ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিরাপদ করার উদ্যোগ

তিন মাসে ২২ হাজার পর্নো সাইট বন্ধ করা হয়েছে

প্রকাশিত: ০৯:৩২, ২৫ মে ২০১৯

 তিন মাসে ২২ হাজার পর্নো সাইট বন্ধ  করা হয়েছে

ফিরোজ মান্না ॥ সাইবার জগৎকে নিরাপদ করতে সরকার গত তিন মাসে সাড়ে ২২ হাজার পর্নো সাইট বন্ধ করেছে। এমনকি পর্নো ভিডিও তৈরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর হাতে দমন করতে সক্ষম হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার ও হয়রানি বন্ধের জন্য আরও কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিরাপদ না হলে সমাজও নিরাপদ থাকবে না। সমাজ নিরাপদ না থাকলে রাষ্ট্রও হুমকির মধ্যে পড়ে যাবে। ইন্টানেটের মহাসড়কে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই হবে। এই পথ দিয়ে ভাল মন্দ সব কিছুই আসা যাওয়া করছে। দেশ এখন প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন করেছে। ডিজিটাল দুনিয়ায় কাজ করার পাশাপাশি এ দুনিয়া নিরাপদও রাখতে হবে। দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে ইন্টারনেট পৌঁছে গেছে। এখন ইন্টারনেটকে নিরাপদ করা হচ্ছে বড় কাজ। সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এ কথা বলেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে ব্যাপকহারে কাজ চলছে। ২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে। ‘ইন্টারনেট অব থিংস’ (আইওটি), ‘অগমেন্টেড রিয়েলিটি’ (এআর), ‘ভার্চুয়াল রিয়েলিটি’ (ভিআর) ইত্যাদি প্রযুক্তি দেশে ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। এর মধ্যে ফাইভ জি নেটওয়ার্ক চালু করা হবে। বিশ্বে এখন পারমাণবিক যুদ্ধের চেয়ে সাইবার যুদ্ধ চলছে। তাই সাইবার জগৎকে নিরাপদ রাখতে প্রতিটি দেশ তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছে। আমরা মানুষকে ইন্টারনেট দিলাম। মানুষ ইন্টারনেট পেয়ে ভাল মন্দ দুধরনের কাজই করতে পারেন। কিন্তু দেখতে হবে সমাজের জন্য কতটা ক্ষতিকর কাজ হচ্ছে। সমাজের অকল্যাণ হলে সেই কাজ তো মেনে নেয়া যায় না। সাইবার জগৎকে নিরাপদ করতে সরকার অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। আশা করছি সাইবার জগৎকে ২০২১ সালের আগেই পুরোপুরি নিরাপদ করা সম্ভব হবে। মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা আমাদের কন্টেন্ট ফিল্টারিং অথবা যে ধরনের বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করা দরকার সেগুলো করতে সক্ষম হচ্ছি। ইতোমধ্যে ২২ হাজার পর্নো সাইট বন্ধ করা হয়েছে। আরও সাইট বন্ধ করার জন্য কাজ হচ্ছে। এসব সাইট বন্ধ না করা হলে রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশ সাইবার সিকিউরিটির দিক থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে। কারণ আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহারের ইতিহাসটা বেশি দিনের না। আমরা চেষ্টা করেছি মানুষকে ইন্টারনেট জগতে প্রবেশ করাতে এবং এই জগৎকে নিরাপদ রাখতে। ইউরোপে ৩ থেকে ৪শ’ বছর পিছনে থাকা দেশ হিসেবে বলা হয়। কিন্তু আমাদের সরকারের দূরদর্শী নেত্বের কারণে দেশ তথ্যপ্রযুক্তির দিক থেকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বিশ্বের অনেক দেশ এখন আমাদের কাছে শিখছে। আমরা তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে এত দ্রুত এগিয়ে যেতে পারব তা কল্পনা করা যায়নি। আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পাঠিয়েছি। দেশে বিপুল পরিমাণ ব্যান্ডউইথ রয়েছে। দুটি সাবমেরিন ক্যাবলের মালিক হয়েছি। বেসরকারীভাবে আরও কয়েকটি ক্যাবল রয়েছে আমাদের। সারাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে দেশে সাড়ে ৯ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। এ হার দিন দিন বাড়ছে। এখন আমাদের ইন্টারনেটকে নিরাপদ করতে হবে। নিরাপদ করার জন্য সরকার বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ডিজিটাল মিডিয়ার ভাল দিকের পাশাপাশি খারাপ দিকও রয়েছে। দেশে এ ধরনের মিডিয়া ব্যবহারের পাশাপাশি এর অপব্যবহার বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের ফলে কখনও কখনও শিশু, নারীসহ অনেক মানুষ হেনস্থার শিকার হচ্ছে। এ জন্য দেশের সংস্কৃতিচর্চার ওপরও বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি সংস্কৃতির ভূমিকা অপরিহার্য। ডিজিটাল মিডিয়ায় হেনস্থার শিকার হয়ে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। প্রতিদিন এ ধরনের অনেক অভিযোগ আসছে। অনেক সমস্যার সমাধানও করতে হয়। ডিজিটাল মিডিয়ার নিরাপত্তায় সরকার বদ্ধপরিকর। সরকার যেমন সবার জন্য ইন্টারনেট দিচ্ছে তেমনি এই জগৎকে নিরাপদ রাখারও কাজ করছে।
×