ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সময়ের সঙ্গে বাড়ছে ক্রেতা

প্রকাশিত: ১০:১৩, ২৮ মে ২০১৯

সময়ের সঙ্গে বাড়ছে ক্রেতা

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ জেলা শহরে ইতোমধ্যেই জমে উঠেছে ঈদ বাজার। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন বিপণিবিতানগুলোতে এখন চলছে কেনাকাটার ধুম। দোকানগুলো সেজেছে বাহারি ডিজাইনের দেশী-বিদেশী ব্র্যান্ডের পোশাকে। এবার এসব দোকানগুলোতে ভারতীয় পোশাকের পাশাপাশি দেশী নতুন নতুন বাহারি ডিজাইনের পোশাক আকৃষ্ট করেছে ক্রেতাদের। বিশেষ করে পুরান বাজারের একাধিক বিপণিবিতান, ডিসি মার্কেট, প্রধান শহরের নিউমার্কেট, শহীদ সাটু হল মার্কেট, ক্লাব সুপার মার্কেট, স্টেডিয়াম মার্কেটসহ বিভিন্ন দোকানে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে টেলারিং হাউস, সাধারণ কাপড়ের দোকান ও কসমেটিক দোকানে ভিড় বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে প্রিয়জনকে খুশি করতে কেনাকাটায় ব্যস্ত রয়েছেন ক্রেতারা। বিভিন্ন নামীদামী বিপণিবিতানে নারী ক্রেতাদের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রচ- গরমের কারণে সবাই খুঁজছে বিভিন্ন ডিজাইনের সুতি কাপড়। ভয়েল ও সুতি কাপড়ে এবার প্রাধান্য দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। এসব ডিজাইনে এসেছে নতুনত্ব। শহরের একাধিক বিপণিবিতান ঘুরে দেখা গেছে গরমে ব্যবহার উপযোগী আরামদায়ক কাপড়কে প্রাধান্য দিয়ে কেনাকাটা হচ্ছে। এসব পোশাকে দেশীয় সুতি কাপড়ের তৈরি এবং সুই সুতার বুননে নানা ধরনের কারুকাজ করা হয়েছে। বিভিন্ন ডিজাইনের থ্রি-পিস ও জিপসি রয়েছে। শহীদ সাটু মার্কেটের পেছনে এক দোকানদার কেবলাল হোসেন জানান, ঈদের কারণে তার দোকানে বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক আনা হয়েছে। তবে পাঞ্জাবির বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে বলেন, এবার যুবকেরা ডিজাইন করা পাঞ্জাবি বেশি কিনছে। শহরের অধিকাংশ শপিংমলে কেনাকাটা এবার এতটাই বেশি যে তারা হিমশিম খাচ্ছে ক্রেতা সামলাতে। ক্রেতারা জানান, ঈদ উপলক্ষে নতুন নতুন ডিজাইনের শাড়ি, সালেয়ার কামিজ, ফতুয়া ও পাঞ্জাবি কেনাবেচা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। তবে ঈদ আসতে আসতে বিভিন্ন দোকানে নতুন নতুন ডিজাইনের আরও সামগ্রী আসবে। বাড়বে আরও ভিড়। তবে এবার পোশাকের দাম কিছুটা বেশি হওয়ার কারণে সর্বত্র অসন্তোষ দেখেছি ক্রেতাদের মাঝে। এবার ঈদের কালেকশনে ভিন্নতা থাকলেও দাম নিয়ে দারুণ আপত্তি রয়েছে। তবে জুতা স্যান্ডেলের প্রায় ৪১টি দোকানে দারুণ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। জুতা স্যান্ডেলের দোকানেও বাড়ছে ভিড়। . কুড়িগ্রাম স্টাফ রিপোর্টার কুড়িগ্রাম থেকে জানান, সময় যত গড়িয়ে যাচ্ছে কুড়িগ্রাম শহরের বিভিন্ন বিপণিবিতানে ঈদের বাজার জমে উঠেছে। শহরের হক সুপার মার্কেট, কে আই সুপার মার্কেট, এন আর প্লাজা, সাগর সুপার মার্কেট, দবির প্লাজা, নছর উদ্দিন মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে দিন রাতে মানুষের স্রোত। