ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মাহে রমজান

প্রকাশিত: ১০:২৫, ২৩ মে ২০১৯

 মাহে রমজান

অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম রফিক ॥ আজ ১৭ রমজানুল মুবারাক। মাহে রমজান সিয়াম সাধনার, শিক্ষা ও উপলব্ধি অর্জনের। এ মাস আমাদের অতীত ও ঐতিহ্য স্মরণের। এ মাসে আমরা হারিয়েছি বহু গুণী মনীষীকে। তাদের মধ্যে হযরত আলী (রা)-এর নাম বিশেষভাবে স্মরণীয়। রাসূলে খোদা হযরত মুহম্মদ (স)-এর প্রিয় সাহাবি ও খলিফা হযরত আলী (রা) ইসলামের ইতিহাসে একজন মহান বীর ও সাধক হিসেবে কিংবদন্তি হয়ে আছেন। অসি ও মসি দু’ধারায় তিনি আজীবন ইসলামের সেবা করে গেছেন। রাসূলে করীম (স)-এর যুগের সকল যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সাহসিকতা ও বীরত্বের পরিচয় তিনিই দেন। এ কারণেই হুজুর (স) তাকে ‘হায়দার’ উপাধিসহ ‘যুল ফিকার ’ নামক একখানা তরবারি দান করেন। একমাত্র তাবুক অভিযান ছাড়া সকল যুদ্ধেই তিনি অংশগ্রহণ করেন। সপ্তম হিজরীতে খাইবার অভিযান চালানো হয়। সেখানে ইয়াহুদীদের কয়েকটি সুদৃঢ় কিল্লা ছিল। প্রথমে সিদ্দীকে আকবর, পরে ফারুকে আজমকে কিল্লাগুলো পদানত করার দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু তারা কেউ সফলকাম হতে পারলেন না। নবী (স) ঘোষণা করলেন : কাল আমি এমন এক বীরের হাতে ঝান্ডা তুলে দেব, যে আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রিয়পাত্র। তারই হাতে কিল্লাগুলো পতন হবে। পরদিন সকালে সাহাবিদের সকলেই আশা করেছিলেন এই গৌরব অর্জন করার। হঠাৎ আলী (রা)-এর ডাক পড়ল। তারই হাতে খাইবারের সেই দুর্জয় কিল্লাগুলো পতন হয়। পরবর্তীকালে প্রথম তিন খলিফার আমলে তিনি উপদেষ্টার ভূমিকা পালন করেন। ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি মুসলিম জাহানের খিলাফত পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। এ পদে পাঁচ বছরের কাছাকাছি অধিষ্ঠিত ছিলেন। ৬৬১ খ্রি. মুতাবেক হিজরী ৪০ সনের ১৬ রমজান ফজরের সময় হযরত আলী (র) অভ্যাসমতো আস- সালাত বলে মানুষকে নামাজের জন্য ডাকতে ডাকতে যখন মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন, তখন ইসলামী ঐক্য ধ্বংসের চক্রান্তে লিপ্ত জনৈক পাপাত্মা ইবনে মুলজিম শানিত তরবারি নিয়ে তাকে আহত করে। পরদিন ১৭ রমজান শনিবার তিনি কুফায় শাহাদাত বরণ করেন। কোন কোন ঐতিহাসিক তার ওফাতের তারিখ ২১ রমজান বলেছেন। হযরত আলী (রা) ছিলেন নবী খান্দানের সদস্য, যিনি নবীজীর প্রত্যক্ষ তত্ত্ব¡াবধানে শিক্ষা লাভ করেন। প্রিয় নবী হযরত রাসূলে করীম (স) বলেছেন : আনা মাদিনাতুল ইলম ওয়া আলী বাবুহা— আমি জ্ঞানের নগরী আর আলী সেই নগরীর প্রবেশদ্বার। তিনি ছিলেন কুরআনে হাফিজ এবং একজন শ্রেষ্ঠ মুফাসসির। তিনি রাসূল (স)-এর বহু হাদিস বর্ণনা করেছেন। পূর্ববর্তী খলিফাদের যুগে মুহাজিরদের মধ্য হতে তিনজন ও আনসারদের তিনজন আইন বিষয়ক ফতোয়া দিতেন। যথা : উমর, উসমান, আলী, উবাই বিন কা’ব, মুয়াজ বিন জাবাল ও যায়িদ বিন সাবিত (রা) । এদিক দিয়েও হযরত আলী (রা) বিশেষ মর্যাদার অধিকারী।
×