ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

খালেদার অসুস্থতার কথা চিন্তা করেই কেরানীগঞ্জে আদালত স্থাপন

প্রকাশিত: ০৯:৫৬, ২৩ মে ২০১৯

 খালেদার অসুস্থতার কথা চিন্তা করেই কেরানীগঞ্জে আদালত স্থাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা চিন্তা করে কেরানীগঞ্জ কারাগারে আদালত স্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বহুদিন ধরে দাবি করা হচ্ছে খালেদা অসুস্থ। কিন্তু খালেদা জিয়ার এই অসুস্থতা পুরোনো সমস্যা। এই অসুস্থতা নিয়েই তিনি দু’বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তার সুবিধার কথা চিন্তা করেই কেরানীগঞ্জে তার বিচারের জন্য আদালত স্থাপন করা হয়েছে। এতে তো বিএনপির খুশি হওয়ার কথা। তথ্যমন্ত্রী বুধবার প্রেস ইনস্টিটিউটে (পিআইবিতে) গণমাধ্যম পুরস্কার অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, সরকার আইন ও বিধান অনুযায়ী আদালত স্থাপন করতে পারে। খালেদা জিয়ার বিচারে কারাগারে আদালত স্থাপন আইন ও বিধি অনুযায়ী করা হয়েছে। এ নিয়ে বিএনপির অভিযোগের কোন কারণ নেই। আদালত স্থাপন এক জিনিস। আর বিচারিক কার্যক্রম কিভাবে চলবে তা আদালতের বিষয়। এটা ভিন্ন জিনিস। এদিকে পিআইবির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তবে তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের উদ্যোগ এখন আর কোন স্লোগান নয় এটি বাস্তবে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নতির প্রশংসা এখন সারাবিশ্ব জুড়ে। অথচ সরকার যখন ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্লোগান দিয়েছে তখন অনেকে এ নিয়ে হাস্যরস করেছিল। তিনি বলেন, দেশে আজ রিক্সাওয়ালা থেকে শুরু করে ভিক্ষুক পর্যন্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হয়েছে। যা বিশ্বের অনেক উন্নত দেশও পারেনি। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ই দেশে ডিজিটাল ধারনার উদ্যোক্তা। অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকলে তিনি প্রযুক্তিগত রিপোর্টিংয়ের পাশাপাশি মানবতা বিষয়ে অনুসন্ধানীর সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে পুরুস্কার প্রবর্তনের জন্য পিআইবির প্রতি আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবর্তিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শব্দটি এখন সারাবিশ্বে এখন একটি পরিচিত শব্দ। ডিজিটাল বাংলাদেশ বললে বিশ্বে সবাই এক নামে চেনে। কিন্তু প্রথম দিকে দেশের মানুষের কাছে এই ডিজিটাল সুবিধা পৌঁছানো সরকারের কাছে এক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু এখন তৃণমূলের মানুষের কাছে এই সুবিধা পৌঁছে গেছে। সারাদেশের মানুষ এক কানেকটিভিটির আওতায় এসে গেছে। এর ফলে গ্রাম, শহর, দ্বীপ ও উপকূলকে আলাদা হিসেবে চিহ্নিত থাকবে না। তিনি বলেন, আগের কাগজের ছেপে গণমাধ্যম যত মানুষের কাছে পৌঁছাতো। এখন ডিজিটাল প্রযুক্তিতে অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। এই ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরে দেশের জনগণই মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। সরকার উদ্যোগী হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। এ সময় তিনি ডিজিটাল এ্যাক্ট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেন এই আইন সংবাদপত্র স্বাধীনতা এবং মানুষের বাক স্বাধীনতা হরনের জন্য করা হয়নি। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা থেকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই এই আইন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় পিআইবির চেয়ারম্যান আবেদ খান বলেন, প্রযুক্তির ছোয়ায় আজ আমরা আর পিছিয়ে নেই। এখন থেকে পিআইবিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এজন্য বিভিন্ন বিষয়ে পিআইবি থেকে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এখন থেকে নতুন মানুষ তৈরি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নৈতিকতাকে ভিত্তিতে সাংবাদিকতাকে নতুন করে জাগিয়ে তোলার প্রয়োজন। সেই প্রশিক্ষণ পিআইবি দিয়ে থাকে উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। এ সময় তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বস্তুত জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রথম সোপান। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেন। এতে উল্লেখ করেন স্বাধীনতার ৫০ বছরের এই দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হবে। তিনি তথ্য সমৃদ্ধ দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে ২০২১ সালের মধ্যে কৃষি, খাদ্য, ব্যবসা, কর্মসংস্থান ও পরিবেশ সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটিয়ে দেশকে ডিজিটাল রূপান্তরের জন্যই এই রূপকল্পের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে উন্নয়নের ধারা প্রবাহমান রাখার জন্য সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন পর্যায়ে নানা পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যদি গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ মানি তাহলে সমাজে ঘটে যাওয়া প্রতিটি চিত্র তুলে ধরার দায়িত্ব গণমাধ্যমের। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে গণমাধ্যম কর্মীরা অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে পারে বলে উল্লেখ করেন। পিআইবি সেমিনার কক্ষে পিআইবি ও এটুআই যৌথভাবে গণমাধ্যম পুরুস্কার ২০১৮ আয়োজন করে। এতে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন তথ্য সচিব আব্দুল মালেক, তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এনএম জিয়াউল আলম, এটুআইয়ের পলিসি এ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন তৈরি জন্য সংবাদপত্র, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, অনলাইন মিডিয়াসহ ৭ ক্যাটাগরিতে সাংবাদিকদের হাতে পুরুস্কার তুলে দেয়া হয়।
×