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে কেনাকাটা। রোজার এক সপ্তাহ পর থেকে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। এখন চলছে প্রচন্ড ভিড়। দোকানিরা সময় পাচ্ছে না। বিক্রেতারা বলছে প্রথম দিকে বেচাকেনা কম দেখে মন খারাপ হয়েছিল। এখন দিন যত যাচ্ছে ততই বিক্রি বাড়ছে। শেষ সপ্তাহে আরও বাড়বে। শহরের বিভিন্ন বিপণিবিতান আর মার্কেটে ঘুরে দেখা গেছে মানুষ আর মানুষ। পুরুষের চেয়ে মহিলা ক্রেতাদের সংখ্যাই বেশি। শুধু শহরের নয় বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষ এসেছে ঈদের কেনাকাটা করতে। ঈদের কেনাকাটা করতে অনেকেই পরিবার নিয়ে এসেছে আবার অনেকে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে কেনাকাটা সারছে। পছন্দের কাপড় কিনতে তারা এক দোকান থেকে আর এক দোকান ছুটছে। গৃহবধূ শাহীনুর হক জানালেন সকাল থেকে কমপক্ষে ১০টি দোকান ঘুরেছি পছন্দের কাপড় পাচ্ছি না। দু একটি দোকানে পছন্দের কাপড় পেলেও দাম খুব বেশি। এবার ঈদে শিশুদের পোশাক আর পাঞ্জাবির দাম অনেক বেশি। . নীলফামারী স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী থেকে জানান, জেলা জুড়ে এবার ঈদের পোশাক বাজারে দখল করেছে মেয়েদের জন্য সারারা, বিজ কটন, পদ্মাবতী, থ্রিপিস গাউন, টাইটস, ফ্লোর টাচ, শর্ট ফ্রক ও লং ফ্রক। আর ছেলেদের জন্য সুলতান, বোম্বে, প্রিন্স ও হামসাফার নামের পাঞ্জাবি, পাজামা ও শার্ট। অপরদিকে মেয়েদের ফাগুন বউ শাড়ির চাহিদা নজর কেড়েছে। শিশুদের জন্য মিলছে লিটিল হাং, বাবা সেটসহ আজব বাহারি নামের তৈরি পোশাক। একেক দোকানে নারী, পুরুষ ও শিশুদের ফ্রক, স্কার্ট এবং প্যান্ট টপ্সের নামকরণ করা হয়েছে ভারতীয় চলচ্চিত্র ও সিরিয়াল বা ভারতের হামসাফার একটি ট্রেনের নামে। এসব পোশাকের চাহিদা কেমন তা যাচাই করতে গিয়ে বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই এই উদ্ভট নামধারী পোশাক কিনতে বেশ আগ্রহী। এটাকে কেউ কেউ ট্রেন্ড মনে করছেন। আবার অনেকের কাছে নামগুলো হাস্যকর। নীলফামারী শহরকেন্দ্রিক প্রতিটি বিপণিবিতান ঈদের বেচাকেনায় ক্রেতাদের ভিড়ে হিমশিম খাচ্ছে। তবে উঠতি বোরো ধানের দাম কম হওয়ায় গ্রামের ক্রেতাদের ভিড় কম বলে দোকানিরা মনে করছে। আজব বা বাহারি নামের তৈরি পোশাকের মধ্যে জামা বা থ্রি পিসের দাম বারো শ’ থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ পর্যন্ত যা বিক্রি তাতে মেয়েদের থ্রি পিস, শাড়ি ও গাউন। ছেলেদের পাঞ্জাবি, জিনস্ ও টি শার্ট। রবিবার জেলা শহরের হাজি মকবুল হোসেন সুপার মার্কেট, পৌর সুপার মার্কেট, জামান প্লাজা, খয়রাত হোসেন মার্কেট, এবাদত প্লাজা, বড় বাজার, মুরাদ আলী প্লাজার বিপণিবিতানগুলোয় শহরমুখী ক্রেতাদের ভিড়। হাজি মকবুল হোসেন সুপার মার্কেটের ফ্যাসন হাউস কালারস-এর মালিক সুলতানুর আবেদীন জানান, নিত্যনতুন নাম দেয়া হয় ক্রেতাদের আকর্ষণ করার জন্য। যখন যেই সিনেমা বা সিরিয়াল বেশি জনপ্রিয় থাকে তখন ওই নামের পোশাকটা বেশি চলে। কিসের ভিত্তিতে এই নাম? পোশাকের ধরনে তেমন কোন পরিবর্তন না দেখে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই নামগুলোর কোন ভিত্তি নেই। আমরাই নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী নাম দেই। যখন যেটা চলে তখন তেমন নাম। এই ধরনের পোশাকের চাহিদা স¤পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাহিদা ভালই। ঈদ উপলক্ষে মানুষ ভারতীয় ও পাকিস্তানী পোশাকের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে। অনেকে আবার ভারতীয় সুতির আনস্টিচ কামিজের দিকেও বেশ উৎসাহী। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এবার ঈদ বাজার শহরের ক্রেতারা আগাম কেনা শুরু করে। তবে গ্রামের ক্রেতা নেই বললেই চলে। আমরা ধারণা করছি এবার বোরো ধানের দাম কম হওয়ায় গ্রামের ক্রেতারা শহরে জামা-কাপড় কিনতে আসছে না। শহরের আনন্দ গার্মেন্টস, প্রেস হার্টে গিয়ে দেখা যায় এখানে ফ্লোর টাচ, গাউন, কোটিযুক্ত পোশাক, পাথর-জরির কাজ করা পোশাক ও কাতান কাপড়ের লেহাঙ্গা। তবে কোনটাতেই কোন নামকরণ করা হয়নি।
×