ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নুসরাত হত্যা জব্দকৃত নমুনায় কেরোসিনের আলামত মিলেছে

প্রকাশিত: ১১:১২, ১৫ মে ২০১৯

নুসরাত হত্যা জব্দকৃত নমুনায় কেরোসিনের আলামত মিলেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফেনীর সোনাগাজী নুসরাত জাহান রাফিকে কেরোসিনের আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় জব্দকৃত চারটি নমুনা পরীক্ষায় দাহ্যপদার্থ (কেরোসিন) ব্যবহারের আলামত মিলেছে। সোমবার রাসায়নিক পরীক্ষার পর প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগারের প্রধান পরীক্ষক ড. দিলীপ কুমার সাহা বলেন, আমরা গতকাল (সোমবার) পরীক্ষা সম্পন্ন করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। হত্যা সংশ্লিষ্ট জব্দকৃত আলামতে দাহ্যপদার্থের নমুনা পাওয়া গেছে। অর্থাৎ নুসরাত হত্যাকাণ্ডে কেরোসিন ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে। সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগার সূত্রে জানা গেছে, নুসরাত হত্যার জব্দকৃত আলামত পরীক্ষার জন্য গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফি এবং ম্যাস স্পেক্ট্রোফটো মিটার ও অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে নমুনায় কেরোসিনের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগারের এক রাসায়নিক পরীক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জব্দকৃত নিহতের পরিহিত সালোয়ার ও বোরকার পোড়া অংশ বিশেষ এবং দুটি কালো রঙের পলিথিন আমরা রাসায়নিক পরীক্ষার মাধ্যমে কেরোসিনের উপস্থিতি পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, পিবিআই চলতি মাসেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা জানিয়েছে। সে অনুযায়ী নুসরাতের আলামতের রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট পিবিআইয়ে কাছে পাঠানো হয়েছে। সিআইডির রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে বলে সূত্রগুলো জানায়। উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাতকে যৌন নিপীড়নের দায়ে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান। ওই ঘটনায় নুসরাতে মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। দেশব্যাপী চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনায় আদালতের নির্দেশে থানা পুলিশের পরিবর্তে তদন্ত শুরু করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলার তদন্তের স্বার্থে ভিকটিমের পরিহিত সালোয়ার ও বোরকার পোড়া অংশ বিশেষ এবং দুটি কালো রঙের পলিথিন জব্দ করা হয়। আদালতের ক্ষমতাপত্র ও আদেশনামাসহ জব্দকৃত আলামতসমূহ পরীক্ষার জন্য গত ২ মে সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগার চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগারের প্রধান পরীক্ষক ড. দিলীপ কুমার সাহা রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। কমিটির সদস্যরা কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরি ও চট্টগ্রাম ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে আলামত সম্পর্কে মতামত দেন।
×