ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে ভিড় বাড়ছে শপিং মলে

প্রকাশিত: ১২:৪৩, ২২ মে ২০১৯

রাজশাহীতে ভিড় বাড়ছে শপিং মলে

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ মধ্য রমজান পেরিয়ে অবশেষে জমে উঠেছে রাজশাহীর ঈদের বাজার। নগরীর আরডিএ মার্কেট থেকে শুরু করে সবকটি মার্কেট ও বিপণি বিতানে এখন মানুষের স্রোত। রোজার মাঝামাঝিতে এসে অনেকেই সেরে ফেলতে চাইছেন ঈদের কেনাকাটা। তবে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, মানুষের ভিড় বেশি হলেও বেচাবিক্রি তুলনামূলক কম। মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন মার্কেটে ভিড় দেখা গেছে ক্রেতাদের। নগরীর নিউমার্কেট ছাড়াও বিভিন্ন পোশাকের শোরুম ও নগরীর সপুরা এলাকায় সিল্ক ফ্যাশন হাউসগুলোয় বাড়তে শুরু করেছে ক্রেতাদের ভিড়। রাজশাহীতে এবার সবচেয়ে ভিড় বাড়ছে একমাত্র আধুনিক শপিংমল থিম ওমর প্লাজায়। সকাল থেকেই সেখানে ভিড় লেগে থাকছে মানুষের। মঙ্গলবার নগরীর আরডিএ মার্কেটে ক্রেতাদের বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া রাজশাহীর নিউমার্কেটসহ অন্য বিপনীবিতানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি দেখা গেছে দোকানে দোকানে। আধুনিক থিম ওমর প্লাজায় অনেকেই এসেছেন পরিবার নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে। অনেকে বন্ধুদের সঙ্গে ঈদের কেনাকাটা সারছেন। পছন্দের পোশাকটি খুঁজে পেতে তারা এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ছুটছেন। পছন্দের পোশাক কিনতে নগরীর উপশহর থেকে আশা গৃহবধূ রমকি বললেন, এখনও ঘুরে ঘুরে দেখছি। পছন্দ করে উঠতে পারছি না। গরমে সুতি কাপড়ের জামা খুঁজছি, কিন্তু যেগুলো পাওয়া যাচ্ছে তা সিল্ক নয়ত জর্জেট। নগরীর আরডিএ মার্কেটের আবিদ ক্লথ হাউসের স্বত্বাধিকারী আবিদ হাসান বলেন, ঈদের বোনাস ক্রেতাদের পকেটে ঢুকতে শুরু করেছে। তাই তারা বাজারে আসছেন। কিন্তু ঈদের কিছুটা দেরি থাকায় তারা কিনছেন কম। বেশিরভাগ ক্রেতা এখন পছন্দ করতে সময় নিচ্ছেন। তবে অনেকেই বাচ্চাদের পোশাক কিনে ফেলছেন। কয়েকদিন পর নিজেদের কাপড় কিনবেন। নারী-শিশুদের কাপড়ের ভিড়ের কয়েকদিন পর ছেলেদের কেনাকাটা বাড়ে। নগরীর উপশহরের বাসিন্দা তানিশা আলম বলেন, সন্তানদের জন্য কেনা শেষ, এবার নিজের জন্য একটা থ্রিপিস কিনবেন তিনি তবে পছন্দ হচ্ছে না। তাই এখনও কেনা হয়নি। শাড়ির দোকানে গিয়ে দেখা গেল, বেশিরভাগ বয়স্ক নারী শাড়ি কিনছেন। তাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে সুতি ও সিল্ক শাড়ি। একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জান্নাতুল ইসলাম বলেন, আমি সবসময় সুতি শাড়ি পরি। তবে ঈদের দিন মেয়েরা চায় মা একটু গর্জিয়াস শাড়ি পরুক। মেয়েদের ইচ্ছা মাথায় রেখে একটা করে সুতি ও সিল্কের শাড়ি কিনলাম। ছেলেদের প্যান্ট, শার্ট, টি-শার্ট সস্তায় পাওয়া যায় নগরীর গণকপাড়া মার্কেটে। তাই ছেলেরা বন্ধুদের সঙ্গে এসে এগুলো কিনছে। ৫০০ থেকে দেড় হাজার টাকায় জিন্স ও পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে। টি-শার্ট পাওয়া যাচ্ছে ২০০ থেকে ৬০০ টাকায়। প্যান্ট ও শার্টের দোকানে ভিড়টা একটু বেশিই লক্ষ্য করা গেছে। রাজশাহী নিউমার্কেটের ভেতরে ক্রেতাদের তেমন ভিড় নেই। তাই দোকানিদের মন ভাল নেই। বেশিরভাগ দোকানিই জানালেন, ঈদের মার্কেট এখনও জমে ওঠেনি। তবে গতবারের চেয়ে এবার বেশি বিক্রি হবে। এখন পর্যন্ত যা বিক্রি হচ্ছে তার অধিকাংশ শিশু