ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। তবে যাত্রীদের মধ্যে বেশিরভাগেই নারী ও শিশু। শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারের যাত্রী নিশু জানালেন, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দিনাজপুরের বিরল গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। বাবা ব্যাংকে চাকরি করেন। তাই একসঙ্গে যাওয়া হচ্ছে না। ছুটি শুরুর পর তিনি আসবেন। খুলনার যাত্রী সদ্য জানালেন, বাসের টিকেট পেতে অনেক ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। এবার নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারলেই শান্তি। গাইবান্ধার যাত্রী আসাদ বললেন, বেশি টাকা দিয়ে টিকেট কিনতে হয়েছে। সঙ্গে ভোগান্তি তো ছিলই। বছরে একবার বাড়ি যাই। তাই ভোগান্তির বিষয়গুলো মেনে নেয়া ছাড়া কি করার আছে। ঈদ উপলক্ষে আনুষ্ঠানিক ট্রেন সার্ভিস শুক্রবার থেকে শুরু হলেও বৃহস্পতিবার কমলাপুরে যাত্রী চাপ বেশ লক্ষ্য করা গেছে। প্রায় প্রতিটি ট্রেনেই ছিল বেশ ভিড়। যারা আগে ভাগে ছুটি পেয়েছেন তাদের আর ডানে-বামে তাকানোর সুযোগ নেই। চোখ বন্ধ করে একদম বাড়ির পথে। আর চাকরি নিয়ে যারা ছুটির বিড়ম্বনায় আছেন তারা পরিবারের সদস্যদের ভোগান্তি কমাতে একটু আগেই প্রিয়জনদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বছর মোট টিকেটের ৫০ ভাগ বরাদ্দ ছিল অনলাইনে। অর্থাৎ রেলওয়ের করা নতুন এ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই টিকেট কাটার সুযোগ নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। বাকি ৫০ ভাগ টিকেট পাওয়া যায় কাউন্টারে। এর মধ্যে পাঁচ ভাগ ভিআইপি কোটা, আরও পাঁচ ভাগ বরাদ্দ রাখা হয় রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য। তবে ট্রেনের টিকেট বিক্রির শুরু থেকে শেষ অবধি অনলাইনে টিকেট না পাওয়ার অভিযোগ করেন যাত্রীরা। আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ২২ থেকে ২৬ মে পর্যন্ত পাঁচদিন ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি হয়। ঈদ পরবর্তী ট্রেনের ফিরতি টিকেট বিক্রি ২৯ মে থেকে শুরু হয়ে চলবে দুই জুন পর্যন্ত। ৯৫টি আন্তঃনগর ট্রেনের প্রতিদিন বিক্রি হয় প্রায় ৭০ হাজার টিকেট। এবারের ঈদ যাত্রায় আট জোড়া স্পেশাল ট্রেন যুক্ত হয়েছে। এছাড়া গাজীপুরের জয়দেবপুর রেল স্টেশন থেকেও অগ্রিম টিকেট বিক্রি হয়। অগ্রিম ফিরতি টিকেটের ক্ষেত্রে ২৯ মে ৭ জুনের, ৩০ মে ৮ জুনের, ৩১ মে ৯ জুনের, ১ জুন ১০ জুনের এবং ২ জুন ১১ জুনের টিকেট বিক্রি করা হবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টিকেট বিক্রি কার্যক্রম চলবে। কমলাপুর থেকেই ওঠা যাবে ॥ পাঁচ স্থান থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি হলেও কমলাপুর রেল স্টেশন থেকেই সকল গন্তব্যের যাত্রীরা ট্রেনে উঠতে পারবেন। রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ঈদের প্রায় পাঁচদিন আগে ৩১ মে থেকে রেলওয়েতে ট্রেনের কোন ডে-অফ থাকবে না। ফলে ৪৮টি বিশেষ ট্রিপ পরিচালিত হবে। এ বছর কমলাপুর থেকে সমগ্র পশ্চিমাঞ্চলগামী ট্রেনের টিকেট, বিমানবন্দর স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট, তেজগাঁও স্টেশন থেকে ময়মনসিংহ ও জামালপুরগামী ট্রেনের টিকেট, বনানী থেকে নেত্রকোনাগামী মোহনগঞ্জ ও হাওড় এক্সপ্রেসের টিকেট এবং ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন) থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বিক্রি হয়। আট জোড়া স্পেশাল ট্রেন ॥ রেলওয়ের কর্তাব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন রুটে আট জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলবে। ঢাকা দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটে এক জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলবে। চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে দুই জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলবে। কলকাতা-খুলনার বন্ধন ট্রেন স্পেশাল হিসেবে চলবে খুলনা-ঢাকা-খুলনা রুটে। এছাড়া ঢাকা-ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটে একটি, লালমনিরহাট-ঢাকা-লালমনিরহাট রুটে একটি, শোলাকিয়া স্পেশাল-১ ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার রুটে ঈদের দিন, শোলাকিয়া স্পেশাল-২ ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে ঈদের দিন স্পেশাল ট্রেন হিসেবে চলবে।
×