ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের নির্দেশ

সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন দ্রুত শেষ করুন

প্রকাশিত: ১১:০৭, ১৫ মে ২০১৯

সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন দ্রুত  শেষ করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় সম্মেলন দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তৃণমূল থেকে সংগঠনকে ঢেলে সাজারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দলের সম্পাদকম-লীর সঙ্গে সহযোগী সংগঠন ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক যৌথসভায় এ নির্দেশ দেয়া হয়। ধানম-ি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। এ সময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার রেশ ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সোমবার এক পক্ষের হামলার ঘটনাকে ‘সামান্য ঘটনা’ বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। এটা নিয়ে খুব বেশি উদ্বেগ প্রকাশ করার কিছু নেই বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। দলের যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, আমরা আশা করছি, আমরা আওয়ামী লীগকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত কাউন্সিলের মাধ্যমে ঢেলে সাজিয়ে জাতীয় কাউন্সিল করতে পারব। যথাসময়ে আগামী অক্টোবরেই আমাদের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি আমাদের যেসব সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন আছে তার মধ্যে যেসব সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে সেসব সংগঠনকেও কেন্দ্রীয় সম্মেলন করার জন্য আমাদের সভা থেকে নির্দেশনা দিয়েছি। হানিফ বলেন, বিএনপি বর্তমানে চরম বিশৃঙ্খল একটি রাজনৈতিক দল। এ দলটি কখনও এখান থেকে, কখনও লন্ডন থেকে, কখনও বা কারাগার থেকে পরিচালিত হয়। হানিফ বলেন, জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ও আন্দোলনের নামে মানুষ মারার জন্য বিএনপি দেউলিয়া হয়ে গেছে। এজন্য ক্ষণে ক্ষণে তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। গণমাধ্যমের ওপর ভর করে দলটি টিকে আছে। এ দলটিকে নিয়ে যত কম মন্তব্য করা যায় ততই ভাল। এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার রেশ ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে যা ঘটেছে, তা একটি ‘ছোট সাধারণ ঘটনা’। অত্যন্ত সামান্য এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের কোন কারণ নেই। আমরা আশা করি, সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, তারা এটা ঠিক করতে পারবেন এবং তারা সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের সংগঠনের কাজ করবেন। হানিফ আরও বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ সংগঠন। যে সংগঠনের লাখ লাখ নেতাকর্মী মুজিব আদর্শের সৈনিক হিসেবে আছেন। তাদের মধ্যে যোগ্য নেতারা সকলে পদ-পদবীর প্রত্যাশা করেন। কিন্তু সবাইকে তো আর পদ-পদবী দেয়া সম্ভব হয় না। সেই সুযোগও হয় না। কারণ পদের সংখ্যা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় থেমে যায়। স্বাভাবিকভাবেই কমিটি হওয়ার পরে সকলে যখন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয় না তখন কিছু ব্যক্তির মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। এটা হওয়াটাই স্বাভাবিক। তিনি আরও বলেন, এছাড়া প্রায় সব জায়গায় এমন একটা পরিস্থিতি দেখা যায়। আর যেহেতু ছাত্রসমাজ তরুণ। তাদের মধ্যে হয়ত ক্ষোভটা কোন কোন সময় একটু বেশি আকারে দেখা যায়। হানিফ বলেন, এছাড়া ছাত্রলীগের অনেকে ভেবেছিলেন বড় পদ পাবেন, সেটা হয়ত পাননি। তারা হয়ত অপেক্ষাকৃত ছোট পদ পেয়েছেন। এই ধরনের দুই একজনের ক্ষোভ থাকতে পারে। হানিফ জানান, আগামী ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সারাদেশের সকল জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগেও আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে। ১৭ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত দলের ভ্রাতৃপ্রতিম ও সহযোগী সংগঠন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন ও কর্মের ওপর ধারাবাহিকভাবে আলোচনা সভার আয়োজন করবে। এক প্রশ্নে দলের জাতীয় সম্মেলন প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, আগামী অক্টোবরে আওয়ামী লীগের বর্তমান কার্য নির্বাহী সংসদের মেয়াদ শেষ হবে। নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে দলের জাতীয় সম্মেলন সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তৃণমূল থেকে সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর জন্য জাতীয় সম্মেলনের আগে দেশের জেলা ও উপজেলা সম্মেলন সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ৮ সাংগঠনিক টিম গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সিলেট, চট্টগ্রম, খুলনা বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলায় বর্ধিতসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেশ কয়েকটি জেলার সম্মেলনের সময়ও নির্ধারণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের তথ্য নিয়ে তৈরি ডাটাবেজ তৈরির বিষয়ে হানিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে দলের ডাটাবেজ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ লক্ষ্যে আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের পর আওয়ামী লীগের সারাদেশের সংগঠনের দফতর সম্পাদকদের নিয়ে ঢাকায় একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় উপস্থিত থাকবেন। এ বৈঠকে প্রয়োজনীয় সকল নির্দেশনা দেয়া হবে। দলের ভ্রাতৃপ্রতিম ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদেরও অনুরূপ ডাটাবেজ তৈরি করার জন্য আহ্বান জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, কৃষি সম্পাদক ফরিদুরনাহার লাইলী, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য আখতারুজ্জামান, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুন, সাধাররণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আকতার, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল প্রমুখ।
×