ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে বিদ্যুতায়নের নামে চলছে খাম্বা বাণিজ্য

প্রকাশিত: ১০:১৪, ২৮ মে ২০১৯

 বাউফলে বিদ্যুতায়নের নামে চলছে খাম্বা  বাণিজ্য

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ২৭ মে ॥ বাউফলে বিদ্যুতায়নের নামে খাম্বা বাণিজ্য। বিভিন্ন ইউনিয়নে ২০-২৫ জন চিহ্নিত দালাল খাম্বা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। এরা খাম্বা স্থাপনের নামে নতুন গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। যারা টাকা দিতে পারছেন না, তাদের খাম্বা বসানো হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘরে ঘরে বিদ্যুত সংযোগের এ উদ্যোগকে নস্যাৎ করতে দালাল চক্র এ কাজ করছেন। জানা গেছে, বাউফলে প্রায় ৯০ ভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্য নিয়ে বর্তমানে ৩০টি প্যাকেজের মাধ্যমে ৩৬০ কিলোমিটার বিদ্যুতায়নের জন্য প্রায় সাড়ে ৬ হাজার খুঁটি স্থাপনের কাজ চলছে। কালাম সিকদার, কালাম মুন্সি, মাহাবুব মিয়া, রেজাউল করিম, মিলন মিয়া, সমির বাবু নামের কয়েকজন ঠিকাদার ওই কাজ করছেন। প্রতি প্যাকেজে প্রায় ৩০ লাখ টাকা হারে ৯ কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। এই বিদ্যুতায়নের কাজ করতে গিয়ে ছিদ্দিক, সেলিম ভূঁইয়া, আবু হানিফ, রিয়াজ উদ্দিন রিপন, লোকমান গাজী, ছালাম হাওলাদার, মিজানুর রহমান হিরণ, মোঃ হাফিজুর ডাক্তারসহ প্রায় ২০-২৫ জন দালাল কাজ করছে। ওই দালালরা প্রতি প্যাকেজের আবেদনকারী গ্রাহকদের কাছ থেকে একটি খাম্বার জন্য সর্বনিম্ন ৫ হাজার এবং দুই বা তিন খাম্বার জন্য ২৫ হাজার কিংবা তারও বেশি টাকা আদায় করে নিচ্ছেন। এভাবে বাউফলে লাখ লাখ টাকার খাম্বা বাণিজ্য চলছে। খাম্বা আনা এবং স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এবং অফিসকে ওই টাকা দিতে হবে বলে দালালরা গ্রাহকদের জানান। অথচ দরপত্রের মধ্যেই খাম্বা আনা এবং স্থাপনের খরচ ধরা রয়েছে। কেশবপুর ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী ইদ্রিছ মিয়ার কাছে তিনটি খাম্বার জন্য ৩৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। একই ইউনিয়নের বজলু মিয়ার কাছে একটি খাম্বার জন্য ১২ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। মেহেন্দীপুর বাজারের অরুন দাসের কাছে একটি খাম্বার জন্য ৮ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। আমির হোসেন কাজী নামের এক ব্যক্তির থেকে ২৫ হাজার, পারভেজের থেকে ৬ হাজার, আফজালের থেকে ৬ হাজার এবং সাইফুলের থেকে ৮ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে। এভাবে ওই ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক আবেদনকারী গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে এবং বাকি আবেদনকারীদের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। টাকা না দিলে তাদের খাম্বা নানা অজুহাতে স্থাপন করা হচ্ছে না। অপরদিকে, উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের আবেদনকারীদের থেকে দালালরা ইতোমধ্যেই কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকা সাধারণ মানুষ দালালদের বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না। পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুত সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) একে আজাদ জানান, দালালদের খবর তাদের কাছে থাকলেও মূল কাজটা ঠিকাদারের হওয়ায় তাদের কিছু করার নেই।
×