ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি, দাম কমছে

প্রকাশিত: ১০:৩২, ১৮ মে ২০১৯

 নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি, দাম  কমছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দাম কমে আসায় নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি বিরাজ করছে। হ্রাস পেয়েছে ব্রয়লার মুরগি ও পেঁয়াজের দাম। ১০ টাকা কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জাত ও মানভেদে ২৬-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি পেঁয়াজ। এছাড়া চাল, ডাল, ছোলা, চিনি, ডিম, আটা ও শাক-সবজির বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। কিছুটা বাড়তির দিকে রয়েছে মাছের দাম। গ্রীষ্মকালীন ফলমূলে ভরে উঠছে বাজার। সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর সব কাঁচাবাজারে ছিল উপচেপড়া ভিড়। চাহিদা বেশি থাকলেও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকার কারণে নতুন করে আর কোন পণ্যের দাম বাড়েনি। এতে করে বাজারে এক ধরনের স্বস্তি বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আপাতত আর কোন পণ্যসামগ্রীর দাম বাড়বে না। কারণ বাজারে চাহিদার তুলনায় বেশি পরিমাণে পণ্য মজুদ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে কাওরানবাজারের ভোগ্যপণ্যের পাইকারি ব্যবসায়ী হায়দার হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, রমজানে ব্যবহার হয় এমন সব পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ ও সরবরাহ রয়েছে। ফলে বাজারে কোন সঙ্কট নেই। এ কারণে পণ্যমূল্য হ্রাস পাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশীয় উৎপাদন ও আমদানি পরিস্থিতি ভাল হওয়ার কারণে এবার রমজানে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রয়েছে। এদিকে, রাজধানীর বাজারগুলোতে নিয়মিতভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। সরকারী বিভিন্ন সংস্থা থেকে মনিটরিং হওয়ার কারণে কমে এসেছে গরুর মাংসের দাম। বেশিরভাগ দোকানে ৫২৫-৫৫০ টাকার মধ্যে মাংস বিক্রি হচ্ছে। তবে অনেক দোকানদার মনিটরিং টিম চলে যাওয়ার পর দাম বেশি নিচ্ছে বলেও বাজারে অভিযোগ রয়েছে। প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকায়। অন্য পণ্যসামগ্রীর দামও স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি কেজি চিনি ৫২-৫৬, জাত ও মান ভেদে প্রতি কেজি মসুর ডাল ৫৫-১২০, প্রতিলিটার সয়াবিন ৭৮-৮৪, প্রতি কেজি ছোলা ৭০-৮৫ ও প্রতি হালি মুরগির ডিম ৩০-৩২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এছাড়া দাম কমে প্রতি কেজি মোটা চাল ৩৬-৪০ এবং উন্নতমানের মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল ৫২-৬৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ধানের দাম যেভাবে কমছে সেভাবে চালের দাম হ্রাস পায়নি। এ নিয়ে ভোক্তারা কিছুটা ক্ষোভ ও অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে ফকিরাপুল বাজারের ক্রেতা নাজমুল হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, দেশের কোথাও কোথাও ধানের মণ সাড়ে ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ একমণ মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ১৪শ’ থেকে ১৬শ’ টাকা। তিনি বলেন, ধানের অনুপাতে চালের দাম কমছে না। মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে চালের দাম বেশি নেয়া হচ্ছে। চালের বাজারে সরকারী মনিটরিং বাড়ানো উচিত। রাজধানীর কাপ্তানবাজার, কাওরান বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট, নিউমার্কেট, ফকিরাপুল বাজার এবং মিরপুর সিটি কর্পোরেশন বাজারের তথ্যমতে, নতুন করে আর জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি। এছাড়া টিসিবির তথ্যও বলছে, রোজার শুরুতে পণ্যমূল্য বাড়ার যে প্রবণতা দেখা গেছে তা হ্রাস পেয়েছে। কাপ্তানবাজারের ব্যবসায়ীরা বলছে, রোজার শুরুতে হঠাৎ করে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দ্রব্যমূল্য বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন বেশির ভাগ পণ্যের দাম হ্রাস পেয়েছে। এদিকে, গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় বাজারে দামও কমেছে। এখন বাজারে বেশির ভাগ সবজির দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কয়েকদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। মান ও বাজার ভেদে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। যা একদিন আগে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া কচুরলতি ৪০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। প্রতি কেজি পেঁপে ৫০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, টমেটো ৪০-৫০ টাকা, লেবু হালি মান ভেদে ২০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।
×