ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

হোল্ডিং ট্রাক্স পুনঃপর্যালোচনায় মেয়রের বাড়িতেই মাপ-জোক

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ৩০ মে ২০১৯

  হোল্ডিং ট্রাক্স পুনঃপর্যালোচনায় মেয়রের বাড়িতেই মাপ-জোক

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ হোল্ডিং ট্রাক্স পুনঃপর্যালোচনার জন্য বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বাসস্থান মাপ-জোক করা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের কর ধার্য শাখার কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কালিবাড়ি রোডের ৫০৫ নম্বর হোল্ডিং এর বাড়িটি নতুন করে মাপঝোপ করা হয়। এরআগে মাপঝোপ করার জন্য মালিকপক্ষকে লিখিত নোটিশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মাপঝোপের সময় সিটি কপোরেশনের কর্মকর্তাদের সার্বিক সহায়তায় বাড়ির মালিক পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল, ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী নঈমুল হোসেন লিটু। মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বর্তমানে যে বাড়িটিতে বসবাস করছেন সেই বাড়িটির হোল্ডিং তার দাদা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বোন জামাতা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের নামে রয়েছে বলে জানিয়েছে কর ধার্য শাখার কর নির্ধারক বেলায়েত হোসেন বাবলু। মেয়রের আবেদনের প্রেক্ষিতে হোল্ডিং ট্রাক্স বিষয়ক মাপঝোপ ও তথ্যাদি পুণঃপর্যালোচনা করা হচ্ছে জানিয়ে বেলায়েত হোসেন আরও বলেন, মূলত বর্তমানে নতুন স্থাপনা এবং স্থাপনা পরিবর্তন অর্থাৎ তিন থেকে চার তলা কিংবা টিনের ঘর থেকে ভবন হয়েছে এমন ভবনে পুণঃপর্যালোচনার কাজ চলমান রয়েছে। পাশাপাশি বিগত দিনের মাপঝোপে কারও আপত্তি থাকলে তাও দেখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে এ বিষয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী নঈমুল হোসেন লিটু বলেন, বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ কর্পোরেশনের দায়িত্ব নেয়ার আগে এটি একটি দেউলিয়া প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছিলো। তবে তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর দেউলিয়া হওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে নানা অনিয়ম পান। যারমধ্যে হোল্ডিং ট্যাক্সের বিষয়টি অন্যতম। তিনি আরও বলেন, হোল্ডিং ট্যাক্সের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় যাদের বছরে এক লাখ টাকা ট্যাক্স দেয়ার কথা তারা দিচ্ছে মাত্র ১০ হাজার টাকা। আবার যারা সমাজের বিত্তবান তারা নামেমাত্র ট্যাক্স দিলেও যাদের লবিং তৎবিরের ক্ষমতা নেই অর্থাৎ সাধারণ মানুষ তারা দিচ্ছে ক্ষমতাবানদের থেকে অনেক বেশি। এটি সামনে আসার পর থেকে মেয়র ট্যাক্সের বিষয়ে বৈষম্য দূর করে সমতা আনার কাজ শুরু করেন। প্রথমপর্যায়ে যারা নতুন স্থাপনা উঠিয়ে কিংবা স্থাপনা পরিবর্তন করেও ফাঁকি ঝুকি দিচ্ছিলো তাদের ট্যাক্সের আওতায় আনার কার্যক্রমও চলছে। তবে নগরীতে নতুন করে কারও ট্যাক্স বাড়ানো হয়নি। ২০১৬ সালে সাবেক পরিষদের অনুমোদন দেয়া নির্ধারিত ট্যাক্সের রেট অনুসারেই কার্যক্রম চলছে। আর এরমধ্য দিয়েই সিটি কর্পোরেশেনের আয়-ব্যায়ের ব্যবধান ঘোচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কাউন্সিলর বলেন, পুনঃপর্যালোচনার মাধ্যমে মেয়র যে বাড়িতে বসবাস করেন, তার পুরোটারই (নতুন-পুরাতন স্থাপনাসহ) মাপঝোপ নতুন করে নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাড়িটি বাণিজ্যিক নাকি আবাসিক সেটি খতিয়ে দেখা হয়েছে এবং বাড়ির মালিকরা এখানে বসবাস করেন কিনা সেবিষয়টিও দেখা হয়েছে। এদিকে মেয়রের বাড়ি পুনপর্যালোচনার মধ্যদিয়ে ট্যাক্সে চলমান বৈষম্য দূর করে সমতা আনার কার্যক্রম আরও বেগবান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সচেতন নগরবাসী। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ব্যক্তি মালিকানা ৫১ হাজার ৮৯২টি হোল্ডিং রয়েছে এবং ৫৭০টি সরকারী হোল্ডিং রয়েছে। যারমধ্যে যাচাই-বাছাই করে পাঁচ হাজার চারশ’ হোল্ডিং নম্বরে নতুন স্থাপনা নয়তো স্থাপনা পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে সিটি কর্পোরেশন। যাদের হোল্ডিং ট্যাক্স নতুন করে নয়তো পুনপর্যালোচনা করে নির্ধারণ করা হচ্ছে।
×