ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রীসেবায় ৫২ লঞ্চ, বিশেষ সার্ভিস ২ জুন থেকে

প্রকাশিত: ১০:২৪, ১৯ মে ২০১৯

 দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রীসেবায় ৫২ লঞ্চ, বিশেষ সার্ভিস ২ জুন থেকে

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ঈদ-উল-ফিতরের উৎসবে ঘরমুখো দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের জন্য নৌপথে বিশেষ সার্ভিস শুরু হবে আগামী ২ জুন থেকে। ৩০ মে সরকারী শেষ কর্মদিবসের পর টানা নয়দিনের ছুটি শুরু হবে ৩১ মে থেকে। তবে ১ জুন শব-ই-কদরের নামাজ শেষে পরের দিন ২ জুন থেকে বিশেষ সার্ভিস শুরুর পরিকল্পনা করছে নৌযান সংশ্লিষ্টরা। এজন্য ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নৌযান সংশ্লিষ্ট মালিক সংগঠনগুলো। এবার ঢাকা থেকে বরিশাল ও বিভাগের ছয়টি জেলা শহরে মোট ৫২টি নৌযান যাত্রী পরিবহন করবে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা। এরমধ্যে ঢাকা-বরিশাল রুটে সর্বাধিক ২৩টি লঞ্চ চলাচল করবে। বেসরকারী যাত্রীবাহী নৌযান মালিকদের সংগঠন জাপ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, এবার ঈদে যাত্রী সেবায় আমাদের কোন সমস্যা হবে না। কেননা এবার লঞ্চের সংখ্যা পূর্বের বছরগুলোর তুলনায় বেশি। তিনি আরও বলেন, সরকারী ছুটি ৩১মে থেকে শুরু হলেও নৌযানের বিশেষ সার্ভিস ২ জুন থেকে শুরু করা হবে। অপরদিকে রাষ্ট্রীয় নৌযান সংস্থা বিআইডব্লিউটিসি’র বরিশালে উপ-মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ জানান, তাদের সংস্থারও বিশেষ সার্ভিস শুরু হবে শব-ই-কদরের পর। সে হিসেবে ২ অথবা ৩ জুন থেকে বিআইডব্লিউটিসি’র বিশেষ সার্ভিস শুরু হবে। বিআইডব্লিউটিএর বরিশালের ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) কবির হোসেন জানান, বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে বর্তমানে দিবা সার্ভিসসহ মোট ২১টি বেসরকারী লঞ্চ চলাচল করছে। ঈদের আগে এ বহরে আরও দুটি নৌযান যুক্ত হবে। রোটেশন অনুযায়ী বর্তমানে প্রতিদিন ঢাকা ও বরিশাল থেকে আট থেকে ১০টি লঞ্চ বিপরীত গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রী পরিবহন করছে। ঈদের বিশেষ সার্ভিস চলাকালে এ লঞ্চগুলো ডাবল ট্রিপ দেবে। এছাড়া ঢাকা-ভোলা ও ঢাকা-পটুয়াখালী রুটে চলাচল করবে আটটি করে লঞ্চ। ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরগুনা রুটে মোট ১৩টি লঞ্চ ভায়া বরিশাল হয়ে ঢাকা রুটে যাতায়াত করবে। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ঈদ সার্ভিসে এমভি কীর্তনখোলা গ্রুপের দুটি, এ্যাডভেঞ্চার গ্রুপের তিনটি, এমভি সুন্দরবন গ্রুপের তিনটি, এমভি সুরভী গ্রুপের তিনটি, এমভি পারাবত গ্রুপের পাঁচটি, গ্রিন লাইন কোম্পানির দুইটি, এমভি কামাল কোম্পানির দুইটি, এমভি মানামী, এমভি টিপু-৭ ও এমভি ফারহান-৮ বরিশাল-ঢাকা রুটে সরাসরি যাত্রীসেবা দেবে। এরমধ্যে গ্রিন লাইন কোম্পানির দুটি ও এ্যাডভেঞ্চার কোম্পানির একটি ক্যাটারেমন দিবা সার্ভিসে থাকবে। বিআইডব্লিউটিসির উপ-মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ আবুল কালাম জানান, সংস্থাটির মোট পাঁচটি জাহাজের মধ্যে এমভি মাহসুদ বিকল হয়ে নারায়ণগঞ্জ ডর্কইয়ার্ডে রয়েছে। ঈদের আগে জাহাজটি সচল করে সার্ভিসে নামানোর সম্ভাবনা রয়েছে। মাহসুদ বহরে যুক্ত হলে বিআইডব্লিউটিসি পাঁচটি জাহাজ দিয়ে ঈদের বিশেষ সার্ভিস পরিচালনা করবে। অন্য জাহাজগুলো হলো পিএস টার্ন, লেপচা, এমভি বাঙালী ও এমভি মধুমতি। পটুয়াখালী নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা আলম চন্দ্র মিত্র জানান, পটুয়াখালী-ঢাকা রুটে সরাসরি আটটি লঞ্চ বিশেষ সার্ভিস দিবে। যার মধ্যে সুন্দরবন কোম্পানির দুটি, এমভি জামাল-৫, এমভি প্রিন্স অব রাসেল-৪ সহ আটটি লঞ্চ চলাচল করবে। ভোলা নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের টিআই নাসিম আহমেদ জানান, ভোলা-ঢাকা রুটে স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা ও ভোলা প্রান্ত থেকে দুইটি করে মোট চারটি লঞ্চ চলাচল করলেও ঈদের আগে ও পরে কমপক্ষে দশদিন আটটি লঞ্চ একসঙ্গে যাত্রীসেবা দিয়ে থাকে। এবারও ওই আটটি লঞ্চ ঈদ সার্ভিসে থাকবে। অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ॥ আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের লঞ্চগুলোতে বিশেষ সার্ভিসের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর অগ্রিম টিকেট বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গত ১২ মে থেকে ঈদের বিশেষ সার্ভিসের অগ্রিম টিকেটের জন্য যাত্রীদের কাছ থেকে চাহিদাপত্র বা আবেদন সংগ্রহ করছে সুরভী লঞ্চ কোম্পানি। এ আবেদন গ্রহণের কার্যক্রম চলে ১৬ মে পর্যন্ত। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে বিশেষ সার্ভিসের কেবিন ও সোফার টিকিট যাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। অপরদিকে গত ১১ মে থেকে সরাসরি যাত্রীদের কাছে স্পেশাল সার্ভিসের টিকেট বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে এ্যাডভেঞ্চার লঞ্চ কোম্পানি।
×