ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাংবাদিকদের সঙ্গে ওবায়দুল কাদের

ধানের ক্ষেতে আগুন দেয়া স্যাবোটাজ কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে

প্রকাশিত: ১০:২০, ২৩ মে ২০১৯

 ধানের ক্ষেতে আগুন দেয়া স্যাবোটাজ কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবারের মৌসুমে উৎপাদিত ধানের কাক্সিক্ষত মূল্য না পেয়ে বিভিন্নস্থানে পাকা ধানের ক্ষেতে আগুন দেয়ার কারণ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের একটি প্রশ্নে কাদের বলেন, এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। দলীয়ভাবেও এ বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। চলমি মৌসুমে ধানকাটা শুরুর পর থেকে বাজার মূল্য নিয়ে কৃষকরা অসন্তোষ জানিয়ে আসছিলেন। তাদের বক্তব্য, প্রতিকাঠা জমিতে ধান উৎপাদন খরচ হয় প্রায় এক হাজার টাকা। অথচ ধানের মন সর্বোচ্চ সাড়ে ৫০০টাকা। এর মধ্যে ধান কাটতে কাজের লোকের অভাব তো আছেই। এতে কৃষকরা হতাশ হন। বিভিন্ন জেলায় কৃষকরা ধানের মূল্য বাড়ানোর দাবি জানান। নানা শর্তের কারণে সরকারী গোডাউনে নানা শর্তের কারণে ধান বিক্রি করতে না পারারও অভিযোগ আসছিল। এই প্রেক্ষাপটে দেশের কয়েকটি স্থানে অসহায় কৃষকরা মনের কষ্টে নিজের জমিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে অভিনব প্রতিবাদ জানান। দেশের ইতিহাসে ধানের দাম কম হওয়ায় এমন প্রতিবাদ এবারেই প্রথম। এ ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়, যা নিয়ে সরকারও ভাবতে শুরু করেছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, ধানের জমিতে আগুন দেয়ার ঘটনা সাবোট্যাজ কিনা, কোনভাবে এটা সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য কেউ বিষয়টা সৃষ্টি করতে পারে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, আগেও আমাদের দেশে কৃষক সঙ্কট উদ্ভব হয়েছিল, কিন্তু এভাবে আগুন জ্বালিয়ে ধানক্ষেতে প্রতিবাদ আর হয়নি। এসব ঘটনা বিশেষ বিশেষ জায়গায় ঘটছে কেন, এটা তদন্ত করে জানাতে বলেছেন। দলীয়ভাবেও আমরা খোঁজখবর নেব। এ বছর বোরো মৌসুমে সরকারীভাবে ২৫ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান-চাল সংগ্রহ করা হবে। সরকার এবার প্রতিকেজি ধান ২৬ টাকা এবং প্রতিকেজি চাল ৩৬ টাকায় কিনবে। কিন্তু কিছুদিন ধরেই ধানের দাম নিয়ে কৃষক পর্যায়ে চলছে অস্থিরতা। সরকার প্রতিমণ বোরো ধান ১ হাজার ৪০ টাকায় কিনলেও কৃষক পাচ্ছে তার চেয়ে অনেক কম। কৃষকের খরচ বাঁচাতে অনেক জায়গায় শিক্ষার্থীরা, তরুণরা তাদের ধান কাটায় সহায়তা করছেন। সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগও কৃষকের ধান কাটায় সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে। সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধান করতে হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা সমস্যা হয়েছে। আগুন জ্বালিয়ে, ধান পুড়িয়ে এ সমস্যার সমাধান তো হবে না। সরকার এখানে আন্তরিক এবং সরকার কখনও চাইবে না আমাদের কৃষির মেরুদ- যে কৃষক, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হোক। কৃষকের স্বার্থবিরোধী, কৃষকবান্ধব সরকার কখনও করবে না। শেখ হাসিনা সরকার এ ব্যাপারে আন্তরিক। এসব বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। এখানে যে সমস্যার উদ্ভব হয়েছে, এর বাস্তবসম্মত সমাধানে উদ্যোগী সরকার। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কৃষককে রক্ষায় অর্থমন্ত্রী চাল আমদানি সীমিত করার কথা বলেছেন। আর খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান কেনাসহ চাল আমদানি পুরোপুরি বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বিআরটিসির শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস সেবা ॥ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বিআরটিসির শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস সেবার শুরু হলো। বুধবার নতুন এই সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। নগরীর গুলিস্তানে এই সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পর বিআরটিসির এসি বাসে করেই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম থেকে সচিবালয়ে যান তিনি। বিআরটিসি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ ভূইয়া জানান, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ১৫টি এসি বাস চলবে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম থেকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার হয়ে চাষাঢ়া-মন্ডলপাড়া পর্যন্ত যাত্রী বহন করবে এসব বাস। ঢাকা থেকে চাষাঢ়া জনপ্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা। আর ঢাকা থেকে মন্ডলপাড়া ভাড়া হবে ৫৫ টাকা। এই সেবা চালুর ফলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের যাত্রীরা উন্নত সেবা পাবে এবং বিআরটিসির কার্যক্রমে আরও সম্প্রসারিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন চেয়ারম্যান। বিআরটিসি জানিয়েছে, ভারতীয় ঋণ কর্মসূচীর আওতায় বিআরটিসি বহরে ৬০০টি বাস ও ৫০০টি ট্রাক নিয়েছে সরকার। ৬০০টি বাসের মধ্যে ৩০০টি দ্বিতল, ১০০টি একতলা এসি সিটি, ১০০টি একতলা এসি ইন্টারসিটি ও একশটি একতলা নন এসি ইন্টারসিটি বাস রয়েছে। এরই মধ্যে ৬০০ বাসের মধ্যে ১৭৯টি এবং ৫০০ ট্রাকের মধ্যে ৪৮০টি বিআরটিসি বহরে যুক্ত হয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশনারের সাক্ষাত ॥ মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাস। সাক্ষাত শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ভারতের জনগণ যাকেই নির্বাচিত করুক, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকবে। বাংলাদেশ ভারতের সরকার ও জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বিশ্বাসী।
×