ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাকৃবির উপাচার্য পদে বসতে শিক্ষকদের তোড়জোড়

প্রকাশিত: ০৯:৫৫, ২৩ মে ২০১৯

 বাকৃবির উপাচার্য পদে বসতে শিক্ষকদের তোড়জোড়

বাকৃবি সংবাদদাতা ॥ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বর্তমান উপাচর্য অধ্যাপক ড. মোঃ আলী আকবরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী উপাচার্যের দায়িত্ব কে পাবেন এই নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা, আলোচনা। শোনা যাচ্ছে প্রায় ডজনখানেক শিক্ষক উপাচার্যের চেয়ারে বসতে জোর লবিং করছেন। তবে আগের উপাচার্যের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সততা বজায় রেখে শক্ত হাতে নেতৃত্ব দিতে পারবে এমন ব্যক্তিকে উপাচার্যের চেয়ারে দেখতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। বিশ্ববিদ্যালয় ও সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা গেছে, উপাচার্য হবার দৌড়ে এগিয়ে আছেন অধ্যাপক ড. মোঃ জসিমউদ্দিন খান, অধ্যাপক ড. এএস. মাহফুজুল বারি, অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান, অধ্যাপক ড. মনোরঞ্জন দাস, অধ্যাপক ড. ছোলেয়মান আলী ফকির এগিয়ে আছেন। বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আলী আকবরের অনুষদপ্রীতি, এলাকাপ্রীতি, কিছু শিক্ষকদের অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান, নিয়ম বহির্ভূতভাবে মৌসুমি শ্রমিক নিয়োগ, কর্মচারী-কর্মকর্তাদের নিয়োগে অনিয়মের বিষয়কে কাজে লাগিয়ে উপাচার্যের পদ ভাগিয়ে নিতে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছে। উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ জসিমউদ্দিন খান। তিনি বর্তমান উপাচার্যের অত্যন্ত আস্থাভাজন বন্ধু হিসেবে পরিচিত। বর্তমান উপাচার্য দায়িত্ব নেয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় ছয় দশকের মধ্যে ড. মোঃ জসিমউদ্দিন খানকে প্রথম উপ-উপাচার্যের পদে বসান। তার বিরুদ্ধে উপাচার্যের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে টাকার বিনিময়ে মৌসুমি শ্রমিক নিয়োগসহ একাধিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। অনেকের ধারণা বর্তমান উপাচার্যের সুপারিশে তিনিই বসতে পারেন পরবর্তী উপাচার্যের আসনে। উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন দ্বিতীয় বারের মতো নির্বাচিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তাদের মধ্যে সমানভাবে জনপ্রিয় এই শিক্ষক ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি হলে বাকসুর হল সংসদের নির্বাচিত ভিপি, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সভাপতিসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কমিটির চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্স সিস্টেমের পরিচালকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ও বিভিন্ন কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেছেন। নতুন উপাচার্য হিসেবে যার নামে বেশি গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে তিনি অধ্যাপক ড. মনোরঞ্জন দাস। এই শিক্ষক মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক, হল প্রভোস্টসহ আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। নিয়োগ পেতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও ইন্টার ডিসিপ্লিনারি ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটির (আইআইএফএস) পরিচালক অধ্যাপক ড. এএস মাহফুজুল বারি। অনেকেই মনে করেন কৃষিমন্ত্রীর এলাকার এই শিক্ষক বসতে পারেন উপাচার্যের চেয়ারে। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এ্যান্ড এ্যানিম্যাল সাইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) উপাচার্য ছিলেন। আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. সচ্চিদানন্দ দাস চৌধুরী উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে শক্তপ্রার্থী। এছাড়াও উপাচার্যের আসনে বসতে জোর লবিং করছেন ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোঃ ছোলেয়মান আলী ফকির, কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আখতার হোসেন চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. এমএএম ইয়াহিয়া খন্দকার, কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ মঞ্জুরুল আলম, তরুণ শিক্ষকদের মধ্যে অধ্যাপক ড. একেএম জাকির হোসেন প্রমুখ। সততা, যোগ্যতার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতিক সংশ্লিষ্টতা আছেন এমন কেউ উপাচার্যের দায়িত্ব পাবেন এমন প্রত্যাশা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক ও ছাত্রলীগের। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সাধরণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা, আবাসিক হলের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়কে গতিশীল করবে এমন ব্যক্তিকেই আমরা উপাচার্য হিসেবে চাই। এছাড়া একনেকে পাসকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬০ কোটি টাকার বাজেট যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয় সেই দিকেও যেন পরবর্তী উপাচার্যের নজর থাকে। সর্বোপরি আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণকারী ব্যক্তি যেন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান সেই আশা করছি।
×