ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এবার বর্ষা আগেই শুরু হবে, মৌসুমি বায়ু ঢুকবে ১ জুন

প্রকাশিত: ১১:২৩, ২৯ মে ২০১৯

এবার বর্ষা আগেই শুরু হবে, মৌসুমি বায়ু ঢুকবে ১ জুন

শাহীন রহমান ॥ এবার বর্ষা (মৌসুমি বায়ু) আগেই দেশে প্রবেশ করছে। এটি বর্তমানে আন্দমান দ্বীপুঞ্জের কাছাকাছি অবস্থান করছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে আগামী জুনের ১ তারিখ থেকেই মৌসুমি বায়ু দেশে প্রবেশ করতে পারে। এর প্রভাবে জুনের প্রথম থেকেই বৃষ্টিপাত হতে পারে। মৌসুমি বায়ুই মূলত দেশে বর্ষা নিয়ে আসে। এর প্রভাবেই সারাদেশে বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত হয়। আষাঢ় শ্রাবণে বৃষ্টিপাতের আধিক্য দেখা দেয়। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে মৌসুমি বায়ু ৩০ মে নাগাদ এটি বাংলাদেশ উপকূলে আসতে পারে। পরবর্তীতে সারাদেশে বিস্তার লাভ করবে। আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, আশা করা হচ্ছে দু’তিন দিনের মধ্যে মৌসুমি বায়ু দেশে প্রবেশ করবে। অন্য বছরে সাধারণত একটু দেরিতে মৌসুমি বায়ু এলেও এবারে এর গতিপ্রবাহ বেশ সক্রিয়। ফলে জুনের ১ তারিখ থেকে এটি দেশে প্রবেশ করবে। এর প্রভাবে জুনের শুরু থেকেই বৃষ্টিপাত হতে পারে। আহাওয়া অফিস জানিয়েছে মৌসুমি বায়ু গত শনিবারের আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করেছে। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মৌসুমি বায়ু অপেক্ষা করছে আন্দামান সাগর এবং তার সংলগ্ন অঞ্চলে। আগামী দু’দিনের মধ্যেই মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়ে উঠবে। ইতোমধ্যেই দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় ভারতীয় রাজ্য অসম মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মনিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরায় ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছে এটি বাংলাদেশের প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে বেশ সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। তখন প্রচুর বৃষ্টিপাত ঝরাতে পারে। এবার প্রচ- গরম উপেক্ষা করে রোজাদাররা রোজাব্রত পালন করছেন। পুরো রমজানে বলতে গেলে গরমের হাত থেকে স্বস্তি মিলেছে কমই। গরম উপেক্ষা করেই চলছে ঈদ কেনাকাটা। তবে আবহাওয়ার অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী এখন প্রচ- গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হলেও ঈদ যাত্রায় স্বস্তি হিসেবে আসতে পারে মৌসুমি বৃষ্টিপাত। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এর মধ্যেই গতি পেয়েছে। আন্দামান সাগর, নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং সন্নিহিত বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে এ বায়ু। এখান থেকে দু’ভাগে বিভক্ত হওয়ার পর দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর একটি অংশ আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বৃষ্টি নামিয়ে বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজার দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রিক এ শাখা এখন আন্দামান হয়ে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন উপকূল ধরে এগোচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আরেকটি অংশ এ সপ্তাহেই ভারত সাগরের উপকূল ধরে কেরলে প্রবেশ করবে। এর প্রভাবে অসম, মেঘালয় এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে প্রচুর বৃষ্টি হবে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন মৌসুমি বায়ু মূলত দক্ষিণ এশিয়া এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলবায়ুতে সর্বাপেক্ষা প্রভাব সৃষ্টিকারী বায়ু প্রবাহ। গ্রীষ্ম ও শীত মৌসুমে সমুদ্র ও ভূপৃষ্ঠের উত্তাপ এবং শীতলতার তারতম্যের ফলে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মৌসুমি বায়ুর দিক পরিবর্তন হয়। শীত মৌসুমে শুষ্ক মৌসুমি বায়ু দেশের উত্তর-পূর্ব দিক থেকে সমুদ্র অভিমুখে প্রবাহিত হয়। গ্রীষ্মকালে মৌসুম বায়ু দক্ষিণ-পশ্চিম সমুদ্রভাগ থেকে ভূমি অভিমুখে প্রবাহিত হয়। মৌসুমি বায়ুর ইংরেজী প্রতিশব্দ মনসুন মূলত আরবি শব্দ মওসিম থেকে এসেছে। আরবিতে মওসিম শব্দের অর্থ হলো কাল বা ঋতু। ধারণা করা হয় এই মৌসুমি বায়ু চক্রটির সূত্রপাত ঘটে ১ কোটি ২০ লাখ বছর পূর্বে হিমালয় পর্বত সৃষ্টির সময় থেকেই।
×