ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিসিটিভি ফুটেজের ‘ছবি স্পষ্ট নয়’ বলে পুলিশ ৬ দিনেও তাদের শনাক্ত করতে পারেনি

গহীনকে বাথরুমে রেখে যাওয়া দুই নারী এখনও শনাক্ত হয়নি

প্রকাশিত: ০৯:৪৮, ২১ মে ২০১৯

 গহীনকে বাথরুমে রেখে যাওয়া দুই নারী এখনও শনাক্ত হয়নি

নিয়াজ আহমেদ লাবু ॥ ঢাকা শিশু হাসপাতালের বাথরুমে নবজাতক ‘গহীন’কে ফেলে রেখে যাওয়া দুই নারীকে ৬ দিনেও শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। আজিমপুরে সমাজসেবা অধিদফতরের ছোটমণি নিবাসে ভালই আছে গহীন। পুলিশ জানায়, ভিডিও ফুটেজে পাওয়া ছবি স্পষ্ট না হওয়ায় ওই দুই নারীকে শনাক্ত করতে বেগ পেতে হচ্ছে। শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুন্সী জনকণ্ঠকে জানান, গহীনকে রেখে যাওয়া দুই নারীকে খোঁজা হচ্ছে। ভিডিও ফুটেজ অনুযায়ী ওই দুই নারী হাসপাতালের টয়লেটে নবজাতকটিকে রেখে গেছেন। ‘ছবি স্পষ্ট নয়’ বলে আমরা তাদের শনাক্ত করতে বেগ পাচ্ছি। তাদের আটকের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পুলিশ জানায়, উদ্ধারের সময় গহীনের শরীরে তুলার কাপড় দিয়ে মোড়ানো ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, নবজাতকটি রাজধানীর কোন অভিজাত হাসপাতালে ভূমিষ্ঠ হয়েছে। কারণ সাধারণত হাসপাতালে শিশু ভূমিষ্ঠের পর তার শরীর তোয়ালে বা কাঁথা দিয়ে জড়িয়ে দেয়া হয়ে থাকে। আর সালোয়ার কামিজ পরা নারীর বেশভুশাও অভিজাত বলেই মনে হয়েছে। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব সরকার জানান, ভিডিও ফুটেজ অনুযায়ী দুই নারী হাসপাতালের টয়লেটে নবজাতকটিকে রেখে গেছেন। ‘ছবি স্পষ্ট নয়’ বলে আমরা তাদের শনাক্ত করতে পারিনি। তবে তদন্ত চলছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মঙ্গলবার ১৪ মে বেলা এগারোটা ৫৪ মিনিট। ঢাকা শিশু হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে একটি সিএনজি অটোরিক্সা থামে। একজন বোরকা ও অপরজন সালোয়ার-কামিজ পরা দুই নারী অটো থেকে নামেন। বোরকা পরা নারী দুই হাত দিয়ে একটি নবজাতকটিকে বুকে আগলে রেখেছেন। নবজাতকটিকে এমনভাবে ঢেকে রেখেছেন যেন বাইরে থেকে কারও নজরে না পড়ে। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে নবজাতকটিকে আনার এই দৃশ্য ধরা পড়েছে। সিসি ক্যামেরায় ধরাপড়া ওই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, নবজাতকটির শরীর তুলার চাদরে ঢাকা। দুই নারী সিএনজি অটোরিক্সা থেকে নেমে দ্রুত জরুরী বিভাগে ঢোকেন। পাশে ব্রেস্টফিডিং জোন, এরপরই টয়লেট। তারা টয়লেটে ঢুকে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে টয়লেট থেকে দ্রুত বের হয়ে আসেন। এ সময় বোরকা পরা মহিলার দুই হাত বাইরে দেখা যায়। কিন্তু নবজাতকটিকে তার কাছে আর দেখা যায়নি। তারা বের হয়ে একই অটোরিক্সায় চড়ে চলে যান। এর দুই বা তিন মিনিট পর এক নারী টয়লেটে গিয়ে দেখেন মেঝেতে ফুটফুটে একটি নবজাতক পড়ে আছে। তিনি বের হয়ে চিৎকার করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতকটিকে উদ্ধার করে। চিকিৎসার পর গত বৃহস্পতিবার তাকে আজিমপুরে ছোটমণি নিবাসে পাঠানো হয়। ঢাকা শিশু হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডাঃ ফরিদ আহমেদ জানান, এ ঘটনায় আমরা থানায় জিডি করেছি। ভিডিও ফুটেজটি আমরা পুলিশকে দিয়েছি।
×