ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কার্ডিফে রাহুল-ধোনির ঝড়ো সেঞ্চুরি

প্রকাশিত: ১১:৫৯, ২৯ মে ২০১৯

কার্ডিফে রাহুল-ধোনির ঝড়ো সেঞ্চুরি

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ভিনদেশে পয়মন্ত ভেন্যু, শতভাগ জয় নিয়ে কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্স ছাড়ার অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশ দলের। অবশ্য মাত্র দুই ম্যাচ জেতার সেই সুখস্মৃতি নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার মুখোমুখি হয় টাইগাররা। যদিও প্রস্তুতি ম্যাচ, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পাবে না, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দু’দল পরস্পরের চরম প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠাতে এটি নিয়ে বেশ উত্তাপ ছড়িয়েছে। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশী বোলারদের দাপুটে বোলিংয়ে প্রথম থেকেই চাপের মুখে ছিল ভারত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লোকেশ রাহুল ও মহেন্দ্র সিং ধোনির বিস্ফোরক জোড়া সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩৫৯ রান তোলে ভারত। কার্ডিফে এর আগে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ, টস হেরেছিল দুইবারই। তবে মঙ্গলবার টস জিতেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। আগের দুই ম্যাচ পরে ব্যাট করে জেতার কারণে তাই ফিল্ডিং নিয়েছেন মাশরাফি। তার সেই সিদ্ধান্ত ফলপ্রসূ হয়েছে শুরুতেই মুস্তাফিজুর রহমান আঘাত হানায়। মাশরাফি ও মুস্তাফিজ চেপে ধরেছিলেন রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানকে। রান করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন তারা। ওই চাপের মুখে মুস্তাফিজের বলে তৃতীয় ওভারে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন ধাওয়ান (১)। রুবেল হোসেনও দ্রুতই ফিরিয়ে দেন ধীরস্থির রোহিতকে (১৯) বোল্ড করে। এরপর অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও ওপেনার হয়েও চার নম্বরে নেমে লোকেশ রাহুল দারুণ ব্যাটিং করছিলেন। ৪৬ বলে ৫ চারে ৪৭ রান করা কোহলি মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে বোল্ড হয়ে যান। বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি এরপর বিজয় শঙ্কর। তিনি রুবেলের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ২ রানে সাজঘরে ফিরেন। দলীয় ১০২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বেশ বিপদেই পড়েছিল ভারত। ততক্ষণে ২২ ওভার শেষ। রানের গতি অনুসারে তখন মনে হচ্ছিল খুব বেশিদূর যেতে পারবে না কোহলির দল। শুরুটা তেমন সুবিধার না হলেও রাহুলের সঙ্গে ৬ নম্বরে নেমে দারুণ এক জুটি গড়েন। অনুশীলন ম্যাচ হওয়াতে বোলিং প্র্যাকটিসের সুযোগটা পুরোপুরিই কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ দল। ৯ জনকে বোলিং করিয়েছে। পেসাররা সুবিধা করলেও শুধু আবু জায়েদ রাহী ২ ওভারে ২০ রান দেন। সে জন্যই স্পিনারদের বোলিংয়ে আনেন মাশরাফি। তবে সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ একেবারেই সুবিধা করতে পারেননি। তারা বেধড়ক পিটুনি খেয়েছেন। পঞ্চম উইকেটে রাহুল-ধোনি ১৬৪ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়েন মাত্র ২১.২ ওভারে। আর তাতেই তিন শ’ পেরিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থানে চলে যায় ভারতীয় দল। রাহুল এগিয়ে যেতে থাকেন আরেকটি শতকের দিকে। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের কাঁধে সমস্যা থাকায় বোলিংয়ে আসেননি। শেষ পর্যন্ত রাহুল সেঞ্চুরি পেয়ে যান। তাকে সাজঘরে ফেরান অনিয়মিত লেগস্পিনার সাব্বির রহমান। রাহুল ৯৯ বলে ১২ চার, ৪ ছক্কায় ১০৮ রান করেছিলেন। রাহুল সাজঘরে ফিরে যাওয়ার পর ব্যাট হাতে বিধ্বংসী রূপ নেন ধোনি। সে কারণে মুস্তাফিজ প্রথম ৫ ওভারে ১৯ রান দিলেও পরের ৩ ওভারে আরও ২৪ রান খরচা করেন। রুবেলও ৮ ওভারে ৬২ রান দিয়েছেন। মোসাদ্দেক ৩ ওভারে ৩২, মিরাজ ৫ ওভারে ৪০ রান দেন। ফিরতি স্পেলে বোলিং করতে আসেন রাহী ইনিংসের ৪৯তম ওভারে। তার দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ৯৯ থেকে শতক পেরিয়ে যান ধোনি। মাত্র ৭৩ বলে শতরান পূর্ণ করেন তিনি। মাঝে হার্দিক পা-িয়া নেমে ১১ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ২১ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত শেষ ওভারে সাকিবের বলে সাজঘরে ফেরেন ধোনি ৭৮ বলে ৮ চার, ৭ ছক্কায় ১১৩ রান করেন। মাশরাফি ৬ ওভারে দুই মেডেনে ২৩ ও সাইফউদ্দিন ৬ ওভারে ১ মেডেনে ২৭ রান দিলেও আর বোলিংয়ে আসেননি অন্যদের বোলিং অনুশীলনের সুযোগ করে দিতে। আর সে সুযোগে স্কোয়াডে থাকা সব ব্যাটসম্যানকেই কাজে লাগিয়েছে ভারত এবং রানও তুলেছে মন খুলে ব্যাট চালিয়ে। ৭ উইকেটে ৩৫৯ রান তোলে তারা। সাকিব ৬ ওভারে ৫৮ রানে ২টি ও রুবেল ৮ ওভারে ৬২ রানে ২টি করে উইকেট নেন।
×