অনলাইন ডেস্ক ॥ বিপুল ভোটে জয়ী হলেন অভিনেত্রী মিমি চক্রবার্তী। তার পরেই আজ সকাল সাড়ে এগারটায় টেলিফোনে সাক্ষাতকার দিলেন মিমি আনন্দবাজরকে। সেটাই এখানে তুলে ধরা হলো।
মিমির কণ্ঠস্বর এত শান্ত কেন?
ঠিক বুঝতে পারছি না কেমন করে রিয়্যাক্ট করব।
কেন? অপ্রত্যাশিত জয়?
নাহ। একেবারেই নয়। যে দিন আমি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হলাম, আপনার মনে আছে কি না জানি না, আমি কিন্তু সেই প্রথম দিন থেকে বলেছিলাম মানুষ আমার জয় নিয়ে আসবেই। আজ তো সেটাই হয়েছে। অনেক কথা শুনতে হয়েছে, যাদবপুরের মতো জায়গায় এরকম একটা হাঁটুর বয়সি মেয়েকে দাঁড় করানো হচ্ছে। কিন্তু ওই হাসি, ঠাট্টা, মিম সব কিছুর জবাব আমার হয়ে মানুষ দিয়েছে।আজ একটা কথা বলি?
বলুন না...
আজ আমার বলতে দ্বিধা নেই যে যাদবপুরে শুধু তাবড় শিক্ষক, প্রফেসর বা আইনজীবী নির্বাচনে দাঁড়ালে মানুষ ভোট দেবে— যাদবপুরের এই মিথ আমি ভেঙে দিয়েছি। যাদবপুর শুধু 'রেড ব্লক' এটা আর বলা যাবে না। যাদবপুর থেকেই এখনও পর্যন্ত যত সংখ্যক ভোট পেয়েছি আমি সেই সংখ্যাটাই প্রমাণ করে মানুষ 'ইয়ুথকে' চেয়েছে। পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের দলের সকলের সম্মিলিত পরিশ্রমের ফল এই জয়।
কতটা পরিশ্রম?
দেখুন এমন কোনও অঞ্চল ছিল না যেখানে মিমি যায়নি। এক এক জায়গায় সাত-আট বার করে গিয়েছি। আর দেখুন মানুষের পালস্ বুঝতে পারার অভিজ্ঞতা তো আমার আজ হয়নি। স্টেজ শো করতে করতে দেখেছি মানুষ নাচছে। সেই রিঅ্যাকশনে আমাদের পারফর্ম করতে ভাল লাগে। প্রচারে গিয়েছি, একটা পাঁচ বছরের মেয়ে বলছে, আমি বড় হয়ে 'মিমি' হতে চাই। আট বছরের এক মেয়ের বাবা-মা এসে বলছে, আমাদের মেয়ের নাম রেখেছি মিমি। সত্তর বছরের বৃদ্ধা জড়িয়ে ধরে রীতিমতো কাঁপছে আর বলছে, এত কাছ থেকে মিমিকে তিনি এ জন্মে পাবেন ভাবেননি। আর কী চাইব বলুন মানুষের এমন ভালবাসার জোর!
মানুষ তো এত ভালবেসেছে। আপনি তাদের বিনিময়ে কী দেবেন?
আজ একটা কথা পরিস্কার বলে দিই। যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের জন্য মিমি কাজ করবে। কোনও ফাঁকি থাকবে না। বাড়িতে বসে যদি আপনি বলেন, আমি এমপি আমি কোথাও যাব না। তা হলে মানুষ থাকবে না তোমার সঙ্গে। বিশ্বাস করুন এমন কোনও জায়গা নেই আমি যাইনি।
এত যে প্রচার করলেন, কী মনে হল? কোন জায়গা থেকে কাজ শুরু করতে হবে?
একেবারে বেসিক লেভেল। পঞ্চায়েতের উন্নতি। ঘুরে ঘুরে দেখেছি রাস্তায় প্রচুর টিউবওয়েল জল নেই। বালি বেরচ্ছে। এটা কিন্তু প্রশাসনের দোষ নয়। রূপায়নের সমস্যা। সেটা আমায় দেখতে হবে। তার পর আলো। সব জায়গায় সেটা যাতে পৌঁছয়। আর রাস্তা। অনেক রাস্তায় গাড়ি ঢুকতে পারে না। সেগুলো ঠিক করা। আর আমার এলাকার নিরাপত্তা। প্রত্যেকটা মানুষ যাতে মুক্ত বিহঙ্গের মতো নিরাপদে, আনন্দে ঘুরে বেড়াতে পারে সেটাও দেখতে হবে।
কিন্তু বিরোধী পক্ষ তো ভীষণ জোরালো।
হোক না। লড়াই জমবে। একুশের নির্বাচনের জন্য জোটবদ্ধ হয়ে আদা-জল খেয়ে এখন থেকে কাজ শুরু করতে হবে। জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করা এই সময় অত্যন্ত জরুরি।
আর বাংলা ছবির কী হবে?
পরশু থেকেই তো মিটিং এ বসছি। পুজো রিলিজ আছে। দেখুন, দু’দিকে ব্যালান্স করেই চলব। ইচ্ছে থাকলে সব হয়।
দেবের সঙ্গে কথা হয়েছে?
নাহ্।
আর নুসরাত?
এই তো জাস্ট কথা হল। আমি আর নুসরাত দু’জনেই তো অনেক সংখ্যক ব্যবধান রেখে জয় পেলাম। মানে বলতে চাইছি আমাদের জয়ের মার্জিন অনেক বেশি। সেটা নিয়ে খুব এক্সাইটেড আমরা। সামনে অনেক বড় দায়িত্ব।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
শীর্ষ সংবাদ: