ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নবজাতককে ছুড়ে ফেলে হত্যা ॥ কিশোরী মা গ্রেফতার, চাঞ্চল্যকর তথ্য

প্রকাশিত: ১০:০৭, ২৭ মে ২০১৯

 নবজাতককে ছুড়ে ফেলে হত্যা ॥ কিশোরী মা গ্রেফতার, চাঞ্চল্যকর তথ্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মিরপুরে রূপনগরের একটি ভবনের পঞ্চমতলা থেকে সদ্যভূমিষ্ঠ নবজাতককে ফেলে দেয়া ঘটনায় হত্যাকারী কিশোরী মা জান্নাতুন নেছাকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারের পর সে তার সদ্যোজাত সন্তানকে পাঁচতলা থেকে নিচে ফেলে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, শনিবার বিকেলে রূপনগর আবাসিক এলাকার ১০ নম্বর রোডের একটি বাড়ির পঞ্চম তলার বাসার বাথরুমের ভ্যান্টিলেটর দিয়ে শিশুটিকে নিচে ফেলে দেয়া হয়েছে। জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই শিশুটিকে ফেলে দেয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই শিশুটি মাথা থেঁতলে ঘটনাস্থলে মারা যায়। এ ঘটনায় রূপনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় ৪ জনের মধ্যে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে নবজাতক কিশোরী মা। ওইদিন রাতেই কিশোরী মাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রূপনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পরিমল চন্দ্র জানান, মেয়েটি নিজের বয়স ১৮ বলেছে। তবে বাবা-মায়ের দাবি তার বয়স ১৭ বছর ৬ মাস। এ বছর মণিপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছে। এসআই পরিমল জানান, থানায় জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি জানায়, তার মা দুই বিয়ে করেছে। সে মায়ের প্রথম স্বামীর সন্তান। ওই বাসায় মা ও সৎ বাবা শাহ্ আলমের সঙ্গে থাকত। শাহ্ আলমের ছোট ভাই বিল্লাল হোসেন বিদেশ থাকেন। সম্প্রতি দেশে ফিরে কয়েক মাসের জন্য রূপনগরের এই বাসায় ছিলেন। সেই সময় তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের কারণে গর্ভবতী হয় সে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, এরপর মা-বাবা তাকে গর্ভপাতের জন্য চাপ দেয়। শুক্রবার ভোরে মেয়েটির প্রসব বেদনা ওঠে। বেলা সাড়ে ১১টায় টয়লেটে গিয়ে সে নিজেই সন্তান প্রসব করে। নবজাতকটি পৃথিবীতে আসার ৩০ মিনিট পর অর্থাৎ ১২টার সময় তাকে টয়লেটের ভেন্টিলেটর দিয়ে ফেলে দেয়া হয়। কিশোরীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য পুলিশী হেফাজত থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এসআই পরিমল জানান, এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় মেয়ের মা, সৎ বাবা শাহ্ আলম ও তার ছোট ভাই অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। শাহ্ আলমকে গ্রেফতার করা হলেও তার মা বর্তমানে গর্ভবতী এবং দ্বিতীয় স্বামীর ঘরের একটি ছোট ছেলে থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে তিনি নজরদারিতে থাকবেন। ওই নবজাতকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
×