ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উদ্বোধনী ম্যাচে আজ মুখোমুখি ইংল্যান্ড-দঃ আফ্রিকা

প্রকাশিত: ১০:১৪, ৩০ মে ২০১৯

 উদ্বোধনী ম্যাচে আজ মুখোমুখি ইংল্যান্ড-দঃ আফ্রিকা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফুটবলের জন্ম ইউরোপ না চীনে এ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও ক্রিকেটের জন্ম যে ইংল্যান্ডে সে বিষয়ে খুব একটা দ্বিমত নেই। এলিট শ্রেণীর খেলা হিসেবে সৌখিন বৃটিশরাই বিশ্বব্যাপী এটিকে ছড়িয়ে দিয়েছিল। অথচ দীর্ঘ ৪৪ বছরে একবাও শিরোপা জেতা হয়নি। এর মধ্যে চারবারের আয়োজক ছিল তারা, এবার নিয়ে পঞ্চমবার। বিষয়টা বিশেষভাবে আলোচিত, কারণ এবারের মতো এত ফেবারিট হিসেবে বোধহয় আগে কখনও বিশ্বকাপে নামেনি তারা। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বরে ইয়ন মরগানের দল। কেনিংটন ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচ দিয়ে আজ প্রত্যাশার পারদ ছড়ানো আসরে মিশন শুরু করতে যাচ্ছে স্বাগতিক ইংলিশরা। ব্যাটিংয়ে জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জস বাটলার, জো রুট, বোলিংয়ে ক্রিস ওকস, জোফরা আর্চার, আদিল রশিদ, অলরাউন্ড পজিশনে বেন স্টোকস, মঈন আলী- দুর্ধর্ষ লাইনআপ আসলেই কতটা দুর্ধর্ষ তার পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে আজ থেকে। প্রতিপক্ষ হিসেবে প্রোটিয়ারাও সবসময় শক্তিশালী। দলটির নেতৃত্বে এবার ফ্যাফ ডুপ্লেসিস। খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে তিনটায়। ওয়ানডেতে ইংল্যান্ড কতটা দুর্ধর্ষ ছোট কয়েকটি পরিসংখ্যানেই সেটি পরিষ্কার। ২০১৫ সালে সর্বশেষ বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেয়া দলটি এবার ঘরের মাটিতে খেলতে নামছে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের ‘এক নম্বরে’ থেকে। এ সময়ে গড়ে তাদের দলীয় সংগ্রহ ৩৩০-৩৫০। আগে ব্যাটিং করে যেমন ৩৫০ রান করছে, চেজ করতে গিয়েও পিছিয়ে নেই। বলতে গেলে ব্যাট হাতে একঝাঁক পাওয়ার হিটার নিয়ে গড়া ইংলিশ শিবির। জেসন রয়, জস বাটলার, ইয়ন মরগান প্রত্যেকে যে যার জায়গায় অনন্য। আছেন স্টাইলিশ জো রুট। সবচেয়ে বড় কথা সাত থেকে নয় নম্বর পজিশনে নামা মঈন আলী, ক্রিস ওকসও ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে সক্ষম। সঙ্গে খ্যাপাটে বেন স্টোকস আর দুই তরুণ জোফরা আর্চার এবং টম কুরান। আইপিএলে বল হাতে ঝড় তুলে শেষ মুহূর্তে চূড়ান্ত দলে জায়গা করে নেয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ বশোদ্ভূত আর্চার বিশেষভাবে আলোচিত। পেস বোলিংয়ের সেনসেশন হয়ে উঠতে পারেন কৃষ্ণাঙ্গ এই তারকা। আছেন টম কুরান। অফস্পিনার মঈন আলী ও লেগস্পিনার আদিল রশীদকে নিয়ে স্পিন আক্রমণও বৈচিত্র্যপূর্ণ। অন্যদিকে ফ্যাফ ডুপ্লেসিসের নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা এবার কেমন করে সেটি দেখার অপেক্ষা। কারণ যাকে ঘিরে প্রোটিয়াদের পরিকল্পনা ছিল সেই এবি ডি ভিলিয়ার্স অবসর নিয়েছেন। বেশ কিছুদিন ফর্মে নেই হাসিম আমলা। যদিও প্রস্তুতি ম্যাচে একটি ভাল ইনিংস খেলেছেন তিনি। ব্যাটিংয়ে অধিনায়ক ফ্যাফকে বড় দায়িত্ব নিতে হবে। সঙ্গী হিসেবে তিনি পাবেন ইনফর্ম কুইন্টন ডি কক আর হার্ডহিটার ডেভিড মিলার ও জেপি ডুমিনিকে। তবে কাগিসো রাবাদা, এ্যান্দিলে ফেকুওইয়ো, লুঙ্গি এনগিদি, ক্রিস মরিচ, ডেল স্টেইনকে নিয়ে পেস আক্রমণ সত্যি দুর্দান্ত। অবশ্য ইনজুরির কারণে তারা শুরুতেই পাচ্ছে না অভিজ্ঞ স্টেইনকে। স্পিনে ইমরান তাহির বিশ্বসেরাদের একজন। দু’জনেরই এটি শেষ বিশ্বকাপ। এরপর আর ওয়ানডে খেলবেন না তারা। কেনিংটন ওভালের পিচ ও কন্ডিশন নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ ওতিশ গিবসন বলেন, ‘আমরা ওভালের পিচ দেখেছি। কিছুটা ঘাস আছে। আমার মনে হয় এগুলো বেশ পরিবর্তন হবে। এই মুহূর্তে আমাদের দলে তিনজন অলরাউন্ডার রয়েছে (মরিস, এ্যান্দিলে ও ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস)। আমাদের শামসিও রয়েছে। কালকে (আজ) যখন আমরা আবার এখানে আসব, তখন অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেব।’ গিবসন আরও যোগ করেন, ‘আমাদের ভাল বোলিং আক্রমণ রয়েছে। সেটা নিয়ে আমরা বেশ খুশি। পিচে যদি কিছুটা পেস ধরে এবং বাউন্স পাওয়া যায় তাহলে আমরা সুবিধা পাব। দক্ষিণ আফ্রিকায় এমন উইকেটেই খেলে অভ্যস্ত আমরা। সুতরাং এটা আমাদের ব্যাটসম্যানদের জন্য খুব একটা সমস্যা হবে না। আর বোলারদের জন্য এমন কন্ডিশন হতে পারে দারুণ অভ্যর্থনার।’ আগেই উল্লেখ করা হয়েছে ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে ইংল্যান্ড এক নম্বরে, প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা রয়েছে তিন নম্বরে। ১৯৯২ থেকে এ পর্যন্ত দু’দল মোট ৫৯টি ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়। যেখানে ইংল্যান্ডের জয় ২৬ আর প্রোটিয়াদের ২৯টিতে। ১টি টাই, ২টি পরিত্যক্ত। আর বিশ্বকাপে মোট ৬ দেখায় জয়-পরাজয় সমান ৩টি করে। ২০১৫ বিশ্বকাপে দু’দল মুখোমুখি হয়নি। সর্বশেষ ২০১১ বিশ্বকাপে চেন্নাইয়ে ৬ রানের নাটকীয় জয় পেয়েছিল ইংলিশরা। শুধু তাই নয়, প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ তিন ম্যাচেই টানা জয় ইংল্যান্ডের। বোঝাই যাচ্ছে আত্মবিশ্বাসী মরগানবাহিনী এবারও এগিয়ে থাকছে। তবে খেলাটা যেহেতু ক্রিকেট, দেখার অপেক্ষায় থাকতেই হচ্ছে।
×