ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কোহিনুর আক্তার

আলোচনার বাইরে শারাপোভা

প্রকাশিত: ১২:০৬, ১৫ মে ২০১৯

আলোচনার বাইরে শারাপোভা

রাশিয়ান টেনিসের গ্ল্যামারগার্ল মারিয়া শারাপোভা। পারফর্মেন্স দিয়ে কোর্টে কিংবা রূপ-সৌন্দর্যে কোর্টের বাইরেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন এক সময়ে। তবে সেই শারাপোভাই যেন এখন হারাতে বসেছেন। সর্বশেষ সেন্ট পিটার্সবার্গে কোর্টে নেমেছিলেন তিনি। এরপর আর কোন টুর্নামেন্টেই অংশগ্রহণ করেননি বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান তারকা। টেনিসবোদ্ধাদের ধারণা ছিল রোম মাস্টার্সে হয়তো খেলবেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টেও অংশ নিচ্ছেন না মাশা। মূলত ডান কাঁধের চোট ভাল না হওয়ার কারণেই ইতালিয়ান ওপেন থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছেন মারিয়া শারাপোভা। তবে আগামী মৌসুমে রাশিয়ান তারকাকে পাওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদী ইতালিয়ান ওপেনের কর্তৃপক্ষ। মারিয়া শারাপোভার অনুপস্থিতি ভাগ্য খুলে দিয়েছে ভিক্টোরিয়া কুজমোভার। কেননা, শারাপোভায় জায়গায় এখন এই টুর্নামেন্টের ড্রয়ে থাকছেন বর্তমান বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের ৪৫ নম্বরে থাকা এই খেলোয়াড়। পাঁচবারের গ্র্যান্ডস্লামজয়ী মারিয়া শারাপোভা। একটা সময় তার দাপট দেখেছে টেনিস বিশ্ব। কিন্তু পারফর্মেন্সের সেই ধারাবাহিকতা আর ধরে রাখতে পারেননি তিনি। শুধু তাই নয়, ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হয়ে তার ক্যারিয়ারও হুমকির মুখে পড়েছিল। তবে নির্বাসন থেকে ফিরে আবারও টেনিস কোর্টে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ২০১৯ সালের শুরুটা করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেন দিয়ে। মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের প্রথম তিন ম্যাচেও জয়ের দেখা পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চতুর্থ রাউন্ডেই জয়রথ থেমে যায় তার। এরপর সেন্ট পিটার্সবার্গ টুর্নামেন্টেও জয় দিয়ে মিশন শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচেই নাম প্রত্যাহার করে নেন মারিয়া শারাপোভা। এরপর মাদ্রিদ মাস্টার্সে খেলার কথা ছিল তার। কিন্তু পারেননি। ইতালিয়ান ওপেনের তিনবারের চ্যাম্পিয়ন শারাপোভা। ২০১১ সালে এই টুর্নামেন্টের প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন তিনি। এর পরের বছর টানা দ্বিতীয়বারের মতো রোম মাস্টার্সের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন রাশান তারকা। এর মাঝের কয়েক বছর ব্যর্থ হওয়ার পর ২০১৫ সালে ইতালিয়ান ওপেনের তৃতীয় শিরোপা জিতেন তিনি। এবার না থাকাটা শারাপোভার ভক্ত-অনুরাগীদের জন্য যে বেশ হতাশাজনক তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। জানিয়ে রাখা ভাল যে, গত ১২ মাসে বিশ্ব টেনিসে সবচেয়ে চমকপ্রদ ঘটনার জন্ম দেয়া খেলোয়াড়দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন নাওমি ওসাকা। এই সময়ে দুটি গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিনি। শুরুটা করেছিলেন গত মৌসুমের শেষ মেজর টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনের শিরোপা জিতে। গত সেপ্টেম্বরে ইউএস ওপেনের ফাইনালে আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম মেজর শিরোপা জয়ের স্বাদ পান তিনি। সেখানেই থেমে