স্টাফ রিপোর্টার ॥ রস রাজধানীর অন্যতম সেরা মিষ্টির দাবিদার। রসের এক কেজি মিষ্টির দাম ৬ শ’ টাকা। আবার হাজার টাকা দামের মিষ্টিও আছে। এত নামী-দামী মিষ্টির দোকানের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কেমন তা দেখার জন্য কৌতূহলবশত অভিযানে নামে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
তারপর যা দেখলেন তাতে তারা শুধু হতবাকই হননি বিস্মিত হয়েছেন এমন নোংরা পরিবেশে তৈরি মিষ্টি কি করে রাতারাতি ব্র্যান্ড ইমেজ পেল। মঙ্গলবার তারা যখন রসের একটি কারখানায় যান তখন দেখতে পান-মিষ্টিতে ভনভন করছে মাছি। পাশেই রাখা ঘি তৈরির ক্রিম। সেই ক্রিমে ফড়িং। একদিন পরের তারিখে তৈরি হচ্ছে দই। আছে তেলাপোকার দৌড়ঝাঁপ। পোকামাকড়ের উড়াউড়িও কম ছিল না। এমন নোংরা চিত্রই চোখে পড়ে তাদের। যাত্রাবাড়ীর রস মিষ্টির কারখানায় এ অবস্থা স্বচক্ষে দেখেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। এ অপরাধে ‘রস’ মিষ্টির কারখানাকে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অভিযান পরিচালনা করেন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুল জব্বার ম-ল। বাজার অভিযানের সার্বিক সহযোগিতা করে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-১১ (এপিবিএন)-এর সদস্যরা।
মজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ‘রস’ নামী-দামী একটি ব্র্যান্ড। কিন্তু তাদের কারখানার অবস্থা স্বচক্ষে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না। তারা যে প্রক্রিয়ায় মিষ্টি তৈরি করছেন তা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। মিষ্টি মেঝেতে খালি অবস্থায় রেখে দেয়া হয়েছে। ঘি তৈরির ক্রিমে ঘাস ফড়িং। নামী এই প্রতিষ্ঠানের কারখানা মাছিতে ভরা। মিষ্টিতে মাছি। এখানেই শেষ নয়, এক মাস আগের মিষ্টি সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে ফ্রিজে। অবাক করার বিষয় হলো আজ ২১ মে। কিন্তু তারা উৎপাদনের তারিখ দিয়েছে ২২ মে। এসব কাজ করে তারা ভোক্তা অধিকার ক্ষুণœ করেছে, যা আইন অনুযায়ী দ-নীয় এ অপরাধে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটিকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ভোক্তা অধিদফতরের এ কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু ‘রস’ একটি নামী-দামী প্রতিষ্ঠান তাই তাদের প্রতি ভোক্তার প্রত্যাশা অনেক। তবে তারা যে পরিবেশে মিষ্টান্ন তৈরি করছে তা তাদের ব্র্যান্ডের সঙ্গে মানায় না। এজন্য কারখানার মান যথাযথ করার জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে সতর্ক করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ ধরনের অপরাধ করলে আইন অনুযায়ী বড় অংকের জরিমানাসহ কারখানা সিলগালা করে দেয়া হবে। এ বিষয়ে কারখানাটির দায়িত্বরত ম্যানেজার বলেন, আমরা নিজে মিষ্টি রাখি না।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: