ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শেয়ারবাজারে সাড়ে ১৩ মাসে সর্বনিম্ন লেনদেন

প্রকাশিত: ১২:১১, ১৫ মে ২০১৯

শেয়ারবাজারে সাড়ে ১৩ মাসে সর্বনিম্ন লেনদেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কোন পদক্ষেপেই ফেরানো যাচ্ছে না শেয়ারবাজারের পতন। আগের দিনের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবারও উভয় শেয়ারবাজারের সব সূচক কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে টাকার পরিমাণে লেনদেনও। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টাকার পরিমাণে লেনদেন সাড়ে ১৩ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম হয়েছে। শেয়ারবাজারে নগদ টাকার সঙ্কট এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্কতার কারণেই লেনদেনের পতন ঘটছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাজার পর্যালোচনায় জানা গেছে, মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৫১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। যা এক বছর ১ মাস ১৯ দিন বা ২৭৪ কার্য দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কম হয়েছিল। ওই দিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২২৪ কোটি টাকা। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২১৭ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরীয়াহ সূচক ৭ ও ডিএসই-৩০ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১২০৩ ও ১৮২৫ পয়েন্টে। বাজার সংশ্লিস্টদের মতে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড কমিশনের (বিএসইসি) নানামুখী পদক্ষেপের পরও বিনিয়োগকারীদের বাজারে সক্রিয় আচরণ করতে দেখা যাচ্ছে না। নগদ টাকা অভাবের সঙ্গে সঙ্গে আস্থার সঙ্কটই বর্তমান শেয়ারবাজারকে প্রাণহীন করে তুলেছে। প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারীরা কেউই বড় আকারে শেয়ার কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন না। সবাই নিজেকে নতুন শেয়ার কেনা থেকে বিরত রাখছেন, মূলত আরও কম দামে শেয়ার কিনতে চাওয়ার কারণে। তবে সূচক কমলেও লেনদেন কমে যাওয়াকে তারা ইতিবাচক ভাবছেন না। তাদের মতে, বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কে খুব বেশি শেয়ার বিক্রি করছেন না। কিন্তু বিক্রির আদেশের তুলনায় ক্রেতার পরিমাণ কম থাকায় ইতিবাচক প্রবণতা ফিরে আসছে না। এদিকে সোমবারে ঢাকা ক্লাবে ডিএসইর আয়োজনে আয়োজিত ইফতারে বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বলেছেন, কাউকে দোষী না করে সবাইকে শেয়ারবাজার উন্নয়নে এগিয়ে আসা উচিত। কারণ একক উদ্যোগে এখন শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ধরে রাখা কঠিন। বাজার সংশ্লিষ্ট সবাইকেই শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আনার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা উচিত। মঙ্গলবারে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪৭টি কোম্পানির মধ্যে ৭৬টির বা ২২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে দাম কমেছে ২১৯টি বা ৬৩ শতাংশ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫২টি বা ১৫ শতাংশ কোম্পানির। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ফরচুন সুজের। এদিন কোম্পানির ১৫ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা যমুনা ব্যাংকের ৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে এবং ৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে উঠে আসে ব্র্যাক ব্যাংক। সার্বিক লেনদেনের উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, মুন্নু সিরামিক, পাওয়ার গ্রীড, গ্রামীণফোন, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, স্কয়ার ফার্মা এবং এস্কয়্যার নিট কম্পোজিট। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ৯৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯৬২ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৫২টির, কমেছে ১৪২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির দর। ১৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
×