আইটেম। মেয়েদের শাড়ি, থ্রি পিসসহ অন্যান্য জামাগুলো বিক্রি হলেও তার হার খুবই কম। আর ছেলেদের আইটেমগুলো পুরোপুরি প্রদর্শনীতেই শোভা পাচ্ছে। বিক্রেতারা জানান, তরুণীদের চাহিদার প্রথম সারিতে আছে ভারতীয় পোশাক। এসব পোশাকের দাম দেড় হাজার থেকে পাঁচহাজার টাকার মধ্যে। তবে বেচাবিক্রি গেল বছরের চেয়ে কম। অনলাইনে বেচাকেনা বৃদ্ধি পাওয়ায় এর প্রভাব পড়তে পারে। তবে যারা খুব রুচিশীল ও খুঁতখুঁতে স্বভাবের তারা সবসময় বাজারমুখী এবং তারা বাজারে আসছেন। নগরীর নিউমার্কেট গেঘে গড়ে উঠা শপিং মল থিম ওমর প্লাজায় ব্রান্ডের দোকানগুলোতেও আসতে শুরু করেছেন ক্রেতারা। এছাড়া নগরীর সপুরা এলাকায় সিল্ক হাউসগুলোয় ঈদের কেনাকাটা জমে উঠতে শুরু করেছে। সকাল থেকে কেনাবেচা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তবে তারা বলছেন, এখনও ঠিক সে রকম কেনাকাটা শুরু হয়নি। ২০ রোজার পর থেকে জমে উঠতে শুরু করবে রাজশাহীর ঈদ বাজার বলে জানান তারা। যশোরে কেনাকাটায় শিশুরাও স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস থেকে জানান, ঈদ এক মহোৎসব। আর ঈদকে ঘিরেই সকল আনন্দ যেন শিশুদের মাঝেই লুকিয়ে আছে। এ জন্য অভিভাবকরা আগে ভাগেই ছুটছেন পোশাকের দোকানে। শিশু হাবিবা ও হাফসা দুই বোন এসেছে তাদের মায়ের সঙ্গে ঈদের কেনাকাটা করতে। অনেক খুশি মনে একজন বলে উঠল আমি সবার আগে কিনেছি। এই নিয়ে শুরু হলো তাদের তর্ক। হাফসা-হাবিবা ছাড়াও আরও অনেক শিশুই এভাবে আনন্দ করছে দিনভর। যশোর শহরের বিভিন্ন দোকানে তেমনি খুশি ছড়িয়ে রেখেছেন দোকানিরা। জিরো থেকে শুরু করে সব বয়সের শিশুদের পোশাক রয়েছে শহরের বিভিন্ন দোকান ও অভিজাত শো-রুমগুলোতে। যার মধ্যে ছোট শিশুদের জন্য দোকানে তোলা হয়েছে গেঞ্জি সেট, হাফপ্যান্ট, ফতুয়াসহ আরও অনেক পোশাক। ৭ থেকে ১৬ বছরের শিশুদের জন্য রয়েছে শার্ট, গেঞ্জি, হাফ প্যান্ট, থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট, ফুলপ্যান্ট, পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন কোয়ালিটির পোশাক। সরেজমিনে যশোরের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায় এমন দৃশ্য। শহরের কালেক্টরেট মার্কেটের মনির গার্মেন্টস’র বিক্রয়কর্মী মামুন হোসেন বলেন, শিশুদের জন্য এবার তেমন কোন নতুন পোশাক না থাকলেও গরমের কারণে হাফহাতা গেঞ্জি ও ম্যাগিহাতা গেঞ্জির দিকে অভিভাবকদের নজর বেশি। একই দোকানের বিক্রয়কর্মী পারভেজ জানান, মেয়ে শিশুদের পোশাকের কথা। তিনি বলেন, মেয়ে শিশুদের জন্য প্রতিবারের ন্যায় এবারো তাদের নজর কাড়ছে পাতলা কাপড়ের ফ্রক, স্কার্ট, গাউন, টপস, টাইস, থ্রি পিস, টু পিস ও ওয়ান পিসের মতো পোশাক। যশোরের রূপকথা, কাঁশবন, টম জেরি, ডরেমনের মতো এই মার্কেটে ৩-১৪ বছরের শিশুদের ফ্রক সাড়ে ৪ থেকে ৮শ’ টাকা, গাউন ৮শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা, লেহেঙ্গা ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা, স্কার্ট ১ হাজার থেকে ২ হাজার ২শ’ টাকা, লং ফ্রক ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কাপড়ের কোয়ালিটি অনুযায়ী ক্রেতারা ছেলে শিশুর জন্য জিন্স প্যান্ট ৭শ’, শার্ট ৬শ’ এবং টি-শার্ট ৫শ’ টাকায় কিনতে পারবেন। মুজিব সড়কের কাঁশবন শো’রুমের ব্যবস্থাপক ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ছেলে কিংবা মেয়ে শিশুদের জন্য এ মার্কেটে কমপক্ষে এক থেকে দেড় হাজার টাকার বাজেট থাকলেই পছন্দমতো কেনাকাটা করা সম্ভব। তবে ভাল পোশাক নিতে খরচ করতে হবে।
×