ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যেভাবে রণতরী সাজাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ১১:৫০, ১৫ মে ২০১৯

যেভাবে রণতরী সাজাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

শাকিল আহমেদ মিরাহ ॥ বিশ্বকাপ ইতিহাসের সফল দল অস্ট্রেলিয়া। আগের এগারো আসরে পাঁচবারই চ্যাম্পিয়ন তারা। সর্বশেষ ২০১৫ বিশ্বকাপে প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপা জিতেছিল অসিরা। মাঝে বহুল আলোচিত বল টেম্পারিং ইস্যুতে স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারের নিষেধাজ্ঞায় অনেকটা ঝামেলায় পড়া দলটি ফের গুছিয়ে উঠেছে। ৩০ মে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট অস্ট্রেলিয়া এমন কিছু বিশেষ পরিকল্পনা আঁটছে যা দেখে প্রতিপক্ষ চমকে যাবে। একঝাঁক চৌকস আর গতিময় পেসারদের ঘিরেই শিরোপা ধরে রাখার মিশনে নামতে চায় তারা। এমনটা জানিয়েছেন অধিনায়ক এ্যারন ফিঞ্চ। তুখোড় স্মিথ-ওয়ার্নারের প্রত্যাবর্তন এবং গত বিশ্বকাপে খেলা পাঁচ-ছয়জন ক্রিকেটারের অভিজ্ঞতাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি। ভারত-পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পর সদ্য ঘরের মাটিতে কিউইদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের প্রস্তুতি সিরিজ জিতে বেশ আত্মবিশ্বাসী অস্ট্রেলিয়া। ক’দিন আগেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৭৩ রান করেও এক পর্যায়ে হারের শঙ্কায় পড়েছিল ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা তারা জেতে মাত্র ১২ রানে। বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষকে বড় লক্ষ্য দিলেই যে সহজ জয় আসবে না, সেটা বুঝতে পারছেন ফিঞ্চও, ‘ওয়ানডেতে গত কয়েক বছরের ধারা বলছে, মাঝের ওভারগুলোতে যারা বেশি উইকেট পেয়েছে তারাই সফল হয়েছে। এটা এমন একটি ব্যাপার যেটা আমরা লক্ষ্য বানিয়েছি এবং নিখুঁত করার চেষ্টা করছি। স্টার্ক ও কামিন্সকে ব্যবহার করা হবে কি না সেটা নির্দিষ্ট দিনেই বোঝা যাবে। কেউ যদি ভাল শুরু করে তখন তো নিজেদের সেরা অস্ত্র বের করতেই হবে। সে সঙ্গে পাওয়ার প্লেতে উইকেট পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘মিডল ওভারে যারা বেশি উইকেট নেয়, তারাই ম্যাচ জেতে। এই ব্যাপারটায় আমাদের মনোযোগী হতে হবে। বিশ্বকাপের যে পিচ থাকবে সেখানে অনেক বড় স্কোর করেও জেতা কষ্টকর হতে পারে।’ আর অভিজ্ঞ মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স মিডল ওভারে বড় ভূমিকা রাখবে, আশা ফিঞ্চের, ‘স্টার্ক-কামিন্সকে দিয়ে মিডল ওভারে বল করালে সেটা কার্যকরী হবে। যদি প্রতিপক্ষ উড়ন্ত সূচনা করে তাহলে তাদের মতো বোলারকে বারবার পরিবর্তন করে আক্রমণে আনতে হবে। পাওয়ার প্লে-তে যেন নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পাওয়া যায় সেটাই হবে আসল চেষ্টা।’ ফিঞ্চ একটি ব্যাপারে স্বস্তি পাচ্ছেন। মাঝের ওভারগুলোতে অন্তত স্পিন আক্রমণ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। উইকেট তুলে নেয়ার ক্ষমতার জন্য এবার প্রতিটি দলই লেগ স্পিনারে ভরসা রেখেছে। বাংলাদেশ দল ছাড়া প্রতিটি দলেই আছে অন্তত একজন প্রতিষ্ঠিত লেগ স্পিনার। অস্ট্রেলিয়ার এ্যাডাম জাম্পা তো গত কিছুদিন ধরে দুর্দান্ত ফর্মে, ‘ভারত ও আরব আমিরাতে জাম্পার পারফর্মেন্স অসাধারণ ছিল। সেখানে যে উইকেট ছিল, যেখানে বল খুব একটা স্পিন করছিল না। এমন ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে ভাল করছে যারা স্পিন খেলায় বিশ্বসেরা। ব্রিস্টলের (বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ম্যাচের ভেন্যু) ব্যাপারে বলা হয় সেখানে স্পিন বেশি হয়। কিন্তু ইংল্যান্ডের সর্বশেষ ম্যাচগুলোতে তেমনটা দেখা যায়নি। আমাদের তাই অপেক্ষায় থাকতে হবে এবং দেখতে হবে উইকেট কেমন আচরণ করছে’ বলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। ফিঞ্চসহ গত বিশ্বকাপে খেলা ছয় ক্রিকেটার আছেন এবারের দলে। বাকিরা হলেন- স্মিথ, ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স। অভিজ্ঞদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করেন অধিনায়ক। ফিঞ্চ বলেন, ‘আপনার জন্য এটা খুবই স্বস্তির ব্যাপার যে, তারা (বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড়রা) জানে, কিভাবে একটা বিশ্বকাপ জিততে হয় এবং কিভাবে এ যাত্রাটা সবাই মিলে অতিক্রম করতে হবে। আপনাকে সেরাটা দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে এবং পাশাপাশি ভুলের মাত্রাটাও কমাতে হবে। গত বিশ্বকাপ জয়ী দলের এ ছয়জনের অভিজ্ঞতা তাই দলকে অনেক এগিয়ে রাখবে’ বহুল আলোচিত স্মিথ-ওয়ার্নারকে নিয়েও উচ্ছ্বসিত অধিনায়ক, ‘শেষ পর্যন্ত তারা দলের সঙ্গে আছেন এটাই গুরুত্বপূর্ণ। তারা নিজেদের প্রস্তুতির সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছেন এবং এটা আমাদের জন্য দারুণ খবর।’ স্মিথ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে খেলেছেন অপরাজিত ৮৯ ও ৯১ রানের দারুণ দুটি ইনিংস, ‘সে তার আগের ছন্দ ফিরে পেয়েছে। যেন কখনও দলের বাইরে ছিল না। এ রকম একটি কঠিন উইকেটে ওর ড্রাইভগুলো, বিটুইন দ্য উইকেট রানিং, মিডল ওভারগুলোয় রান বাড়ানো এবং যেভাবে ইনিংস গড়ে দিয়েছে, সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। সে আসলেই একজন চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড় এবং তার ফর্মে ফেরাটা আমাদের জন্য দারুণ খবর।’ বলেন ফিঞ্চ।
×