ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সারাদিন ভ্যাপসা গরম, সন্ধ্যায় একপশলা বৃষ্টি

প্রকাশিত: ০৯:৫৬, ২৫ মে ২০১৯

 সারাদিন ভ্যাপসা গরম, সন্ধ্যায় একপশলা  বৃষ্টি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদিনের ভ্যাপসা গরমের পর সন্ধ্যায় একপশলা বৃষ্টি রোজাদারের মনে এনে দিল প্রশান্তি। তবে বৃষ্টিপাত কেটে গেলে আবার শুরু হয় ভ্যাপসা গরম। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ শনিবার সারাদেশে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টিপাত হবে। তারা আরও জানায়, মৌসুমি বায়ু এবার আগেই দেশে প্রবেশ করছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ৩০ মে নাগাদ এটি বাংলাদেশ উপকূলে আসতে পারে। পরবর্তীতে সারাদেশে বিস্তার লাভ করবে। বর্তমানে এটি আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে অবস্থান করছে। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, মৌসুমি বায়ু দেশে প্রবেশ করলে বর্ষার আনাগোনা শুরু হয়। এবার বর্ষার আনাগোনা আগেই শুরু হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। মৌসুমি বায়ুর কারণে জুনের প্রথম থেকেই সারাদেশে বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে এই সময়ে গরমের ভাব থাকবে। এদিকে শুক্রবার সারদিন আকাশে মেঘের আনাগোনা থাকলেও সন্ধ্যায় বৃষ্টিপাতের দেখা মেলে। বৃষ্টিপাতের কারণে প্রচন্ড গরমের হাত থেকে কিছু হলেও স্বস্তি মিলেছে। আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা আফতাব উদ্দিন জানান, আজ শনিবারও বিচ্ছিন্নভাবে সারাদেশে বৃষ্টিপাত হবে। তবে রবিবার থেকে মেঘ কেটে গিয়ে আবার তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। মে মাসের শেষ নাগাদ সাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কিনা তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। দু-একদিন সারাদেশে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টিপাত হলেও গরমের হাত থেকে সহজে স্বস্তি মিলবে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। প্রচন্ড গরমের কারণে অন্য বছরের তুলনায় এবার রোজায় একটু বেশি ক্লান্ত রোজাদাররা। রোজার প্রথম থেকে সারাদেশে প্রচন্ড গরম আর তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টিপাতেও গরমের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। ভ্যাপসা গরমে মানুষ অস্থির হয়ে পড়ছে। কয়েকদিন ধরে রাজধানীসহ সারাদেশের আকাশে মেঘের আনাগোনা বেড়েছে। গত বুধবারও রাজধানীর ওপর দিয়ে বয়ে যায় প্রচন্ড ঝড়োবৃষ্টি। এরপর আরও কয়েকদফা বৃষ্টিপাত হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টি থেমে গেলেই আবার শুরু হচ্ছে ভ্যাপসা গরম। কয়েকদিন ধরেই এই অবস্থা বিরাজ করছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃষ্টির কারণে সারাদেশে স্বাভাবিক তাপমাত্রা বিরাজ করলেও সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসায় অস্বস্তিকর গরমের অনুভূতি বিরাজ করছে। শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের দেখা মেলে। কিন্তু তারপরও ভ্যাপসা গরমের কমতি ছিল না। দিনভর প্রচন্ড গরমে অতীষ্ট রাজধানীবাসী। প্রত্যাশা করছি বৃষ্টি। আকাশে মেঘ থাকলে দিনেবেলায় বৃষ্টিপাতের দেখা মেলেনি। কিন্তু সন্ধ্যার পরই শুরু হয় বৃষ্টিস্নাত। সঙ্গে ছিল মেঘের গর্জনও। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে রাজধানীতে সন্ধ্যানাগাদ ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন রাজধানীর বাইরে শ্রীমঙ্গলে ১২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া সিলেটে ৫১ এবং রাঙ্গামাটিতে ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে শুক্রবার সন্ধ্যায় আবহাওয়ার তাৎক্ষণিক পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়- পরবর্তী ৪ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও দমকা ঝড়ো হাওয়া, বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। তারা জানায়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ও রাজশাহী বিভাগের কিছুকিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা, ঝড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এদিকে শুক্রবার যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তবে দেশের সব বিভাগের তামপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও ভ্যাপসা গরমের মাত্রা ছিল অনেক বেশি। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কম থাকায় এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরমের অনুভূতি বাড়ছে। শুক্রবার ঢাকায় যেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৩.৫ ডিগ্রী সেখানে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তারা জানায়, সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে এলেই গরমের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। মে মাসের শেষে এই কয়দিন এই অবস্থা বিরাজ করতে পারে। মেঘের আনাগোনার কারণে আজও বিভিন্নস্থানে বৃষ্টিপাত হবে। তবে গরমের মাত্রা কমবে না। বৃষ্টি হলে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে।
×