ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তায় বুদ্ধ পূর্ণিমা উদ্যাপিত

প্রকাশিত: ০৯:৫৫, ১৯ মে ২০১৯

 সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তায় বুদ্ধ পূর্ণিমা উদ্যাপিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শনিবার পালিত হয়েছে শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ঘিরে দিনভর বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে উদ্যাপিত হয়। এসব অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল বুদ্ধপূজা, মহাসংঘদান এবং আলোচনা সভা। বৌদ্ধ বিহারগুলোতে প্রদীপ প্রজ্বলন, শান্তি শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, প্রভাতফেরি, সমবেত প্রার্থনা ও বুদ্ধপূজা হয়েছে। এ উপলক্ষে মানব জাতির শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে শনিবার সকালে রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবোর ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে প্রভাতফেরি ও শান্তি শোভাযাত্রার আয়োজন করে বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ। এতে অংশ নেন বুদ্ধ ভক্তরা। বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশন রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে। সারাদেশের ন্যায় রাঙ্গামাটি, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেটেও নানা আয়োজনে দিনটি উদ্যাপন করেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। সকাল থেকেই রাজধানীর তিনটি প্রধান বৌদ্ধমন্দির মিরপুরের সাক্যমু-িত ভিড় করে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা। তিনটি বৌদ্ধ বিহারে মধ্যে রয়েছে কমলাপুর ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহার, বাড্ডা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার এবং মিরপুরের অবস্থিত সাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারে এ দিনব্যাপী কর্মসূচী পালন করা হয়। বিহারগুলোতে এদিন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা বৌদ্ধ মন্দিরে আসেন। বিভিন্ন পূজা অর্চনায় অংশ নেন। পুণ্যোতসবে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা শুচিবস্ত্র পরে মন্দিরে মন্দিরে বুদ্ধে বন্দনা করেন। পাশাপাশি তারা পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ, সমবেত প্রার্থনা করেন। এছাড়াও আয়োজন করা হয় নানা আলোচনা অনুষ্ঠানও। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মতে, গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম, বোধিজ্ঞান ও মহাপরিনির্বাণ লাভ একই দিন সম্পন্ন হয়। এই ত্রিস্মৃতিবিজড়িত বৌদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। শনিবার সকাল থেকে উৎসব পালনে যোড় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। বৌদ্ধ মতে এই পূর্ণিমা দিবসে মহামানব বুদ্ধের জীবনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে বলে দিনটি বুদ্ধ পূর্ণিমা নামে খ্যাত। খ্রীস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দের এই দিনে গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন। ৫৮৮ খ্রীস্টপূর্বাব্দের এই দিনে তিনি সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে জগতে বুদ্ধ নামে খ্যাত হন। ৫৪৩ খ্রীস্টপূর্বাব্দের এই দিনে তিনি মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। সিদ্ধার্থের বুদ্ধত্ব লাভের মধ্য দিয়ে জগতে বৌদ্ধধর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজধানীর পাশাপাাশি দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে চট্টগ্রাম কক্সবাজার খাগড়াছড়িতে উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে পালিত হয়েছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এই ধর্মীয় উৎসব। সকাল থেকেই চট্টগ্রাম নগরীর নন্দনকাননসহ সবকটি বিহারে ছিল পঞ্চশীল প্রদান, প্রদীপ প্রজ্বলনসহ ধর্মীয় নানা আনুষ্ঠানিকতা। এ সময় সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখার মাধ্যমে বিশ্বের প্রতিটি মানুষের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা ছিল সবার কণ্ঠে। উৎসব নির্বিঘ্ন করতে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা ছিল বিহারসহ নগর মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো। এসময় সম্প্রীতির বন্ধনকে উন্মুক্ত করে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার পাশাপাশি বিশ্বের প্রতিটি প্রাণীর মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা ছিল সবার কণ্ঠে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান এ উৎসব ঘিরে চট্টগ্রামের ১২৭ বিহারে পালন করা হয় ধর্মীয় নানা আচার।
×