থাকেননি ২১ বছরের এই তরুণী। এবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেও পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন তিনি। দুর্দান্ত খেলে নতুন বছরের প্রথম মেজর টুর্নামেন্টেও শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন জাপানের তরুণ প্রতিভাবান এই খেলোয়াড়। ফাইনালে এবার চেক প্রজাতন্ত্রের পেত্রা কেভিতোভাকে হারিয়ে টানা দুই গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। সেই সঙ্গে এশিয়ার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটাও দখল করে নেন নাওমি ওসাকা। তার পুরস্কারও পেয়েছেন জাপানী তারকা। ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ অর্থ-উপাজর্নকারীর তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছেন নাওমি ওসাকা। এ বছরে ৩,২৫৯,৩৩৪ ইউএস ডলার অর্থ উপার্জন করে প্রমীলা টেনিস খেলোয়াড়দের মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছেন জাপানের এই তারকা। এই তালিকার দুইয়ে রয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের পেত্রা কেভিতোভা। দুইবারের উইম্বলডনজয়ী এই তারকা খেলোয়াড়ের এ বছরে উপার্জিত অর্থ-মূল্য ২,১৭০,২৪৫ ইউএস ডলার। তবে বড় চমকটা উপহার দিয়েছেন এ্যাশলে বার্টি। অস্ট্রেলিয়ার এই প্রতিভাবান খেলোয়াড় যে অর্থ-উপার্জনের তালিকায় শীর্ষ তিনে জায়গা করে নিয়েছেন! মিয়ামি ওপেনের চ্যাম্পিয়ন এ্যাশলে বার্টির আয় ১,৯৩৪,৮১৮ ইউএস ডলার। এ বছরে শীর্ষ দশে নেই বেশিরভাগ অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। মারিয়া শারাপোভা, ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা কিংবা উইলিয়ামস পরিবারের দুই মেয়েও জায়গা পাননি শীর্ষ দশে। বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান তারকা সেরেনা উইলিয়ামস রয়েছেন একুশ নম্বরে। রোমানিয়ার সিমোনা হ্যালেপ রয়েছেন ১২ নম্বরে। অথচ, বর্তমান বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছেন রোমানিয়ার এই তারকা খেলোয়াড়। এ বছরে সর্বোচ্চ আয় করা প্রমীলা টেনিস খেলোয়াড়দের মধ্যে শীর্ষ পাঁচে রয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের ক্যারোলিনা পিসকোভা এবং কানাডার বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কু। পিসকোভার অবস্থান চার আর আন্দ্রেস্কু রয়েছেন পাঁচে। এরপর শীর্ষ দশে স্থান পাওয়া খেলোয়াড়রা হলেন যথাক্রমে সুইজারল্যান্ডের বেলিন্ডা বেনচিচ, জার্মানির এ্যাঞ্জেলিক কারবার, বেলারুশের এরিনা সাবালেঙ্কা, ইউক্রেনের এলিনা সিতলিনা এবং বেলজিয়ামের এলিস মার্টেন্স। জাপানের এই তারকা খেলোয়াড়ের সামনে এখন নতুন চ্যালেঞ্জ। ক্লে কোর্টের মিশন যে শুরু হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। জার্মানির স্টুটগার্ট ওপেনে অবশ্য নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। তবে মাদ্রিদ ওপেনে জয় দিয়েই মিশন শুরু করেছেন নাওমি ওসাকা। এই টুর্নামেন্টে ভাল করতে না পারলে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান হারানোর সুযোগ রয়েছে তার। তার জায়গায় এক নম্বর স্থানটা ফিরে পেতে পারেন রোমানিয়ার সিমোনা হ্যালেপ কিংবা জার্মানির এ্যাঞ্জেলিক কারবার। ইনজুরির কারণে এই টুর্নামেন্টেও খেলছেন না মারিয়া শারাপোভা। নেই সেরেনা উইলিয়ামসও। তবে আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি সেরেনা রোম ওপেনে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
×