ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কোহলির কাছে চাপটাই আসল চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ২৩ মে ২০১৯

 কোহলির কাছে চাপটাই আসল চ্যালেঞ্জ

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ ইংল্যান্ডে বসছে ক্রিকেটে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১২তম আসর। আয়োজকদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ থাকায় পাকিস্তান আগেই সেখানে পৌঁছে গেছে। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-বাংলাদেশও তাই। বৃটিশ ভূমিতে ঘাম ঝরাচ্ছে ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। আগ্রহের কেন্দ্রে থাকা আরেক পরাশক্তি ভারতও এবার শিরোপা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে দেশ ছেড়েছে। ফেবারিট হিসেবে ইংলিশদের পর যে দলটির ওপর সমর্থকদের প্রত্যাশার চাপ সবচেয়ে বেশি। আর দেশ ছাড়ার আগে অধিনায়ক বিরাট কোহলি বলেছেন, কন্ডিশনের আগে তাদের এই ‘চাপ’ জয় করতে হবে। সুপার উইলোবাজের দৃঢ় বিশ্বাস চাপের মধ্যেই তাদের সেরাটা বেরিয়ে আসবে। দলে ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির গুরুত্ব এবং বিশ্বকাপের আরও অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন কোচ রবি শাস্ত্রীও। ৫ জুন সাউদাম্পটনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মিশন শুরু করবে কোহলি এ্যান্ড কোং। ‘গত বছর সফরে টেস্ট সিরিজে যে কন্ডিশন ছিল, বিশ্বকাপে সেটা খুব একটা পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না। কন্ডিশন নিয়ে তাই বেশি ভাবছি না। বিশ্বকাপের সময় যে চাপটা থাকবে সেটাই প্রধান চিন্তার বিষয়। চাপ অবশ্য দলের জন্য একদিকে ভাল, সবার সেরাটা বের করে আনবে এমন পরিস্থিতি। আমি যে কয়টা বিশ্বকাপে খেলেছি, এটাই সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে। এবারের বিশ্বকাপের ফরমেটই এমন। যেখানে প্রতিটা ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ গ্রুপপর্ব বলে কিছু নেই। টানা চার ম্যাচে আমাদের সামনে কঠিন প্রতিপক্ষ থাকবে। প্রথম ম্যাচ থেকেই তাই সবাইকে ফর্মে থাকতে হবে।’ দেশ ছাড়ার আগে সংবাদমাধ্যমকে বলেন কোহলি। লীগপর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার পর অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে ভারত। অধিনায়ক সেদিকেই ইঙ্গিত করেন। সবাই বলছে ভারতের এবারের স্কোয়াড সবদিক দিয়েই ভারসাম্যপূর্ণ, মানছেন কোহলিও, আমাদের দলটা খুবই ভারসাম্যপূর্ণ ও শক্তিশালী। আইপিএলেও সেটার প্রমাণ পেয়েছে সবাই। স্কোয়াডের সবাই দারুণ ফর্মে আছে, এটাকে বিশ্বকাপেও ধরে রাখতে হবে। সদ্য সমাপ্ত ইংল্যান্ড-পাকিস্তান ওয়ানডে সিরিজে রানবন্যা দেখেছে ক্রিকেটবিশ্ব। বিশ্বকাপেও যে ব্যাটসম্যানরা অনেক বেশি রান তুলবেন সে বিষয়ে খুব একটা সন্দেহ নেই বিশ্লেষকদের। কোহলি অবশ্য বলছেন, দ্বিপক্ষীয় সিরিজে বড় স্কোর হলেও বিশ্বকাপে তেমন কিছু হবে না, বিশ্বকাপে দলগুলো রান করবে কিন্তু দ্বিপাক্ষিক সিরিজে যেমনটা হয়েছে ওরকম বড় স্কোর হওয়ার সম্ভাবনা কম। খুব কম রান হবে সেটাও নয়, ২৬০-২৭০ এর আশেপাশে হবে গড় রান। এ রকম রান স্কোরবোর্ডে দাঁড় করিয়েও জেতা যাবে, কারণ তাড়া করতে নামা দল চাপে থাকবে। বিশ্বকাপজুড়েই এমনটা দেখা যাবে, মাঝে মধ্যে কিছু ম্যাচে হয়তো অনেক বেশি রান উঠবে। ১৯৮৩ সালে এই ইংল্যান্ডেই কপিল দেবের নেতৃত্বে প্রথম বিশ্বকাপ ট্রফির স্বাদ পেয়েছিল ভারত। এখানেই ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠেও শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের কাছে হারতে হয়েছিল তাদের। বিশ্বজুড়ে দাপট দেখানো সত্ত্বেও গত বছর ইংল্যান্ড সফরে এসে ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজ দুটিতেই হারতে হয়েছিল। তবে ব্যাট হাতে কোহলি ছিলেন দুর্দান্ত, বোলারও ভাল বোলিং করেছিলেন। রঙিন পোশাকে ক্রিকেটে এই মুহূর্তে ধোনির চেয়ে ভাল উইকেটকিপার নেই স্মরণ করিয়ে দিয়ে কোচ রবি শাস্ত্রী বলেন, ধোনি মাঠে থাকলে অনেক কাজ সহজ হয়ে যায়। ছেলেদের সঙ্গে দারুণভাবে মিশতে পারে। আর কিপার হিসেবে তো প্রশ্নই নেই। গত কয়েক বছর ধরেই ধোনি প্রমাণ করেছে, এই ফরমেটে ওরচেয়ে ভাল কিপার আর কেউ নেই। ধোনি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকাপে ওর বড় ভূমিকা থাকবে। সবসময়ের মতোই। অধিনায়ক কোহলির মতো তিনিও মনে করেন এবারের বিশ্বকাপটা অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে, এবারের বিশ্বকাপ সত্যিই অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। শুধু ফরমেটের জন্য নয়। টিমগুলোও এখন অনেক বেশি শক্তিশালী। যেমন ২০১৪ সালের আফগানিস্তানের সঙ্গে আপনি যদি ২০১৯-এর আফগানিস্তন টিমের তুলনা করেন, তাহলে পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তাই। প্রতিপক্ষ হিসেবে ওরা এখন অনেক ভয়ঙ্কর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কথাই বা বাদ দেই কিভাবে। কাগজে-কলমে ওরাও যে কোন দলের চেয়ে শক্তিশালী।’ তবে শাস্ত্রী আত্মবিশ্বাসী, আমরা গত পাঁচ বছর ধরেই ধারাবাহিক ভাল ক্রিকেট খেলছি। বিশ্বকাপেও এর ব্যতিক্রম হবে না। ছেলেদের বলেছি, বিশ্বকাপটাকে উপভোগ কর। নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী আমরা যদি খেলতে পারি তাহলে ট্রফি আমাদের-ই হবে।
×