ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের সেমিনারে আমু

শেখ হাসিনা বাংলার মানুষের মুক্তির দূত ও দিশারী

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ২০ মে ২০১৯

 শেখ হাসিনা বাংলার মানুষের মুক্তির দূত ও দিশারী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপিই দেশের গণতন্ত্র হত্যাকারী। দেশের রাজনীতিতে হত্যা, সন্ত্রাস এবং নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু। বিএনপিকে এসময় ‘মায়াকান্নাকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেন। রবিবার আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটি আয়োজিত জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আমির হোসেন আমু। আমির হোসেন আমু বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী দুর্যোগ-দুর্বিপাক এবং দুঃসময় রাজনীতির মোকাবেলা করে বাংলাদেশের সকল অর্জন শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশের এই অর্জন নস্যাত করার ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা। আমু বলেন, বাংলার মানুষের মুক্তির দূত ও মুক্তির দিশারী হচ্ছেন শেখ হাসিনা। আরামকে হারাম করে দেশের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার অর্জন গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। গণতান্ত্রিক শাসন-ব্যবস্থা ফিরিয়ে দেয়া। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছেন, দেশ দিয়েছেন, সেই দেশের কোন চৌহদ্দি ছিল না। সেই দেশের কোন সীমা নেই, না ছিল স্থলসীমানা, না ছিল জলসীমানা। এই দেশ যে কেউ নিয়ে যেতে পারত। সেই সীমানা নির্ধারণ করলেন শেখ হাসিনা। তিনি ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি বাস্তবায়ন করলেন। ছিটমহল সমস্যা সমাধান করলেন। আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে সমুদ্রসীমা ফিরিয়ে আনলেন। পার্বত্য শান্তি চুক্তি করার মাধ্যমে ৩৫ বছরের রণাঙ্গনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করলেন। মাতৃভাষা বাংলার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করলেন। আওয়ামী লীগের এই বর্ষীয়ান নেতা আরও বলেন, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দূরদর্শিতাই রক্তপাত ছাড়া দেশকে সামরিক শাসন মুক্ত করেছেন। গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। আমরা জানি কোন দেশে যদি সামরিক জান্তা ক্ষমতা দখল করে, সেই দেশে বিনা রক্তপাতে, বিনাযুদ্ধে ক্ষমতা নেয়া যায় না। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারণেই সামরিক জান্তা-স্বৈরশাসকদের হাত থেকে রাজনৈতিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই দেশে আজ বারবার নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন আসে। এই নির্বাচনকে কীভাবে কলুষিত করা হলো। আপনারা জানেন বাংলাদেশের সংবিধানে সামরিক আইন জারি করার কোন বিধান নেই। সুতরাং সামরিক সরকার গঠন করার পর জিয়াউর রহমান, তার সরকারকে বৈধতা দেয়ার জন্যই প্রয়োজন ছিল রেটিফিকেশনের। সেই রেটিফিকেশন করতে হলে দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি লাগে সংসদে। দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি নেয়ার জন্য প্রথমে জিয়াউর রহমান নির্বাচনী কারচুপি শুরু করেন। এরশাদের আমলে আরও রেটিফিকেশন করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করা হয়। আজ যারা বড় বড় কথা বলেন এ দেশে নির্বাচন প্রক্রিয়া হত্যা, গণতন্ত্র হত্যার মূলহোতাই তো তারা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশে গণতন্ত্র ফিরে এসেছে উল্লেখ করে সাবেক এই শিল্পমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাঙালী জাতি বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত হোক। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছেন, তিনি অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়ে যেতে পারেননি। অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে যখন তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচী ঘোষণা করেছেন ঠিক ওই মুহূর্তে তাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এই দেশের ইতিহাসকে পেছনে নেয়া হয়। গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল বাংলাদেশকে একটি অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী বাংলাদেশকে নব্য পাকিস্তানের সৃষ্টি পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবির্ভূত হয়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে আমির হোসেন আমু বলেন, জিয়াউর রহমান দল ভাঙ্গার রাজনীতি করতেন। রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি নয়, এটা তিনি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তিনি পরিষ্কার বলেছিলেন আমি রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে তুলব। তিনি রাজনীতিবিদদের চরিত্র হরণ করা থেকে শুরু করে সবধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। আওয়ামী লীগকে বারবার ভেঙ্গেছেন। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে ঘিরে আবার নতুন করে ভাঙ্গার সুর বাজছিল। সেই মুহূর্তে দলীয় ঐক্য বজায় রাখতে শেখ হাসিনাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছিল। তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটির সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ, মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক হারুন হাবীব, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি জামাল উদ্দিন জামাল প্রমুখ। সেমিনারের মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও লেখক হারুন হাবীব, সঞ্চালনায় ছিলেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি।
×