ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

টোকিওতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

জাপানকে মডেল ধরে বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে যাবে

প্রকাশিত: ১২:৩৯, ২৯ মে ২০১৯

জাপানকে মডেল ধরে বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে যাবে

বিডিনিউজ ॥ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি থেকে জাপান যেভাবে শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হয়েছে, তাকে ‘মডেল’ হিসেবে নিয়ে বাংলাদেশকেও উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার বিকেলে টোকিওর একটি হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বলতেন, জাপানের অর্থনীতি মূলত ছিল কৃষিভিত্তিক। এই কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি থেকেই কিন্তু জাপান একটা শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হয় এবং একসময় বিশ্বের সব থেকে শক্তিশালী শিল্পোন্নত দেশ হিসেবে জাপান প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল।’ তিনি বলতেন, ‘আমাদের যেমন কৃষি রাখতে হবে, একই সঙ্গে আমরা দেশকে শিল্পোন্নত করব, ঠিক জাপান যেভাবে করেছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান আমাদের কাছে একটা মডেল। জাপানের উন্নয়নকে মডেল হিসেবেই আমরা মনে করি। জাপান আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। জাপানে আমাদের রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চমৎকার সম্পর্ক। ‘দ্য ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার বিকেলে টোকিও পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার এ সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি এশিয়ার সম্ভাবনা ও উত্থান নিয়ে নিজের ভাবনার কথা তুলে ধরবেন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের রাজনীতিক, অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও তাত্ত্বিকদের সামনে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ছাড়াও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন এবং ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে অংশ নেবেন এ সম্মেলনে। শেখ হাসিনা এ সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন; তাদের উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে আড়াই বিলিয়ন ডলারের একটি ঋণ চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। মহেশখালীর মাতারবাড়ি, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারসহ দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় জাপানী বিনিয়োগের কথা এ সময় প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন। পাশাপাশি অতীতে বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পে জাপানী বিনিয়োগের কথাও তিনি বলেন। প্রতিবার সরকারে আসার পর নিজের জাপান সফরের কথাও অনুষ্ঠানে বলেন প্রধানমন্ত্রী। তার সরকারের সময়ে বিভিন্ন খাতে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আমাদের দেশে কাজ করলেই টাকা। কেউ যদি একটু কষ্ট করে কাজ করতে চায়, তাহলে কিন্তু সে অর্থ উপার্জন করতে পারে। সেই সুযোগটা আমরা সৃষ্টি করেছি। এবং এই সুযোগটা আরও হবে। দেশে আমরা ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। সেখানে বিনিয়োগ হবে, কর্মসংস্থান হবে, উৎপাদন বাড়বে, মানুষের জীবনমান উন্নত হবে। আমরা সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করছি।’ জিডিপি বৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ডিজটাল খাতের উন্নয়নের বিস্তারিত চিত্র প্রধানমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন। প্রবাসীদের বিশ্বে সম্মান নিয়ে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা কাজ নিয়ে বিদেশে যেতে চায়, তাদের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করা এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জমিজমা বিক্রি না করে ওই প্রবাসী ব্যাংক থেকেও টাকা নিতে পারবে।’ দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদানের কথাও এ অনুষ্ঠানে স্মরণ করেন সরকারপ্রধান। জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতেমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বক্তব্য দেন।
×