ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুতে জয় ছাড়া কিছুই ভাবছে না আবাহনী

প্রকাশিত: ১১:৪৮, ১৫ মে ২০১৯

বঙ্গবন্ধুতে জয় ছাড়া কিছুই ভাবছে না আবাহনী

জাহিদুল আলম জয় ॥ এএফসি কাপে ফিরতি পর্বের ম্যাচে আবার মাঠে নামছে বাংলাদেশের ঘরোয়া লীগ চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী। আজ সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া ম্যাচে আবাহনীর প্রতিপক্ষ ভারতীয় ক্লাব চেন্নাইন এফসি। ‘ই’ গ্রুপে ৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে চেন্নাইন। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তার পরেই অবস্থান ঢাকা আবাহনীর। পরের পর্বে যেতে তাই এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের পেশাদার লীগ চ্যাম্পিয়নদের। এর আগে দু’দলের প্রথম লেগের লড়াইটা হয়েছিল ভারতের আহমেদাবাদে। তবে এবার লড়াইটা ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিকে ঢাকা আবাহনী নিয়েছে ‘ফাইনাল’ হিসেবে। অন্যদিকে ঘরের মাঠে আবাহনীর বিপক্ষে জয় পাওয়া আত্মবিশ্বাসী চেন্নাইন এফসিও জয় নিয়েই দেশে ফিরতে চায়। নেপালের চ্যাম্পিয়ন মানাং মার্সিয়াংদি ক্লাবকে হারিয়ে এএফসি কাপ শুরু করলেও সে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি আবাহনী। পরের ম্যাচেই ঘরের মাঠে ড্র করে ভারতের ক্লাব মিনারভা পাঞ্জাবের সঙ্গে। ভারতের আরেক ক্লাব চেন্নাইন এফসির সঙ্গে পরের ম্যাচ ড্র করলেও যুগ্মভাবে টেবিলের শীর্ষে থাকতে পারতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের ৬ বারের চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু আহমেদাবাদ থেকে আবাহনীকে ফিরে আসতে হয় শূন্য হাতে। আত্মঘাতী গোলে হেরে যায় বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা। এবার সেই হারের প্রতিশোধ নিয়ে টেবিলের শীর্ষে ওঠার মিশন আবাহনীর। টিকে থাকতে হলে আকাশী-হলুদ জার্সিধারীদের জন্য এ ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পূর্ণ পয়েন্ট না পেলে তাদের বিদায়ঘণ্টা বেজে যাবে অনেকটাই। ভারতের আই লীগ চ্যাম্পিয়ন দলটি আবাহনীর বিপক্ষে এ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে রবিবার ঢাকা এসেছে। এএফসি কাপের প্রথমপর্বে এবারই নয় এর আগেও বেশ ক’বার অংশ নিয়েছে ঘরোয়া ফুটবলের সব থেকে ঐতিহ্যবাহী দল ঢাকা আবাহনী। কিন্তু কোনবারই তারা গ্রুপপর্ব উৎরে দ্বিতীয়পর্বে খেলতে পারেনি। বলা যায় তেমন গুরুত্ব দিয়েই এএফসি কাপে কোনবার অংশ নেয়নি ক্লাবটি। তবে এবার তারা দ্বিতীয়পর্বে খেলার লক্ষ্য নিয়েই অংশ নিচ্ছে। ‘ই’ গ্রুপে এক জয় আর এক ড্র’ আর একটি হার নিয়ে আবাহনী আছে দ্বিতীয় অবস্থানে। এ কারণে লক্ষ্য পূরণ করতে আজকের ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই। ম্যাচের আগে মঙ্গলবার বাফুফে ভবনে অফিসিয়াল সংবাদ সম্মেলনে লক্ষ্যের কথা জানিয়েছে দু’দলই। আবাহনীর কোচ মারিও লেমোস আত্মবিশ্বাসী ঘরের মাঠে জয় তুলে নিতে। তিনি বলেন, ‘ভারতে আমরা ভাল খেলেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ম্যাচটা আমরা জিততে পারিনি। কিন্তু আমাদের ভাল করার আত্মবিশ্বাস আছে। ফাহাদ এবং তপু দু’জনই জাতীয় দলের ফুটবলার। কিন্তু এই ম্যাচে তাদের নামিয়ে কোন ঝুঁকি নিতে চাই না।’ এই ম্যাচে গোল হজম না করে বরং গোল আদায় করে নিতেই প্রতিটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে অনুশীলন করেছে আবাহনী। কোচ বলেন, ‘আমাদের জীবন এবং ওয়ালীর মতো কিছু ভাল ফুটবলার আছে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে গোল না হজম করা। সেট পিসও আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সে কারণে এই বিষয়েও আমরা আলাদা গুরুত্ব দিয়েছি।’ আবাহনীর কোচ আরও জানান, যে কোন মূল্যে ম্যাচটা নিজেদের করে নিতে চান তারা, ‘আমরা হেরে গেলে সমস্যায় পড়ে যাব। তাই যে কোন মূল্যে ম্যাচটা আমরা জিততে চাই। আমরা কোন প্রতিপক্ষের সামনেই আত্মসমর্পণ করতে চাই না।’ দলের অন্যতম সেরা তারকা নাবিব নেওয়াজ জীবন বলেন, ‘আমাদের দলে কিছু ইনজুরি সমস্যা আছে। আমরা কঠোর অনুশীলন করেছি এবং এএফসি কাপে ভাল করতে চাই। স্কোরিং নিয়ে কোচ কাজ করেছেন। গত ম্যাচে আমরা অসংখ্য সুযোগ সৃষ্টি করলেও সেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। আমরা এটি নিয়েও কাজ করেছি। আমার বিশ্বাস অনুশীলনে দলের সবাই যে পারফর্মেন্সটা করেছে। সেটি ম্যাচে করে দেখাতে পারলে আমরাই জিতব। ম্যাচটা জয়ের জন্য আমরা মুখিয়ে আছি।’ তবে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দিতে নারাজ চেন্নাইন এফসিও। দলটির কোচ জন গ্রেগরী বলেন, ‘ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা কোনমতেই হারতে চাই না। আবাহনী ব্যালেন্স টিম। তাদের কয়েকজন ফুটবলার খুবই বিপজ্জনক। আমরা গ্রুপে তাদের অবস্থান জানি। আমরা কোন প্রতিপক্ষকেই খাটো করে দেখতে চাই না। ব্যালফোর্ট এবং কয়েকজন ফুটবলার যারা কিছুদিন পূর্বে ভারতে খেলে এসেছে তাদের সম্পর্কে জানি। অন্যদের সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই।’ ঘরের মাঠে আবাহনীকে কিছুটা এগিয়েই রাখছেন প্রতিপক্ষ কোচ। তাই বলে নিজের দলকে পিছিয়ে রাখছেন না। বরং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচের আভাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতে তাদের এ্যাওয়ে ম্যাচ ছিল। সেখানে হোটেলে থেকে তাদের খেলতে হয়েছে। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। ঢাকায় থেকে তাদের জন্য ম্যাচ খেলাটা কঠিন কিছু নয়। আশাকরি একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হবে।’
×