ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বেয়ার্নের দ্বি-মুকুট জয়

প্রকাশিত: ১০:৩৬, ২৭ মে ২০১৯

 বেয়ার্নের দ্বি-মুকুট জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আরও আগেই জার্মান বুন্দেসলিগার শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলে বেয়ার্ন মিউনিখ। এবার জার্মান কাপের শিরোপাও উঁচিয়ে ধরলেন তারা। পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডোস্কির জোড়া গোলে লিপজিগকে হারিয়ে জার্মান কাপের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে বেয়ার্ন। বার্লিনে শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ফাইনালে বেয়ার্ন মিউনিখ ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে নিকো কোভাচের দল। সেই সঙ্গে দুই মৌসুম পর আবারও ঘরোয়া ডাবল জয়ের নজির গড়ে জার্মান জায়ান্টরা। জার্মান কাপে এটা তাদের ১৯তম শিরোপা। তবে এদিন শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল লিপজিগ। কিন্তু চোট কাটিয়ে ফেরা গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নিউয়েরের নৈপুণ্যে ম্যাচের ১০ মিনিটে বেঁচে যায় বেয়ার্ন। ডেনমার্কের ফরোয়ার্ড ইউসুফ পৌলসেনের হেড ঝাঁপিয়ে রুখে দেন জার্মান গোলরক্ষক। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা লড়াইয়ের ২৮ মিনিটে প্রথম এগিয়ে যায় বেয়ার্ন। অস্ট্রিয়ান ডিফেন্ডার ডেভিড আলাবার ক্রসে হেডে জাল খুঁজে নেন লেভানডোস্কি। জার্মান বুন্দেসলিগায় এবারের মৌসুমে সর্বোচ্চ ২২ গোল করা এই পোলিশ স্ট্রাইকার এদিনও বেয়ার্নের ত্রাতার ভূমিকায়। লেভানডোস্কির করা গোলেই এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় তারা। দ্বিতীয়ার্ধেও ম্যাচে ফেরার সবধরণের চেষ্টা করে লিপজিগ। এবারও দারুণ দক্ষতায় নিজেদের জাল অক্ষত রাখেন নিউয়ের। তাকে একা পেয়ে সুইডেনের মিডফিল্ডার এমিল ফর্সবার্গের নেয়া শট রুখে দেন ৩৩ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক। তবে ৭৮ মিনিটে গোল ব্যবধান দ্বিগুণ করে বেয়ার্ন। গোলদাতা কিংসলে কোম্যান। ডান পায়ে বল নামিয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শটে প্রতিপক্ষের জালে পাঠান বেয়ার্নের এই ফরাসী মিডফিল্ডার। ম্যাচের বয়স যখন ৮৫ মিনিট তখন চিপ শটে গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে ৩-০ ব্যবধানের বড় জয় নিশ্চিত করেন লেভানডোস্কি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মৌসুমে এটা লেভানডোস্কির ৪০তম গোল। লিপজিগের বিপক্ষে ম্যাচের শেষের দিকে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে ফ্রাঙ্ক রিবেরি ও আরিয়েন রোবেনকে খেলার সুযোগ করে দেন বেয়ার্নের কোচ কোভাচ। এই মৌসুমের শেষেই যে বেয়ার্ন ছাড়ছেন দলের দুই অভিজ্ঞ তারকা। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে বেয়ার্নের জার্সিতে অসংখ্য শিরোপা জিতেছেন তারা। শেষটাও রাঙিয়ে নিলেন জার্মান কাপের শিরোপা উৎসবে। শুরুটা করেছিলেন ২০০৯ সালের ২৯ আগস্ট। এই দিনেই প্রথমবারের মতো বেয়ার্নের জার্সিতে এক সঙ্গে মাঠে নেমেছিলেন তারা। অবশেষে বেয়ার্নে অবসান ঘটতে যাচ্ছে রিবেরি-রোবেন অধ্যায়ের। আগামী মৌসুমে হরিহর আত্মার এই যুগল উইঙ্গারকে আর এক সঙ্গে দেখা যাবে না এ্যালিয়েঞ্জ এ্যারেনায়। দু’জনের বয়সই ত্রিশ পার হয়ে গেছে অনেক আগেই। গত এপ্রিলে ৩৭ বছরে পা রেখেছেন রিবেরি। আগামী জানুয়ারিতে ৩৬ বছরে পড়বেন রোবেন। বয়সের ভারটা ঠিকই বুঝতে পারছেন উভয়েই। ডাচ তারকা রোবেন আগেই জানিয়েছিলেন, বেয়ার্ন থেকে অবসরে যাওয়ার কথা। সেই পথে হাঁটলেন বন্ধু রিবেরিও। নতুন মৌসুমের জন্য বেভারিয়ানদের সঙ্গে চুক্তি করেননি এই ফরাসী তারকা। বেয়ার্ন মিউনিখ তাদের অফিসিয়াল টুইটারেই সমর্থকদের জানিয়ে দেয় তা, ‘ফ্রাঙ্ক রিবেরি বেয়ার্নের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়াবেন না এবং আগামী গ্রীষ্মে ক্লাব ছাড়বেন। সবকিছুর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ফ্রাঙ্ক।’ ২০০৭ সালে ফরাসী ক্লাব মার্শেই ছেড়ে বেয়ার্নে আসেন রিবেরি। আর রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে ২০০৯ সালে আসেন রোবেন। বেয়ার্নের হয়ে উভয়ে পরপর ছয়টিসহ মোট সাতটি বুন্দেসলিগা জেতেন। এছাড়া ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ও উয়েফা সুপার কাপ জেতেন ২০১৩ সালে। ২০১২-১৩ মৌসুমে অল জার্মান ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে হারিয়ে জেতেন চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা। শনিবার শেষ ম্যাচেও নতুন একটা ইতিহাস গড়েছেন রিবেরি। ইতিহাসের প্রথম ফুটবলার হিসেবে জার্মান কাপের আটটি ফাইনালে খেলার রেকর্ড গড়লেন তিনি। এই দুই তারকার প্রতি তাই সকলেই কৃতজ্ঞ।
×