ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিবিসির সেরা হেগেরবার্গ

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ২৪ মে ২০১৯

বিবিসির সেরা  হেগেরবার্গ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিবিসির বর্ষসেরা নারী ফুটবলারের পুরস্কার জিতলেন লিঁওর নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার আদা হেগেরবার্গ। ২০১৭ সালের পর আবারও এই পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। বিশ্বব্যাপী ফুটবলভক্তদের ভোটেই এই পুরস্কারের বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। বিবিসির সেরা নারী ফুটবলার হওয়ার লড়াইয়ে হেগেরবার্গ পেছনে ফেলেছেন ওল্ফসবার্গের ড্যানিশ স্ট্রাইকার পার্নিল্ল হার্ডার এবং সিগাগো রেডস্টারের অস্ট্রেলিয়ান ফরোয়ার্ড সাম কেরকে। চারদিন আগেই উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনাল জিতে অলিম্পিক লিঁও। শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে ফরাসী ক্লাবটি ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সিলোনাকে। আর সেই ম্যাচে নায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন হেগেরবার্গ। বার্সিলোনার মেয়েদের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক উপহার দেন তিনি। আর তাতেই টানা চারবার ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরে লিঁও। এবার সেই পুরস্কারেরই যেন স্বীকৃতি পেলেন লিঁওর নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার আগা হেগেরবার্গ। বিবিসির বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত ২৩ বছরের এই প্রতিভাবান স্ট্রাইকার। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বিস্ময়কর এক অনুভূতি। দ্বিতীয়বারের মতো এই পুরস্কার জেতাটা নিঃসন্দেহে বেশ সম্মানের।’ গত কয়েক বছর ধরেই বিশ্ব প্রমীলা ফুটবলের আলোচিত নাম হেগেরবার্গ। ২০১৮ সালে তো অবিস্মরণীয় এক কীর্তি গড়েন তিনি। গত বছরই প্রথম ফুটবলে নারীদের জন্য ঘোষিত হয় সম্মানজনক ব্যালন ডি’অর পুরস্কার। আর সেই প্রথম এই পুরস্কার জিতে জায়গা করে নেন ইতিহাসে। সেবারই ঘোষণা দিয়েছিলেন নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান তিনি। প্যারিসের সেই আলো ঝলমলে মঞ্চে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, এটি সত্যিই অবিস্মরণীয়। সামনে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে চাই। লিঁওর জন্য আরাও খেলতে চাই এবং জিততে চাই। এই পুরস্কার সত্যিই এক দারুণ মোটিভেশন। ১৯৯৫ সালের ১০ জুলাই নরওয়ের মোলডেতে জন্মগ্রহণ করেন হেগেরবার্গ। ২০১০ সালে কোলবোন ক্লাব দিয়ে যাত্রা শুরু করেন এই স্ট্রাইকার। ২০১১ সালের ৬ আগস্ট ৭ মিনিটে ৩টি গোল করে স্থানীয় ক্লাব রোয়াকে ৪-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে সবার নজর কাড়েন। টপসেরিনে ১৬ বছর বয়সে হ্যাটট্রিক করে কনিষ্ঠতম ফুটবলার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। ২০১১ সালে টপসেরিনে তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। ঐ বছরই লীগের উদীয়মান তারকা ফুটবলারের খেতাব জেতেন। ২০১২ সালে তিনি ও তার বড় বোন এক সঙ্গে স্টাবিক ক্লাবে যোগদান করেন। সে বছরের মে মাসে ফার্ট ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচের প্রথমার্ধে একাই ৫ গোল করে স্টাবিককে ৮-২ ব্যবধানে জিতিয়ে দেন। সে মাসেই ট্যালেন্ট অব দ্য মান্থ জেতেন হেগেরবার্গ। ২০১২ সালে টপসেরিনে আবারও সর্বোচ্চ গোলদাতা হন তিনি। সে সময় তার ঝুলিতে ছিল ১৮ ম্যাচে ২৫টি গোল। ২০১৩ সালে তিনি ও তার বোন একত্রে জার্মান ক্লাব টার্বাইন পোস্টডামে যোগদান করেন। এর পরের গল্পটা আরও ঝলমলে। ২০১৪ সালেই অলিম্পিক লিঁওর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি। হেগেরবার্গের প্রথম মৌসুমটিই ছিল দারুণ উপভোগ্য। লীগের ২২ ম্যাচে ২৬ গোল করে ক্লাবকে তাদের নবম শিরোপা জেতাতে সহায়তা করেন তিনি। কোপা ফ্রান্স ফাইনালে ৪৭ মিনিটে তার জয়সূচক গোল ক্লাবকে বিজয় এনে দেয়। হেগেরবার্গের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারও বেশ সাফল্যমন্ডিত। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই অনুর্ধ-১৯ ফুটবল দলে খেলার সুযোগ পান তিনি। যেখানে তার দল ফাইনাল খেলে। ২০১২ সালে অনুর্ধ-২০ বিশ্বকাপেও খেলেন হেগেরবার্গ ও তার বোন এড্রিন। সেখানে তাদের দল কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে। গ্রুপপর্বে কানাডার বিপক্ষে দুইবোনই গোল করেন। ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো বিকল্প খেলোয়াড় হিসেবে জাতীয় দলে খেলেন হেগেরবার্গ। সেখানে তার দল ৩-১ ব্যবধানে আয়ারল্যান্ডকে হারায়। অসাধারণ পারফর্মেন্সের সৌজন্যে ২০১৬ সালে উয়েফার সেরা নারী খেলোয়াড় হিসেবে ভূষিত হন হেগেরবার্গ। সে বছর বর্ষসেরা নরওয়েজিয়ান খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৭ সালের পর এবার দ্বিতীয়বারের মতো বিবিসির সেরা নারী ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত হলেন আদা হেগেরবার্গ।
×