ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশের ওপর হামলা

প্রকাশিত: ০৯:০৭, ২৯ মে ২০১৯

পুলিশের ওপর হামলা

আবারও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ের খুব কাছেই এ হামলার ঘটনা কিসের ইঙ্গিতবহ? রবিবার রাতে রাজধানীর মালিবাগ মোড়ে পুলিশের গাড়িতে শক্তিশালী ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পুলিশের ভাষ্য, বোমাটি আগে থেকেই গাড়িতে রাখা ছিল। স্বস্তির কথা যে, এই হামলায় কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। একজন নারী পুলিশ সদস্য এবং রিক্সাচালক ও একজন পথচারী আহত হন। পুলিশের গাড়িটিই বেশি ক্ষত্রিগ্রস্ত হয়েছে। গাড়িটিতে গ্যাস সিলিন্ডার থাকলে কী ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটত ভাবতেও শিউরে উঠতে হয়। স্মরণযোগ্য যে, কিছুকাল আগে গুলিস্তানের কাছে অনুরূপভাবে পুলিশের ওপর হামলা চালাানো হয়। ওই হামলার পেছনে কারা ছিল সে রহস্য পুরোপুরি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আইএস ওই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে নেয়। ওই সময়েই আইএসের গতিবিধি বিশ্লেষক রিটা কাটজ এক টুইটে লিখেছিলেন, গত দুই বছরে এই প্রথম জঙ্গী সংগঠনটি বাংলাদেশে হামলা চালানোর দাবি করল। আইএসের বক্তব্য দাবি করে এর একটি স্ক্রিনশটও রিটা কাটজ টুইটারে দিয়েছিলেন। সঙ্গত কারণেই মালিবাগের হামলার পেছনে আইএসের হাত রয়েছে কিনা সে ব্যাপারে প্রশ্ন উঠতে পারে। আরও অনুসন্ধানে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠবে। তবে আইএস ইতোমধ্যে দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে পুলিশের ওপর হামলার ব্যাপারে আইএসের ধারাবাহিক পরিকল্পনা রয়েছে কিনাÑ সেটিও এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিেেছ। হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলার পর থেকে বাংলাদেশ সরকার দেশে জঙ্গী দমনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে। এই সফল তৎপরতায় পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সাহসী ভূমিকা রাখে। এটি যে কোন সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্যই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। ইউরোপে আইএস একাধিকবার সফল হামলা চালালেও, এমনকি এশিয়ায় ফিলিপিন, শ্রীলঙ্কার মতো দেশে রক্তাক্ত অভিযান পরিচালনা করলেও বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত সুবিধা করে উঠতে পারেনি। পাঁচ বছর আগে সংসদ নির্বাচনের পর রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে একের পর এক নাশকতামূলক ঘটনা ঘটানো হয়েছে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে। সে সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মনোবল ভাঙ্গতে পুলিশের ওপর হামলাও করা হয়েছে। তখন জনমনে প্রশ্ন ছিলÑ একের পর এক হামলা ও হত্যা কারা করছে? চেকপোস্টে একের পর এক পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। সেই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটেছে। কিন্তু সম্প্রতি পর পর দুটি আক্রমণ থেকে স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করা যায় যে, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা থেকে এ ধরনের হামলা হয়ত সংঘটিত হচ্ছে। যারাই পুলিশের ওপর হামলা করুক না কেন, তারা অবশ্যই এই দেশের শত্রু, গণতন্ত্রের শত্রু। বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের ধারায় পূর্বেকার সকল অর্জনকে ছাপিয়ে যাচ্ছে, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়ে উঠছে এবং বাংলাদেশের নেতা বিশ্ব নেতার পর্যায়ে উন্নীত হয়ে গোটা বিশ্বের জন্যই ইতিবাচক সক্রিয় অবদান রাখার পথে অগ্রসর হচ্ছেনÑ সেই সুবর্ণ সময়ে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা ষড়যন্ত্রেরই নামান্তর। একে শক্ত হাতে অবশ্যই রুখতে হবে। মালিবাগের ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের অবশ্যই খুঁজে বের করে রহস্য উদ্ঘাটন করে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে।
×