ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধে লাভ ভিয়েতনামের

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ২৩ মে ২০১৯

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধে লাভ ভিয়েতনামের

অনলাইন ডেস্ক ॥ বাণিজ্য যুদ্ধের জের ধরে চীনে কার্যক্রম চালানো কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে এখন বাড়তি শুল্কের খড়গে পড়ে বেশ চাপের মুখে আছে। কিন্তু এ যুদ্ধে লাভবান হচ্ছে অন্য একটি দেশ। চীনে পণ্য উৎপাদকদের রীতিমত প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে যেনো তারা দ্রুত তাদের কারখানা যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক প্রভাবিত করবে না এমন দেশে সরিয়ে নেয়। আর এমন দেশগুলোর মধ্যে একটি হলো চীনের প্রতিবেশী দেশ ভিয়েতনাম। ব্যবসা বান্ধব হিসেবে দেশটি ইতোমধ্যেই বেশ জায়গা করে নিয়েছে। এখন চীনা বিনিয়োগের গন্তব্যও তাই ভিয়েতনাম। অবশ্য বিদেশি কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন ধরেই ভিয়েতনামের সস্তা শ্রম আর চমৎকার ব্যবসার পরিবেশের সুফল নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক থিংক ট্যাংক পিটারসন ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকস এর ম্যারি লাভলির মতে, চীনে শ্রমের মজুরি অনেক বেড়ে যাওয়ায় ভিয়েতনাম ইতোমধ্যেই তার সুফল পেতে শুরু করেছে। কিন্তু তারপরও দেখা যাচ্ছে গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করলে চীনা বিনিয়োগও ভিয়েতনামের দিকে ধাবিত হতে শুরু করে। ২০১৯ সালের প্রথম চার মাসে যে পরিমাণ চীনা বিনিয়োগ হয়েছে তা ২০১৮ সালের মোট বিনিয়োগের ৬৫ শতাংশ। গত এক দশকে ভিয়েতনামের অর্থনীতি বেশ দ্রুতগতিতে এগুচ্ছে। বিশেষ করে ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি খুব ভালো করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের পর চীনা বিনিয়োগ আসছে দ্রুতগতিতে। কর্পোরেট ল ফার্ম বেকার অ্যান্ড ম্যাকেঞ্জি বলছে, অনেক কোম্পানি চলমান বাণিজ্য দ্বন্দ্বের আগেই চীনের বাইরে বিনিয়োগ করে আসছে। আর সাম্প্রতিক বাণিজ্য দ্বন্দ্ব সেটিকেই আরও উস্কে দিয়েছে। আইএলওর হিসেবে, ২০১৮ সালে ভিয়েতনামের কর্মরত শ্রমিক ছিলো প্রায় এক কোটি ৪৫ লাখ। শ্রম খরচ ভিয়েতনামেও বাড়ছে, কিন্তু তারপরও সেটি প্রতিবেশী চীনের তুলনায় অনেক কম। আবার জমি ও খরচের দিক থেকেও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার সক্ষমতাও বাড়ছে ভিয়েতনামের। যদিও কিছুটা বাড়ছে শিল্প এলাকার খরচ আর এটাও বলা হচ্ছে চীনা বিনিয়োগ পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়াতে যেসব প্রতিষ্ঠান দ্রুত ভিয়েতনামে সরে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি দেখছেন অনেক বিশ্লেষক। কারণ যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন বেশ ভালো করেই দেখছে যে এসব চীনা প্রতিষ্ঠান নিষেধাজ্ঞা এড়াতে অন্যত্র যাচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যেই টুইটবার্তায় বলেছেন, ‘শুল্ক আরোপিত অনেক কোম্পানি চীন ছেড়ে ভিয়েতনাম বা এশিয়ার অন্য দেশে যাচ্ছে। সেকারণেই চীন চুক্তিটি বাজে ভাবে করতে চাইছে।’ কাজেই ধারণা যায়, ভবিষ্যতে ‘মেড ইন ভিয়েতনাম’ ট্যাগটি নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর জন্য যথেষ্ট নাও হতে পারে।
×