ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কাতালান এ্যাওয়ার্ডে উচ্ছ্বসিত মেসি

প্রকাশিত: ১১:৪১, ১৮ মে ২০১৯

 কাতালান এ্যাওয়ার্ডে উচ্ছ্বসিত মেসি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আরও একটি গৌরবময় এ্যাওয়ার্ড জিতেছেন লিওনেল মেসি। বার্সিলোনার ইতিহাসে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে কাতালুনিয়ার সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। পাঁচবারের ফিফা সেরা জিতেছেন ২০১৯ ক্রিউ দে সেন্ট জর্ডি পুরস্কার বা কাতালান পুরস্কার। ইংরেজীতে পুরস্কারটির নাম সেন্ট জর্জ ক্রস এ্যাওয়ার্ড। সমাজে নানা অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ‘দ্য সেন্ট জর্জে’স ক্রস এ্যাওয়ার্ড’ দিয়ে থাকে কাতালান সরকার। মেসির হাতে এই পুরস্কার তুলে দিয়েছেন কাতালানের প্রেসিডেন্ট কুইম টোরা। বৃহস্পতিবার কাতালান সরকারের চলতি বছরের পুরস্কারটি দেয়া হয় ২৮ ব্যক্তি ও ১৫ প্রতিষ্ঠানকে। যার মধ্যে মেসিও একজন। বার্সার হয়ে এর আগে ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো পুরস্কারটি জেতেন ডাচ কিংবদন্তি ফুটবলার ইয়োহান ক্রুইফ। মূলত বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য পুরস্কারটি দিয়ে থাকেন কাতালান সরকার। কাতালান ক্লাব বার্সিলোনার হয়ে অসামান্য অবদান রাখার জন্য আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মেসিকে পুরস্কারটি দেয়া হয়েছে। ১৯৮১ সাল থেকে নিয়মিত পুরস্কারটি দিয়ে আসছে কাতালান সরকার। সিসিআইবি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন বার্সার প্রেসিডেন্ট জোসেফ মারিয়া বার্টোমেউ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট জর্ডি কার্ডোনার এবং জর্ডি মেস্ট্রে। এ্যাওয়ার্ডটি জিতে দারুণ খুশি মেসি। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, এই অর্জনে আমি খুশি। এটা পাওয়া অনেক গৌরবের। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। গোটা ক্যারিয়ারে প্রাপ্তির কমতি নেই মেসির। ক্লাব দল বার্সিলোনার হয়ে একের পর এক গৌরবময় অর্জনে সিক্ত হচ্ছেন। যদিও আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে তেমন কিছুই ভা-ারে নেই। চলতি মৌসুমেও ক্লাবের হয়ে দারুণ ছন্দে আছেন। নিশ্চিত করেই পুনরুদ্ধার করতে চলেছেন ব্যালন ডি’অর এ্যাওয়ার্ড। কিন্তু আপসোস, এবারও উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ব্যর্থ হয়েছেন। ছিটকে গেছেন সেমিফাইনাল থেকেই। এরপরও ব্যক্তিগত কীর্তিতে অনেক ওপরে গেছেন তিনি। চলতি মাসের শুরুতে যেমন প্রাণের ক্লাব বার্সিলোনার হয়ে আরও একটি গৌরবময় কীর্তি গড়েছেন মেসি। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে লিভারপুলের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে বার্সিলোনার হয়ে ‘৬০০’ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। এই গোল করার পথে মেসি হ্যাটট্রিক করেছেন ৪৫বার। এর কিছুদিন আগে মেসির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো ৬০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। বার্সা অধিনায়কের থেকে পর্তুগীজ সুপারস্টারের চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গোলসংখ্যাও বেশি। রোনাল্ডোর ১২৬ গোলের বিপরীতে মেসি করেছেন ১১২টি গোল। দারুণ এই পথচলায় মেসির প্রিয় প্রতিপক্ষ হলো লা লিগার দল সেভিয়া। এই দলটির বিপক্ষে মেসি করেছেন ৩৬টি গোল। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে এল ক্লাসিকোতে করেছেন ২৬ গোল। যদিও এবারের মৌসুমে তিনি কোন গোল করতে পারেননি। এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে করেছেন ২৯টি গোল। মেসির ৬০০ ক্লাব গোলের মধ্যে ৪৯১টি এসেছে বাঁ পা থেকে, আর ৮৫টি এসেছে ডান পা থেকে। ২০১২ সালে বার্সিলোনার হয়ে মেসি ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ৭৯ গোল করেছিলেন। তারপরও ওই বছর শুধু কোপা ডেল রে’ শিরোপা জিতেছিল বার্সা। ব্রাজিলিয়ান ফুলব্যাক দানি আলভেসই মেসির এই গোলের পেছনে সর্বাধিক ৪২টিতে সহযোগিতা করেছেন। তবে মাত্র এক গোল পিছিয়ে লুইস সুয়ারেজও এই তালিকায় ক্রমেই উঠে আসছেন। পেনাল্টি শট নিয়ে মেসি কখনই খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। কিন্তু এই পেনাল্টি থেকেও বার্সিলোনার হয়ে মেসি ৭০টি গোল করেছেন। তবে ফ্রিকিকে বিশেষজ্ঞ মেসি সেট পিস থেকে গোল করেছেন ৪২টি। ২০০১ সালে বার্সিলোরা যুব দলের হয়ে খেলার পর ২০০৪ সালে যোগ দেন মূল দলে। তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। পেশাদার ক্লাব ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় বার্সিলোনার হয়ে খেলে ক্লাবকে করেছেন সমৃদ্ধ, সঙ্গে নিজের ক্যারিয়ারকেও। মার্চে রিয়াল বেটিসের বিপক্ষে লা লিগায় ৩-২ গোলের জয়ের ম্যাচে করেছিলেন দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক। ওই ম্যাচের মাধ্যমে বার্সিলোনার হয়ে ইতোমধ্যেই সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েছেন। এরপর এস্পানিওলের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় দিয়ে ৩৩৫টি লীগ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েন। এর মাধ্যমে মেসি ইকার ক্যাসিয়ারের রেকর্ড ভাঙ্গেন।
×