ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

শেয়ারবাজারে লেনদেন কমেছে ৩২ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৮:৩৩, ১৯ মে ২০১৯

শেয়ারবাজারে লেনদেন কমেছে ৩২ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। সাথে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। আলোচ্য সময়ে ডিএসইতে লেনদেন প্রায় ৩২ শতাংশ কমেছে। সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত কিছুদিন ধরেই শেয়ারবাজারে অস্থিরতা চলছিল। নগদ টাকার অভাব ও বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট চলছিল। বাজার সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন পদক্ষেপেও বিনিয়োগকারীদের মাঝখানে আস্থার পরিবেশ ফিরে আসেনি। তবে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে শেয়ারবাজারে টাকার প্রবাহ বাড়াতে বিনিয়োগসীমা গণনার ক্ষেত্রে অতালিকাভুক্ত কোম্পানি, বন্ড ও ডিবেঞ্চারের বিনিয়োগকে বাইরে রাখা হয়েছে। এতে শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের ক্ষমতা বাড়বে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ডিএসইতে ৫ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৬১ কোটি ৫১ লাখ ৭৯ হাজার ৮৩৩ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৪৪ কোটি ৮১ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৬৮৩ কোটি ২৯ লাখ ৯০ হাজার ৪৭ টাকা । গত সপ্তাহে সব ক্যাটাগরির শেয়ারের লেনদেনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। আলোচ্য সময়ে ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ারের দখলে ছিল ৮৪ দশমিক ২৩ শতাংশ। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে শেয়ারের লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৩০ কোটি ৯৭ লাখ ৭৯ হাজার ৮৩৩ টাকার। আগের সপ্তাহে লেনদেনের পরিমান ছিল ১ হাজার ৭৩২ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ৮৮০ টাকা। লেনদেনে গেল সপ্তাহে ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ারের অংশগ্রহণ ছিল ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এসব শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪৫ কোটি ৭৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা, আগের সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৪১ কোটি ৪৮ লাখ ১ হাজার টাকা। সদ্য শুরু হওয়া নতুন কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন আগের সপ্তাহের চেয়ে কমেছে। ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘এন’ ক্যাটাগরির অংশগ্রহণ ছিল ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ। এসব শেয়ারের লেনদেন হয়েছে ৭১ কোটি ৭৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১৫৩ কোটি ২৮ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। ডিএসইর লেনদেনে গেল সপ্তাহে ‘জেড’ ক্যাটাগরির দখলে ছিল দশমিক ৮৯ শতাংশ। এসব শেয়ারের লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি ৪ লাখ ৩১ হাজার টাকা, আগের সপ্তাহে এসব শেয়ারের লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এদিকে, গত সপ্তাহে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। আলোচ্য সময়ে ৩৫৩ টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে বেড়েছে ১২২ টি, কমেছে ১৯৫ টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩ টি এবং লেনদেন হয়নি ৩ টি কোম্পানির শেয়ার দর। গত সপ্তাহে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কমেছে। আগের সপ্তাহের চেয়ে পিই রেশিও কমেছে দশমিক ৪২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৯২ শতাংশ। সূত্র মতে, আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৩ দশমিক ৯০ পয়েন্টে। এর আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১৪ দশমিক ৩২ পয়েন্ট। খাতভিত্তিক হিসেবে পিই রেশিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৮ দশমিক ৭০ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতে ২৮ দশমিক ২০ পয়েন্টে, সিরামিক খাতে ২১ দশমিক ৬০ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতে ১৪ দশমিক ১০ পয়েন্টে, খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতে ২১ দশমিক ৯০ পয়েন্টে, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ১১ দশমিক ৫০ পয়েন্টে, সাধারণ বিমা খাতে ১৪ দশমিক ২০ পয়েন্টে, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে ২৩ দশমিক ৫০ পয়েন্টে, জুট খাতে পিই রেশিও মাইনাস ৩০ দশমিক ৪০ পয়েন্টে, বিবিধ খাতে ১৮ দশমিক ৯০ পয়েন্টে, আর্থিক খাতে ২১ দশমিক ৩০ পয়েন্ট, পেপার ও প্রিন্টিং খাতে ২০ দশমিক ৫০ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১৬ দশমিক ৭০ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসন খাতে ১৯ দশমিক ১০ পয়েন্টে, ট্যানারী খাতে ১৮ পয়েন্টে, টেলিকমিনেকেশন খাতে ১২ দশমিক ৮০ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতের ১৫ দশমিক ১০ পয়েন্টে এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে মাইনাস ২০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে ফরচুন সুজ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ১ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ১৬০টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে । যার বাজার মূল্য ৭৩ কোটি ৩৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। কোম্পানিটির ১ কোটি ১৮ লাখ ১৯ হাজার ৫২৭ টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৬৭ কোটি ৩১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে । কোম্পানিটির ৭৭ লাখ ৯ হাজার ৯৭২ টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৩৯ কোটি ৪৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা। তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছে পাওয়ার গ্রীড। কোম্পানিটির ৬০ লাখ ৯৯ হাজার ৫৪০টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৩৯ কোটি ৩৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছে। কোম্পানিটির ৮৫ লাখ ২ হাজার ৬৪১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৩০ কোটি ৯৬ লাখ ২৮ হাজার টাকা। লেনদেনের তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে - মুন্নু সিরামিক, এস্কোয়ার নিট, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল, আইএফআইসি ব্যাংক ও ইন্দো-বাংলা ফার্মা।
×