ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনের পর সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ০৮:৩৭, ১৬ মে ২০১৯

 নির্বাচনের পর সিদ্ধান্ত

ইরানের কাছ থেকে তেল কেনার বিষয়ে নির্বাচনের পর সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। নয়াদিল্লীতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার এ কথা জানান সুষমা স্বরাজ। চীনের পর ভারত হচ্ছে ইরানের তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। ইরানের কাছ থেকে ভারতের তেল আমদানি বিষয়ে সয নির্দেশনা এ মাসের ২ তারিখে স্থগিত করেছে ওয়াশিংটন। এর ফলে ইরানের কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ রেখেছে ভারত। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইকোনমিক টাইমস ও টেলিগ্রাফের। মঙ্গলবার ভারত তেহরানকে জানিয়েছে যে, কেবলমাত্র নতুন সরকারই ইরানের কাছ থেকে তেল কেনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এ মাসের শেষের দিকেই নতুন সরকার গঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তেল কেনার বিষয়ে ওয়াশিংটনের সাময়িক নিষেধাজ্ঞা ছাড়ের সময়সীমা শেষ হয়েছে। নয়াদিল্লীতে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর ভারতের সিদ্ধান্ত ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফকে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে সূত্র জানিয়েছে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তেল কেনার বিষয়টি উত্থাপন করলে এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ তার অবস্থান ব্যক্ত করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বাণিজ্যিক বিষয়, জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনীতির স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই নির্বাচনের পর তেল কেনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। চীনের পর ইরানের তেল আমদানিকারক দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ ভারত এ মাস থেকে তেল আমদানি স্থগিত করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি। এপ্রিলে ওয়াশিংটন ঘোষণা করে যে, ভারতসহ সাত দেশের বিরুদ্ধে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা ছাড়ের বিষয়টি আর বৃদ্ধি করা হবে না। এই ছাড়ের আওতায় নবেম্বর থেকে ইরানের তেল আমদানি করে আসছিল ভারত। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচীর লাগাম টেনে ধরতে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব এ্যাকশন (জেসিপিওএ) থেকে ২০১৮ সালের মে মাসে বেরিয়ে যায়। এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলো হলো জাতিসংঘের স্থায়ী পাঁচ সদস্য রাষ্ট্র- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও চীন এবং জার্মানি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় পাকিস্তানের জঙ্গী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে জাতিসংঘের ১২৬৭ অবরোধ কমিটি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করে ভারত। এখন এ বিষয়ে সমঝোতার জন্য মোদি সরকারের সুযোগ খুবই সীমিত। সূত্র জানায়, দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা পর্যালোচনা এবং জেসিপিওএ চুক্তিসহ এ অঞ্চলের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ভারতকে অবহিত করতে জারিফের নিজস্ব প্রচেষ্টার অংশ হচ্ছে এই সফর। গত কয়েকদিন ধরে রাশিয়া, চীন, তুর্কমেনিস্তান ও ইরাকসহ এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সঙ্গে পরামর্শের অংশ হচ্ছে জারিফের ভারত সফর। মঙ্গলবারের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জেসিপিওএ চুক্তির বিষয়ে ভারত তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে। নয়াদিল্লী সব সময়ই বলে আসছে নতুন করে মার্কিন চাপ সত্ত্বেও চুক্তির সব পক্ষের উচিত এর প্রতি অবিচল থাকা। সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ও ভারি পানি রফতানি বিষয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির ঘোষিত পদক্ষেপ স্মরণ করিয়ে দেন জারিফ। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইইউয়ের তিন দেশ যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিসহ জেসিপিওএ চুক্তির পক্ষকে অন্যান্য ইরানের তেল ও ব্যাংকিং চ্যানেল সচল করার জন্য ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে। তেল আমদানি ছাড়াও দুপক্ষ চাবাহার বন্দর, রবিবার ওমান উপসাগরে সৌদি আরবের চারটি বাণিজ্যিক জাহাজে অন্তঃঘাতমূলক হামলা এবং আফগানিস্তানের পরিস্থিতির অগ্রগতি পর্যালোচনা করে। এর আগে অনির্ধারিত সফরে সোমবার রাতে নয়াদিল্লী পৌঁছান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। ইরান-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা বিষয়ে ভারতের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেন তিনি। এর আগে গত জানুয়ারিতে ভারত সফর করেন জারিফ।
×